• " />

     

    এবার ভুল 'নো' বলে 'নট-আউট'

    এবার ভুল 'নো' বলে 'নট-আউট'    

    আম্পায়ারিং বিতর্ক যেন পিছু ছাড়তেই চাইছে না অজি-কিউই দ্বৈরথে। গত নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার মাঠে নাথান লায়নের আউট নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্ক দিন চারেক আগে মিচেল মার্শের আউট-কান্ডে পেয়েছিল নতুন মাত্রা। সপ্তাহ না ঘুরতেই আবারও আলোচনায় অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম টেস্টের আম্পায়াররা। এ যাত্রায় অজি ব্যাটসম্যান অ্যাডাম ভোজেসের বোল্ড হয়ে যাওয়া বলটিকে ‘স্টেপ নো’ ডেকে তাঁকে জীবন দিয়েছেন আম্পায়ার, কিন্তু বলটির টিভি রিপ্লে বলছে ওই বলটিতে কিউই পেসার ডগ ব্রেসওয়েলের পা দাগের মধ্যেই ছিল, অর্থাৎ সেটি কোনভাবেই ‘নো বল’ নয়! অবশ্য এবার গ্যালারির বড় পর্দায় তড়িৎ সেটি না দেখানোয় মার্শ-কান্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটে নি!

     

     

    আজ থেকে শুরু হওয়া টেস্টে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে হ্যাজলউড-সিডল-লায়নদের বোলিং তোপের মুখে মাত্র ১৮৩ রানেই গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৩১ রানে ৩ উইকেট খুইয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়াও, দিন শেষে যেটি দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১৪৭-এ।

     

    তবে নিশ্চিতভাবেই পতন হওয়া উইকেটের সংখ্যা ৩-এর পরিবর্তে ৪ হওয়ার কথা। দিনের শেষ ওভারে ডগ ব্রেসওয়েলের চতুর্থ বলটা ছেড়ে দিয়েছিলেন ভোজেস, বাধা বিহীন পথ পেরিয়ে সেটি সরাসরি আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। উল্লাসে ফেটে পড়ে বেসিন রিজার্ভের গ্যালারি। কিন্তু পুরো মাঠে নিরবতা নামিয়ে সেটিকে ‘নো বল’ ডাকেন আম্পাউয়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ। শেষ তিনটি বল নিরাপদে খেলে দিন শেষে অপরাজিতই থেকে যান ভোজেস। অথচ বলটির টিভি রিপ্লেতে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল যে ব্রেসওয়েলের পা যথেষ্ট পরিমাণে দাগের ভিতরে ছিল এবং সেটিকে 'নো' বল ডাকার কোনো যৌক্তিকতাই নেই।

     

    অনেকসময়ই ব্যাটসম্যানরা আউট হবার পর বলটি ‘নো’ ছিল কিনা সেটি নিশ্চিত হতে মাঠের আম্পায়াররা টিভি আম্পায়ারের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আম্পায়ার কর্তৃক ডাকা ‘নো’ বলটি টিভি আম্পায়ার দ্বারা যাচাইয়েরও প্রয়োজন বোধ করা হয় নি।

     

     

    এমন প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহের মার্শের আউট ঘিরে শুরু হওয়া বিতর্কের পালা হাওয়া লেগেছে আরও জোরেশোরেই। সাবেক অজি ওপেনার এমন সিদ্ধান্তকে আখ্যা দিচ্ছেন ‘ভয়াবহ’ বলে, “এরচেয়ে ভালো কোনো বিশেষণ খুঁজে পাচ্ছি না। আমি বুঝতে পারি না কেন এ ধরনের সিদ্ধান্তগুলো সঠিকভাবে পাওয়া যাবে না? তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নেয়ার জন্য তো যথেষ্ট সময় থাকে হাতে। এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই আছে, কেন প্রযুক্তির ব্যবহারে এটা সমাধান করা যাচ্ছে না?”

     

    বেসিন রিজার্ভের আম্পায়াররা অবশ্য আজ দিনভরই ‘ব্যস্ত’ সময় কাটিয়েছেন। দু’ দলের প্রথম উইকেটটি পতন ঘটানো হয়েছে টিভি আম্পায়ারের সাহায্য নিয়ে।

     

    দিনশেষের প্রতিক্রিয়ায় অজি পেসার হ্যাজলউড মার্শের ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে রসিকতা করতে ছাড়েন নি। একইসাথে তিনি বলছেন আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্ত খেলারই অংশ, “ভাগ্যিস ওই বলটা সাথে সাথেই মাঠের বড় পর্দায় দেখানো হয় নি!...আম্পায়াররা একটা সিদ্ধান্ত দিয়ে ফেলার পর আমাদের সেটা মেনে নেয়াটাই কাম্য। মাঠের কঠিন সিদ্ধান্তগুলো নেয়ার জন্যই তাঁদের রাখা, এটিও তার ব্যতিক্রম ছিল না।”

     

    ব্যাপারটা নিয়ে কিউই শিবিরেও খুব একটা শোরগোল নেই বলেই জানাচ্ছেন স্পিনার মার্ক ক্রেগ, “আমরা আসলে মাঠ ছেড়ে ড্রেসিং রুমে আসার আগ পর্যন্ত ওটা দেখি নি। দেখার পর একটু তো খারাপ লেগেছেই। কিন্তু এটা ক্রিকেটেরই অংশ। আম্পায়ারের হাত একবার একটা নির্দেশনা দিয়ে দিলে সেটা নিয়ে আপনার আর খুব বেশী কিছু করার থাকে না। সুতরাং আক্ষেপ হলেও আমাদের যেহেতু বেশী কিছু করার নেই তাই আগামীকালের খেলার দিকেই মনোযোগ দিতে চাই।”