• ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজ
  • " />

     

    "অনেক মেধাবি ছিলাম না, তবে সামর্থ্যের পুরোটুকুই কাজে লাগিয়েছি"

    "অনেক মেধাবি ছিলাম না, তবে সামর্থ্যের পুরোটুকুই কাজে লাগিয়েছি"    

    ম্যাচের আগে জানতেন শুধু জো রুট। আর ম্যাচের সময় কোচ ট্রেভর বেইলিস। অ্যালেস্টার কুক সাউদাম্পটন টেস্টের পরই জানিয়েছেন সতীর্থদের, ওভাল টেস্টের পরই তিনি ইংল্যান্ডকে বিদায় বলছেন বিদায়। গত ছয় মাস ধরেই নিজের অবসরের কথা চিন্তা করছেন বলেও জানিয়েছেন ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ টেস্ট রানের মালিক। 

    “ম্যাচশেষে আমি বলেছি, ‘এটা কারও জন্য সুসংবাদ, কারও জন্য দুঃখের খবর হতে পারে। কারও এটা শুনে ভালও লাগতে পারে। তবে এটাই উপযুক্ত সময়, আমি আমার কাজটুকু শেষ করে ফেলেছি। আর একটি ম্যাচ খেলব আমি”, নিজের বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন কুক। 

    তবে সতীর্থদের এই খবর দেওয়াটা নিজের জন্য মোটেও সহজ ছিল না তার, “কয়েকটা বিয়ার খেতে হয়েছে। নাহলে আমি যতখানি কেঁদেছি, তার চেয়ে আরও বেশি কাঁদতাম।” 

    “এরপর ক্ষণিকের জন্য নিস্তব্ধতা ছিল। এরপর মো (মইন আলি) কিছু একটা বললো, আমরা সবাই সেটা নিয়ে হাসতে হাসতেই ব্যাপারটা ভুলে গেছি।” 

    তবে ভারত সাউদাম্পটন টেস্টে জিতে সিরিজে সমতায় ফেরালে খবরটা আরও কিছুদিন চেপে রাখার চেষ্টা করতেন কুক। এই সময়ে এসে এসব খবর চেপে রাখার চেষ্টা বা টানা “মিথ্যা” বলে যাওয়াটাও সহজ হতো না বলেই জানিয়েছেন তিনি। 

    তবে একবার খবর জানানোর পর গোটা ক্রিকেট-বিশ্বের যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন, সেটাকে অতি-বাস্তব বলে মনে হয়েছে তার কাছে, “এক বন্ধু কল করে নিশ্চিত হয়েছে, আমি বেঁচে আছি কিনা। নিজের সম্বন্ধে এত ভাল কিছু শোনা অবশ্যই ভাল একটা ব্যাপার। আমি গত কয়েকদিন ধরেই বাসায় ছিলাম, এসব ব্যাপারে নজর দিইনি। কাল রাতেই দেখেছি।” 

    বেশ কিছুদিন ধরেই রানের ভেতর নেই কুক, ব্যাপারটা ঠিক তার ফর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি, “গত ছয় মাস ধরেই আমি ইঙ্গিতটা পাচ্ছিলাম, এমন কিছু একটা হতে যাচ্ছে। আমি সবসময়ই মানসিক দিক দিয়ে দৃঢ় ছিলাম, আমি যা করেছি সেসব নিয়ে। তবে সেই দৃঢ়তাটা চলে গেছে।” 

    ১২ বছরের ক্যারিয়ারে ১২ হাজারের ওপর রান। তবে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উঁচুতে তিনি রাখতে চান ২০১০-১১ অ্যাশেজ ও ২০১২ সালে ভারতের মাটিতে সিরিজ জয়টিকে। সেই অ্যাশেজে ৭৬৬ রান করে ২৪ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইংল্যান্ডকে অ্যাশেজ জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি, ভারত-দূর্গ জয়েও ছিল তার গ্রে নিকোলসের বড় অবদান। 
    “আমি পেছন ফিরে বলতে পারি, আমার সামর্থ্যের মধ্যে আমি সেরা ক্রিকেটারটিই হয়েছি। এটাই আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার। 

    “অনেক মেধাবি ক্রিকেটার ছিলাম না, তবে সামর্থ্য অনুযায়ী সবকিছুই করেছি।” 

    ২০১৪ সালে কেভিন পিটারসেনকে নিয়ে ঝামেলাটিকেই কুক রাখবেন তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে দূর্বল মুহুর্ত হিসেবে। 

    “কেপির ব্যাপারটা সবচেয়ে কঠিন ছিল, সে বছরটা”, বলেছেন সে সময়ের অধিনায়ক কুক। “আমি এমন একটা সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়ার অংশ ছিলাম, যেটার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা আমি নিইনি। অবশ্যই এটাকে অন্যভাবে সামলানো যেতো।” 

    ২০১৫ সালে ইসিবির ক্রিকেট-ডিরেক্টর হওয়ার পর অ্যান্ড্রিউ স্ট্রাউস ঘোষণা দিয়েছিলেন, পিটারসেনকে ভবিষ্যতে ইংল্যান্ডের জন্য আর বিবেচনা করা হবে না। 

    “যে মুহুর্তে স্ট্রাউস বোর্ডে এসে বললো, সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটাই সবচেয়ে ভাল অংশ ছিল। অবশ্যই এটা নিয়ে আক্ষেপ আছে- ইংলিশ ক্রিকেটের জন্য এটা ভাল কিছু ছিল না।” 

    নিজে ক্রিকেট ব্যাটসম্যানের একটা জাতের শেষ প্রজাতি কিনা, এমন ব্যাপারে কুক বলেছেন, “টি-টোয়েন্টির জাঁকজমকেও আজকের বাচ্চার বেশি ঝুঁকছে, আমার মনে হয়। আমি এসেক্সেও তরুণদের দেখেছি। রক্ষণের চেয়ে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে তারা ভাল। এটাই ব্যাপার।

    “আমি নিশ্চিত না, আমিই শেষ প্রজাতি কিনা। যারা লাল বলে সাদা বলের চেয়ে বেশি অভ্যস্থ। আমরাও তরুণ হিসেবে টি-টোয়েন্টি খেলেছি, তবে তখনও আমরা প্রথম পাঁচ ওভারে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করতাম। তৃতীয় বলেই কিপারের মাথার ওপর দিয়ে তুলে মারতে চাইতাম না।”