• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    অগ্নিপরিক্ষায় উৎরাতে পারবেন রজার্স ?

    অগ্নিপরিক্ষায় উৎরাতে পারবেন রজার্স ?    

    ৮ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুম। প্যাভিলিয়নে আজ থেকে শুরু হচ্ছে বড় দলগুলোর প্রাক মৌসুম বিশ্লেষণ। প্রথম পর্বে আজ থাকছে লিভারপুলের শক্তি ও সম্ভাবনার খতিয়ান। 

     

     

    এক নজরে লিভারপুল

     

    * প্রতিষ্ঠাকালঃ ৩ জুন ১৮৯২

    * সমর্থকরা ডাকেন অল রেডস।  

    * ম্যানেজার – ব্রেন্ডন রজার্স

    * ক্লাব অ্যানথেম – ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন

    * সাফল্য - ইংলিশ লীগ ১৮ বার (২য় সর্বোচ্চ)

    * স্টেডিয়াম – অ্যানফিল্ড

    * শেষবার লীগ চ্যাম্পিয়ন – ১৯৮৯-৯০ মৌসুম

    * শেষ শিরোপা – ২০১১-১২ লীগ কাপ

    * ২০১৪-১৫ মৌসুমে অবস্থান – ষষ্ঠ

     

    গত ২৫ বছর ধরে কোন লীগ শিরোপা পায়নি লিভারপুল। ১৩-১৪ মৌসুমে একদম তীরে এসে তরী ডুবিয়ে ফেলে শিরোপা হাতছাড়া করে দলটি। তবে ‘বিগ ফাইভ’ এর অন্যতম এই দল এবার বেশ গুছিয়ে দল বানিয়েছে। শিরোপা দৌড়ে এ দলটির সম্ভাবনা কম মনে হলেও সেরা ৪-এ থাকার সম্ভাবনা প্রবল। অর্থাৎ সামনের মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লীগের টিকেট পাওয়ার জন্য বেশ ভাল লড়াই করবে দলটি।

     

    দলের আইকন হিসেবে পরিচিত খেলোয়াড় স্টিভেন জেরার্ড ১৮ বছর পর ক্লাব ছেড়ে গেছেন। সাথে দল ছেড়েছেন রিকি ল্যাম্বার্ট, গ্লেন জনসন আর হালের ব্রিটিশ সেনসেশন রাহিম স্টার্লিং। তবে জেমস মিলনার, বেনটেকে, ফির্মিনো, ওরিগি আর গত মৌসুমের দলকে নিয়ে ব্রেন্ডন রজার্স আশা করতেই পারেন। তবে শেষ লীগ ম্যাচে ৬-১ গোলে পরাজয়, আর গত মৌসুমের বাজে পারফর্মেন্স এবারের প্রথম কিছু ম্যাচে ঘটলে রজার্সের চাকুরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে।

     

    দেখে আসা যাক, লিভারপুলের এবারের মৌসুমের দলের বিভিন্ন পজিশনের অবস্থা।

     

                            

    গোলকিপারঃ

     

    গত দুই সিজন ধরে বেশ ভাল নৈপুণ্য দেখানো বেলজিয়ান সিমন মিনোলে এবারো থাকবেন গোলপোস্টের নিচে। ফ্রি ট্রান্সফারে যোগ দিয়েছেন হাঙ্গেরিয়ান কিপার অ্যাডাম বোগদান। মিনোলে ২০১৩-১৪ মৌসুমে লিভারপুলের লীগ রানার আপ হওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। বেশ ভাল ফর্মে আছেন। বয়সে তরুণ, পাশাপাশি রিফ্লেক্স ক্ষমতা দারুণ। এই পজিশন নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই।

     

    রক্ষণভাগঃ

     

    সেন্টার ব্যাক পজিশনে আছেন লভরেন, কোলো ত্যুরে, মার্টিন স্কার্টেল, মামাদু সাখো।সম্ভবত পুরো মৌসুম জুড়েই একাদশে দেখা যাবে স্কার্টেল আর সাখোকে। স্কার্টেল গত কয়েক মৌসুমে ক্লাবের সবচেয়ে ধারাবাহিক পারফর্মারদের একজন। ফরাসী ডিফেন্ডার সাখোর স্ট্যামিনা, প্রত্যেকটি খেলায় পুরোটা সময় ধরে রক্ষণভাগ আগলে থাকা দলটাকে এগিয়ে নেবে।  

     

    লভরেনের প্রথম মৌসুম বলতে গেলে, বেশ বাজেই কেটেছে। নিজের সক্ষমতার ধারেকাছেও ছিলেন না। কোলো ত্যুরের সাথে নতুন করে চুক্তি করা হলেও অভিজ্ঞ এই সেন্টার ব্যাক পা দিয়েছেন ৩৫ বছরে। গত কয়েক মৌসুম গড়পড়তা খেলে যাচ্ছেন।নতুন চুক্তি ফলপ্রসূ হবে কিনা ধারণা করা মুশকিল।

