• লা লিগা
  • " />

     

    লা লিগায় শুরুটা জয় দিয়েই করল লোপেতেগির রিয়াল

    লা লিগায় শুরুটা জয় দিয়েই করল লোপেতেগির রিয়াল    

    ২০১৩ সালে রিয়ালে এসেছিলেন রোনালদোর ‘উত্তরাধিকার’ হিসেবে। রোনালদো ক্লাব ছাড়া বা অবসরের পর তার হাতেই ক্লাবটা দেখতে পেয়েছিলেন ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। খেলেছেন ভালোই, কিন্তু রোনালদোর অতিমানবীয় স্ট্যাটসের সামনে ম্লান হয়ে গেছেন প্রতিবার। ক্লাব ছাড়ার গুঞ্জনটা রোনালদোর চেয়ে তারই শোনা যাচ্ছিল বেশি। কিন্তু রিয়াল ছাড়লেন রোনালদো, আর থেকে গেলেন গ্যারেথ বেল। দুর্দান্ত এক প্রাক-মৌসুমের পর সুপারকাপের ম্যাচে রিয়াল সমতায় ফিরেছিল তার অ্যাসিস্ট থেকেই। আর আজ রিয়ালের রোনালদো-পরবর্তী লা লিগা যুগের প্রথম ম্যাচেই গোল করে দলকে জেতালেন বেল। গেটাফেকে ২-০ গোলে হারিয়ে ২০১৮-১৯ লা লিগা মৌসুমের সূচনাটা জয় দিয়েই করল হুলেন লোপেতেগির দল। স্প্যানিশ লিগে নিজের প্রথম ম্যাচে জয় নিয়েই উতরে গেলেন স্পেন জাতীয় দলের সাবেক কোচ।

    সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে নিজের প্রথম ম্যাচে বেশ আক্রমণাত্মক দল সাজিয়েছিলেন লোপেতেগি। মাঝমাঠে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার কাসেমিরোর জায়গায় নেমেছিলেন দানি সেবায়োস, জিদানের অধীনে যিনি পড়ে ছিলেন বাতিলের খাতায়। আর লুকা মদ্রিচের জায়গায় নেমেছিলেন ইস্কো। শুরু থেকেই রিয়ালের আক্রমণাত্মক খেলার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। ম্যাচের ৪ মিনিটেই গ্যারেথ বেলের দুর্দান্ত বাঁকানো শট গেটাফে গোলরক্ষক ডেভিড সোরিয়া ফিরিয়ে না দিলে তখনই লিড নিতে পারত রিয়াল। প্রথমার্ধের পুরোটা জুড়েই বজায় ছিল রিয়ালের আক্রমণ। তবে গেটাফের ‘বাস পার্ক’ ট্যাকটিক্সের সামনে বেশ কয়েকবার খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছিল লোপেতেগির দলকে। ভাগ্যও সহায় ছিল গেটাফের। রিয়ালের হয়ে প্রথমার্ধে সবচেয়ে কাছে গিয়েছিলেন সেই বেলই। বাঁ-প্রান্ত থেকে মার্সেলোর ক্রসে তার হেড ক্রসবারে লেগে চলে যায় গোলের বাইরে দিয়ে।

     

     

    অবশ্য এজন্য খুব একটা পুড়তে হয়নি রিয়ালকে। এর মিনিট চারেক পরই লিড নেয় তারা। আবারও সেই মার্সেলোর ভাসানো ক্রস ধরতে এসে বলের নিয়ন্ত্রণ হারান সোরিয়া। বল চলে আসে কারভাহালের দিকে। লাফিয়ে হেড করে সোরিয়ার মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠান স্প্যানিশ রাইটব্যাক। গোলের পর রিয়ালের খেলায় আত্মবিশ্বাসের ছাপটা হয়ে উঠে আরও স্পষ্ট। সেবায়োস, ইস্কোদের আটকাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় গেটাফেকে। আর রিয়ালের পাসিংয়ে সমর্থকদের ‘ওলে! ওলে!!’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে সমগ্র বার্নাব্যু। কিন্তু দ্বিতীয় গোলটা পেতে বেগ পেতে হচ্ছিল লোপেতেগির দলকে। প্রথমার্ধের শেষদিকে অবশ্য পেয়েও গিয়েছিল গোলটা। কিন্তু বল জালে পাঠানোর আগে ডিফেন্ডারকে ফাউল করায় বাতিল হয়ে সার্জিও রামোসের গোল।

    প্রথমার্ধের বেলের শট বারে প্রতিহত হওয়ার কিছুক্ষণ পরই লিড নিয়েছিল রিয়াল। রামোসের বাতিল হওয়া গোলের জন্যও আফসোস করতে হয়নি বেশিক্ষণ। কারণ দ্বিতীয়ার্ধের ৫১ মিনিটে আসেন্সিওর ক্রস থেকে বেলের জোরাল শট জড়ায় গেটাফের জালে। রোনালদোর অনুপস্থিতিতে লা লিগায় প্রথম ম্যাচেই জ্বলে উঠলেন ওয়েলশ ফরোয়ার্ড। গোলের পর রিয়ালের ‘আলা মাদ্রিদ’ সঙ্গীতের চেয়ে সমর্থকদের ‘গ্যারেথ! গ্যারেথ!!’ হর্ষধ্বনিতে কান পাতা দায়। বেলও দু’হাত উঁচিয়ে উত্তর দিলেন সমর্থকদের ভালবাসার। সমর্থকেরাও জানেন, রিয়ালের ভালোর জন্য বেলের পারফর্ম করা অত্যন্ত জরুরি। আর বেলও জানেন, সমর্থকেরা পাশে থাকলে অনুপ্রেরণার জোরে সম্ভব যেকোনো কিছুই।

    বেলের গোলের মিনিট তিনেক পর গেটাফের কফিনে শেষ পেরেকটা ঠুকেই দিয়েছিলেন আসেন্সিও। কিন্তু আবারও বাঁধ সাধল বারপোস্ট। ৫৪ মিনিটে তার শট প্রতিহত হয় গেটাফের বারে। আবারও রিয়ালের দীর্ঘশ্বাস। রিয়ালের ম্যাচের ফলাফল নিশ্চিত করার এত সু্যোগ হাতছাড়া করার পরও ম্যাচে ফেরার কোনো ইঙ্গিতই দিতে পারেনি গেটাফে। রিয়ালের গোলবারের নিচে কেইলর নাভাস ছিলেন নিতান্তই দর্শক। ২-০ গোলের জয়েই তাই শুরু হল রিয়ালের রোণাল্ডো-পরবর্তী লা লিগা মিশন। ১৯৮৪ সালের পর বার্নাব্যুতে হওয়া মৌসুমের প্রথম ম্যাচে না হারার রেকর্ডটাও অক্ষুণ্ণ রাখল ‘লস ব্লাঙ্কোস’রা।