রবির সরে যাওয়ার পেছনে "ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত চুক্তি"
এশিয়া কাপের প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু হয়েছে আজ মিরপুরে। অনুশীলনের সময় ক্রিকেটারদের গায়ে দেখা গেল নতুন কিট, কদিন আগেও যে রবির লোগো ছিল, আজ সেটা নেই। বিসিবি ও রবির পথ দুটি দিকে বেঁকে গেছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিসিবির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে রবি। ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণেই মূলত এমন করেছে রবি, জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরি। এসব বিষয় নিয়ে বিসিবি পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত হুট করেই সরে দাঁড়িয়েছে রবি। কোনও দাবি থাকলে সেটার জন্য এখন আইনি পরামর্শকদের সঙ্গে আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত জানাবে বিসিবি।
গত বছর দ্বিতীয় মেয়াদে বিসিবির সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবির। আগামী বছর জুন পর্যন্ত ছিল সে চুক্তির মেয়াদ। তবে মেয়াদ শেষ করার আগে যে কারণ দেখিয়ে রবি সরে দাঁড়িয়েছে, সেটা আপাতত বিসিবির কাছে গ্রহণযোগ্য নয় বলেও জানিয়েছেন নিজামউদ্দিন।
“তারা মূলত যেটা বলেছে, আমাদের ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত চুক্তি, যেটা তাদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে, সেটা নিয়ে তাদের আপত্তি ছিল। এবং সেটা পুরোপুরি সমাধান না হওয়ায় তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে”, বলেছেন নিজাম। তবে রবির এই পদক্ষপের ভিন্ন ইঙ্গিত আছে বলে মনে করেন তিনি, “তবে আমাদের মনে হয়েছে বিষয়টা তাদের অন্য কৌশলগত কারণে হতে পারে। আমরা এই বিষয় (তাদের ব্যাখ্যা) পুরোপুরি গ্রহণ করতে রাজি নই।”
“বেশ কিছু পদক্ষেপ রবির সঙ্গে আলোচনার পর নিয়েছিলাম। আপনারা জানেন যে, সাকিব আল হাসানের সঙ্গে একটা মোবাইল কোম্পানির চুক্তি ছিল সেটা বাতিল করেছিলেন সাকিব। তামিম ইকবালও করেছেন, তার চুক্তি ছিল গ্রামীণফোনের সঙ্গে। আমাদের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গেও গ্রামীণের চুক্তি বাতিল প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। আমরা এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই যাচ্ছিলাম। সে কারণে আমাদের কাছে রবির সিদ্ধান্ত হতবাক করার মতো।”
ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত চুক্তির ব্যাপারটা রবির সঙ্গে প্রথম মেয়াদের চুক্তির সময় ছিল না। দ্বিতীয় মেয়াদের সেটা যুক্ত করেছে তারা, তবে বিসিবি সেটা মানার মতো পর্যাপ্ত সময় পায়নি বলেই দাবি নিজামের, “এটা তো ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপের চুক্তি। একেকজনের একেকসময় হয়েছে। মাশরাফির চুক্তিটা যখন হয়েছে তখন রবির সঙ্গে ‘সাঙ্ঘর্ষিক এই শর্তটা’ ছিল না। সাকিবের বিষয়টা যখন এসেছে, তামিমের বিষয়টা যখন এসেছে আমরা কিন্তু ওইভাবে জানিয়েছি। রবির সঙ্গে যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল তাতেও বলেছি যে আমরা এর থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছি।”
“বিষয়টা অনেক আগে থেকেই আলোচনা হচ্ছিল। আপনারা হয়ত জেনে থাকবেন, আগে বিষয়টা ছিল এবং আমাদের ক্রিকেটাররা সাঙ্ঘর্ষিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিতে ছিল। তাদের কাছ থেকে বের হয়ে আসাটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার ছিল। আমরাও একটা স্বস্তির জায়গা চাচ্ছিলাম এবং রবির সঙ্গে আলোচনার পর একটা সমঝোতা হচ্ছিল। তারপর হুট করে এটা (চুক্তি বাতিল হয়ে যাওয়াটা) আমাদের জন্য দুঃখজনক।”
তবে ২০১৫ সাল থেকে বোর্ডের সঙ্গে থাকা স্পন্সরকে ধন্যবাদই জানিয়েছেন নিজাম। এশিয়া কাপের আগেই নতুন স্পন্সর নিশ্চিত করারও আশা তার।