• লা লিগা
  • " />

     

    'ভার'-ই বাঁচা বাঁচল বার্সা

    'ভার'-ই বাঁচা বাঁচল বার্সা    

    দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের খেলাও শেষ প্রায়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফেরার সুযোগ হারিয়েছিলেন কেকো। ৯৩ মিনিটে বাঁপ্রান্ত থেকে ক্রস করলেন বদলি স্ট্রাইকার দুজে চপ। বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টার-স্টেগেন এগিয়ে আসলেও তার আগে হেড করে বল জালে পাঠালেন সেই কেকো। জার্সি খুলে মাতলেন উদযাপনে। রিয়াল ভায়াদোলিদের হোসে জোরিয়া স্টেডিয়ামে তখন সমর্থকদের বুনো উল্লাসে কান পাতা দায়। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেল, অফসাইডে ছিলেন কেকো। বাতিল হল গোল। ভায়াদোলিদের উৎসবমুখর পরিবেশটা হঠাৎই পরিণত হল মৃত্যুপুরীতে। যেন চারদিকে পিনপতন নীরবতা। শেষমেশ তীরে তরী ফিরলেও ডুবে গেল ভায়াদোলিদের ড্রয়ের আশা। উসমান ডেম্বেলের একমাত্র গোলে ২০১৮-১৯ মৌসুমের লা লিগায় নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ১-০ গোলে জিতল বার্সা।

    ভায়াদোলিদের বিপক্ষে মূল একাদশে একটি পরিবর্তন এনেছিলেন বার্সা কোচ এর্নেস্তো ভালভার্দে। গত সপ্তাহে মাঝমাঠে খেলা সার্জি রবার্তোকে রাইটব্যাকে এনে নেলসন সেমেদোর জায়গায় নামিয়েছিলেন ফিলিপ কুতিনিয়ো। তবে আক্রমণাত্মক বার্সার বিপক্ষে প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল লা লিগায় নবাগত দলটিই। ৮ মিনিটে স্ট্রাইকার এনেস উনালের জোরাল শট বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টার-স্টেগেন ফিরিয়ে না দিলে হয়ত লিড নিত ভায়াদোলিদই। প্রথমার্ধে বার্সার এমন ফিকে পারফরম্যান্সের অন্যতম কারণ ভায়াদোলিদের মাঠ। একাধিক জায়গায় টার্ফ উঠে যাওয়ায় বার্সার স্বভাবসুলভ পাসিংটা হচ্ছিল না ঠিকঠাক। বেশ কয়েকবার বল আটকে যাচ্ছিল মাঠে। যার কারণে মেসি-সুয়ারেজ-কুতিনিয়োদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবটা বোঝা যাচ্ছিল বেশ। কিন্তু নিজেদের মাঠ হওয়ায় টার্ফ নিয়ে তেমন সমস্যায় পড়েনি ভায়াদোলিদ।

     

     

    ম্যাচের দ্বিতীয় সুযোগটাও পেয়েছিল তারা। তবে টোনির শট ফিরিয়ে বার্সাকে সমতায় রেখেছিলেন টার স্টেগেন। তবে দলটা যখন বার্সা, তখন শত বাধাবিপত্তি দিয়েও তাদের দমিয়ে রাখা প্রায় অসম্ভব। হলও তাই। টোনির শটের পর থেকেই গোছানো ফুটবলে ম্যাচের ফিরতে থাকে কাতালানরা। উইংয়ে উসমান ডেম্বেলের গতি, কুতিনিয়োর প্লেমেকিং- সব মিলিয়ে স্বরূপে ফেরা বার্সা সুযোগও পেয়েছিল প্রথমার্ধে। ৩৩ মিনিটে ডেম্বেলের পাস থেকে সুয়ারেজের শট দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন জর্দি মাসিপ। লা মাসিয়া থেকে উঠে আসা এই গোলরক্ষক বার্সার মূল দলে সুযোগ পাননি একেবারেই। আজ যেন নিজের সাবেক দলের বিপক্ষে নিজেকে প্রমাণের দৃঢ়প্রত্যয় নিয়েই নেমেছিলেন তিনি। ৩৫ মিনিটে কুতিনিয়োর বাঁকাণো শট দুর্দান্তভাবে রুখে দেন তিনি। মাঠের তথৈবচ অবস্থা, সাথে মাসিপের বীরত্ব- সব মিলিয়ে প্রথমার্ধে গোলের দেখা আর পাওয়া হয়নি বার্সার। প্রথমার্ধে একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি মেসি। ভায়াদোলিদ বক্সে বল পেয়েছেন মাত্র একবার, বল হারিয়েছেন মোট ১৮বার। 

    প্রথমার্ধে নিঃসন্দেহে বার্সার সেরা খেলোয়াড় ছিলেন তিনিই। গতি আর ড্রিবলিং দিয়ে তটস্থ রেখেছিলেন ভায়াদোলিদ রক্ষণভাগকে। দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই বার্সাকে লিড এনে দেন ডেম্বেলে। ৫৭ মিনিটে কুতিনিয়োর লম্বা পাসে ডিবক্সে হেড করে ডেম্বেলের দিকে পাস বাড়ান রবার্তো। ডানপায়ের জোরাল শটে লক্ষ্যভেদ করেন ফ্রেঞ্চ উইঙ্গার। গোলের পর আরও গুছিয়ে উঠে বার্সা। দুই অর্ধের বিরতিতে মাঠে পানি ছিটানোয় মাঠেও ফিরে আসে মসৃণতা। আর তাতেই বার্সার হয় পৌষ মাস, আর ভায়াদোলিদের সর্বনাশ। বার্সার পাসিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি তারা। কিন্তু সুয়ারেজদের বাজে ফিনিশিংয়ে ম্যাচের শেষ পর্যন্তও সমতায় ফেরার একটা আশা জেগেছিল ভায়াদোলিদের। সবচেয়ে বড় সুযোগটা পেয়েছিলেন কেকো। বদলি ফরোয়ার্ড কেকোর ক্রসে তার হেড রুখে দিতে অবশ্য তেমন বেগ পেতে হয়নি টার স্টেগেনকে। দ্বিতীয়ার্ধে পজেশন নির্ভর ফুটবল খেলা বার্সার হয়ে দ্বিতীয় গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন বদলি উইঙ্গার ম্যালকম। কিন্তু তার শটও ফিরিয়ে দেন মাসিপ। শেষদিকে বিতর্কের কাছে হার মানে ভায়াদোলিদ। আর নিজেদের সেরাটা না দিয়েও জয় নিয়েই ফেরে বার্সা।