লেগানেসের কাছে এবার হেরেই গেল বার্সা
আগের ম্যাচে ঘরের মাঠে জিরোনার সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগি। পরের ম্যাচে হেরেই বসল বার্সেলোনা। তাও আবার লেগানেসের বিপক্ষে, সেটাও আবার প্রথমে এগিয়ে গিয়েও। লেগানেসের মাঠে বার্সার হারটা এসেছে চমক হয়েই, কিন্তু তাতে মৌসুমের শুরুতেই একটা ধাক্কাও খেয়ে বসল তারা। আগের মৌসুমে মাত্র এক ম্যাচ হারা বার্সা, এবার ৬ ম্যাচের একটিতেই হেরে বসেছে।
অথচ লেগানেসের মাঠে সপ্তাহের শুরুর হতাশা কাটিয়ে ওঠার সবরকম ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিল বার্সেলোনা। ম্যাচে এগিয়ে যেতে বার্সা সময় নিয়েছিল মাত্র ১২ মিনিট। লিওনেল মেসির পাস থেকে ডিবক্সের ঠিক বাইরে বল পেয়েছিলেন ফিলিপ কৌতিনহো। রিসিভ করে দ্বিতীয় টাচে করলেন ভলি, কৌতিনহোর ঝুলিয়ে জমা হল আরও একটি দেখার মতো গোল। দারুণ গোলের পর বার্সার আক্রমণভাগ আরও তীক্ষ্ণ, লুইস সুয়ারেজ ছিলেন না। ডেম্বেলে, মুনিরদের নিয়ে মেসি, কৌতিনহোরা সবরকম সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন লেগানেস ডিফেন্ডারদের জন্য। ১৬ মিনিটে মেসির ডিবক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট গোলবারের কোণায় লেগে বাইরে চলে গেলে ব্যবধান বাড়ানো হয়নি বার্সার। কিন্তু সেই আক্ষেপ যে ম্যাচ শেষে ভোগাবে তা কে ভেবেছিল তখন। প্রথমার্ধের খেলা শেষেও সেটা বোঝার উপায় ছিল না। বিরতির সময় মাঠ ছাড়ার আগ পর্যন্ত বার্সার হাতে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ খেলার। আর বাকি দশটা ম্যাচের মতো দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিপক্ষকে ছিন্ন ভিন্ন করে দেওয়ার অপেক্ষায় বার্সা।
সেখানেই বড় সড় এক ধাক্কা খেল এর্নেস্তো ভালভার্দের দল। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ৫ মিনিটও প্রথমার্ধের মতো একই তালে খেলে গেলেও বার্সার বিপত্তিটা বাঁধল ৫২ মিনিটে। জোনাথন সিলভা বাঁ দিক থেকে ক্রস করেছিলেন অনেকটা ডিপে, সেখানে দৌঁড়ে পৌঁছে গেলেন নাবিল এল ঝার। জর্দি আলবা ছিলেন না, বার্সার রক্ষণে লেফটব্যাক হিসেবে নেমেছিলেন থমাস ভারমালেন। এল ঝারের সঙ্গে বাতাসে বল দখলের লড়াইয়ে পুরোপুরি হার মানলেন ডাচ ডিফেন্ডার। এল ঝার ওই লড়াইয়ে তো জিতলেনই, হেডে গোলও করলেন। আচমকা ম্যাচে ফিরে আসল লেগানেসও।
লেগানেসের ওই গোলটা অবশ্য চমক হয়ে থাকল অল্প সময়ের জন্য। ভারমালেনের ভুলটাও ঢেকে গেল সেই সঙ্গে। ব্যবধান মাত্র ৬৮ সেকেন্ড। লেগানেসের পরের আক্রমণ থেকেই গোল হজম করে বসল বার্সা। এবার এল ঝারই ডিবক্সের ডানদিক দিয়ে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন, জেরার্ড পিকে অবশ্য তার কাছ থেকে বলটা পেলেন ঠিকই। কিন্তু তিনিই উলটো কাজটা সহজ করে দিলেন প্রতিপক্ষের জন্য। শিশুতোষ ভুল করে, তিনিই বলটা পাস দিয়ে দিলেন খানিক দূরে দাঁড়ানো অস্কারের কাছে। উপহার পেয়ে সেটা পুরোপুরি লুফেই নিয়েছেন অস্কার। রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ধারে লেগানেসে যোগ দিয়েছিলেন, বার্সার বিপক্ষে গোল করার সুযোগ হাতছাড়া করবেন কেন তিনি! সেই অস্কারের গোলেই পরে ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে ম্যাচের।
দুই মিনিটে দুই গোল হজম করার চেয়ে অবশ্য বার্সাকে আরও বেশি আক্ষেপে পোড়াতে পারে যথেষ্ট সময় পেয়েও ম্যাচে ফিরে আসতে না পারাটা। বাকিটা সময়ে লুইস সুয়ারেজ, ম্যালকমরা নেমেও ম্যাচের ভাগ্য বদালতে পারেননি। দুই গোল হজম করে বার্সার পালটে যাওয়া দিশেহারা রূপেরও পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু লেগানেসের একটা চক্র পূরণ হয়েছে ঠিকই। এই বছর রিয়াল মাদ্রিদের পর তারা হারিয়ে দিল বার্সেলোনাকেও। লা লিগার ক্লাবগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র এস্পানিওল করেছিল এই কাজ, এবার সেখানে যোগ হল লেগানেসের নামও।