     

    লেফট ব্যাক হিসেবে স্প্যানিশ আলবার্তো মোরেনো আর রাইট ব্যাক হিসেবে ফ্ল্যানেগানকে দেখা যাবে প্রথম একাদশে।

     

    গ্রীষ্মের ট্রান্সফারে যোগ দিয়েছেন জো গোমেজ। ২০১৪ সালে ইংল্যান্ডকে অনূর্ধ্ব-১৭ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জেতানো এই সেন্টার ব্যাক রাইট ব্যাক হিসেবেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ব্যাকআপ খেলোয়াড় হিসেবে দলকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবেন। তরুণ ইংলিশ তুর্কি নাথানিয়েল ক্লাইন যোগ দিয়েছেন। রাইট ব্যাক পজিশনে ক্লাইন আঘাত পেলে বা বিশ্রামের দরকার হলে ফ্ল্যানাগান বিকল্প হিসেবে থাকছেন।

     

    মধ্যভাগঃ

     

    লিভারপুলের মধ্যভাগ এবার বেশ শক্তিশালী।

     

    তবে রক্ষণভাগের সামণে ঢাল হিসেবে থাকা সেন্ট্রাল ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে লুকাসকে দেখা যাবে। আছেন দলের অধিনায়ক হেন্ডারসন। ফ্রি ট্রান্সফারে যোগ দেওয়া জেমস মিলনারকে দিয়ে জেরার্ডের ফাঁকা স্থান পূরণ করবেন নাকি উইং এ খেলাবেন বলা মুশকিল।

     

    অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে আছেন গত মৌসুম অসাধারণ খেলা কৌটিনহো, বেশ চড়া মূল্যে ব্রাজিলিয়ান সৃষ্টিশীল মিডফিল্ডার রবার্তো ফির্মিনোকে অ্যানফিল্ডে এনেছে লিভারপুল।এছাড়াও লালানা, এমরে কান, মার্কোভিচ, জো অ্যালেন আছেন মধ্যভাগে।

     

    ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে হেন্ডারসন এবং তাঁর বদলি হিসেবে লুকাস। মাঝে কৌটিনহো, রাইট উইং এ ফির্মিনো/জর্ডান ইবে/মার্কোভিচ, লেফট উইং এ লালানা/জো অ্যালেন/মিলনার। পুরো মৌসুমে রজার্স এই ভাবেই দলকে পরিচালনা করবেন মনে হচ্ছে।

     

    আক্রমণভাগঃ

     

    ড্যানিয়েল স্টারিজ, ক্রিস্টিয়ান বেনটেকে, ওরিগি, ফ্যাবিও বরিনি – মূলত এই ৪ জনকেই দেখা যাবে আক্রমণ শানাতে। তবে মূল একাদশে খেলবেন স্টারিজ আর বেনটেকে।

     

    বেনটেকে গত কয়েক মৌসুম অ্যাস্টন ভিলার হয়ে মাঠ কাঁপিয়ে যাচ্ছেন, তাছারা তাঁর ট্রান্সফার ফি লিভারপুলের ইতিহাসের অন্যতম দামী। তাই তাকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখার সম্ভাবনা খুব কম।

     

    ওরিগি এবং বরিনি বদলি হিসেবে মাঠে নামবেন। বালোতেল্লির লিভারপুল ছাড়ার কথা শোনা যাচ্ছে, তবে দল না ছাড়লেও খুব বেশি ম্যাচে তিনি মূল একাদশে থাকবেন বলে মনে হচ্ছে না।

     

    রজার্সের মধুর সমস্যা হবে, কাকে রেখে কাকে খেলাবেন। বেশ কয়েকটি ফর্মেশনে লিভারপুলকে দেখা যেতে পারে এবার। ২০১৩-১৪ মৌসুমে ৫ ফর্মেশনে দলকে খেলিয়ে সাফল্য পেয়েছিলেন। এবার খেলাতে পারেন ৫ মিডফিল্ডারকে। রজার্সের হাতে মূল সুবিধা, তাঁর মধ্যভাগের ভয়ংকর সব অস্ত্র। এদেরকে ঠিক ফর্মেশনে খেলাতে পারলে শিরোপা দৌড়ে ভাল করবে লিভারপুল। সেরা চারে থাকার মত স্কোয়াড আছে। তবে ট্রান্সফার উইন্ডোর বাকি সময়ে রক্ষণভাগ আরেকটু শক্তিশালী করার চেষ্টা করা উচিৎ।  

     

    সম্ভাব্য ফর্মেশনঃ ৪-৪-২, ৪-৫-১

     


    আরো পড়ুনঃ

    দ্বিতীয় পর্ব- ফন গালের "প্রতিদানের" সময়