• লা লিগা
  • " />

     

    সেভিয়ার কাছে রিয়ালের অসহায় আত্মসমর্পণ

    সেভিয়ার কাছে রিয়ালের অসহায় আত্মসমর্পণ    

    ম্যাচের মিনিট দশেক আগেই খবর আসল, লেগানেসের বিপক্ষে হেরে গেছে বার্সেলোনা। এই রাউন্ডের ম্যাচের আগে দু'দলেরই পয়েন্ট ছিল সমান। আজ বার্সা হেরে যাওয়ায় রিয়াল মাদ্রিদের সামনে সুযোগ এসেছিল ২০১৮-১৯ মৌসুমে লা লিগা টেবিলের শীর্ষস্থানে উঠার। কিন্তু বার্সার হারের সুযোগটার সদ্ব্যবহার করতে পারল না রিয়াল। সেভিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের হারে ৬ ম্যাচে বার্সার সমান ১৩ পয়েন্ট গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে টেবিলের দুই নম্বরেই থাকল 'লস ব্লাঙ্কোস'রা।

    স্তাদিও রামোন সানচেজ পিজুয়ানে ম্যাচের শুরু থেকেই রিয়ালকে চেপে ধরেছিল সেভিয়া। প্রথম মিনিটেই রিয়ালের ডিবক্সে ঢুকে জোরাল শট নিয়েছিলেন আন্দ্রে সিলভা। কিন্তু থিবো কর্তোয়া দক্ষহাতে ফিরিয়েছেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে। শুরুতেই এমন সুযোগ হাতছাড়া করলেও আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে উঠে সেভিয়া। সমর্থকদের মূহূর্মূহূ চিৎকারে খেই হারিয়ে ফেলে রিয়াল। একাধিক ভুল পাসে সেভিয়াকেই পজেশন ফিরিয়ে দিচ্ছিল হুলেন লোপেতেগির দল। কাসেমিরোর এমনই এক ভুল পাসে ম্যাচের ৮ মিনিটে আরেকটু হলেই লিড এনে দিয়েছিলেন উইসাম বেন ইয়েদের। কিন্তু এবারও সেভিয়াকে খালি হাতেই ফিরিয়েছেন কর্তোয়া। 

     

     

    তবে ১৭ মিনিটে আর শেষরক্ষা হয়নি রিয়ালের। ডানপ্রান্ত থেকে হেসুস নাভাসের ক্রসে ডানপায়ের আলতো টোকায় দলকে লিড এনে দেন সিলভা। গোলের পর সমর্থক, ফুটবলারদের বুনো উল্লাসে রীতিমত কেঁপে উঠে সমগ্র সেভিল শহর। সমর্থকদের এমন উদ্দীপনায় মিনিট চারেক পর আবারও সেই সিলভা-নাভাস জুটিতে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সেভিয়া। দুর্দান্ত এক প্রতি-আক্রমণে কর্তোয়াকে একা পেয়ে যান নাভাস। স্প্যানিশ উইঙ্গারের শট ফিরিয়ে দিলেও সিলভার ফিরতি শট আর ঠেকাতে পারেননি কর্তোয়া। ম্যাচের ২০ মিনিটেই ২ গোলের লিড। এমনটা যে স্বপ্নেও ভাবেননি সেভিয়া কোচ পাবলো মাশিন- তা বোঝা যাচ্ছিল তার উদযাপনেই। ডাগআউটের অন্যপাশে লোপেতেগির অসহায় মুখভঙ্গি যেন প্রথমার্ধে রিয়ালের পারফরম্যান্সেরই খণ্ডচিত্র। দুই গোলের লিড নিয়েও থেমে থাকেনি সেভিয়া। ২৪ মিনিটে গ্যারেথ বেলের শট বারপোস্টে প্রতিহত হলে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে সেভিয়া। ৩৪ মিনিটে ফ্র‍্যাঙ্কো ভাজকেজের শট ক্রসবারে প্রতিহত না হলে তখনই ব্যবধান আরো বাড়াত মাশিনের দল। তবে এজন্য খুব একটা ভুগতে হয়নি তার দলকে। মিনিট পাঁচেক পর ৩৯ মিনিটে সেভিয়ার কর্ণার থেকে বল ক্লিয়ার করেন সার্জিও রামোস। ফিরতি বল হেড করে ডিবক্সে পাঠান এভার বানেগা। রিয়ালের ডিফেন্ডারদের ভুলে কর্তোয়াকে একা পেয়ে ডানপায়ের ভলিতে গোল করেন বেন ইয়েদের। প্রথমার্ধে সেভিয়ার এক টর্নেডোতে রীতিমত ধ্বংসই হয়ে গেছে রিয়াল।

    সেভিয়ার বিধ্বংসী এক প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা জেগে উঠে রিয়াল। ৫৩ মিনিটে সেভিয়ার জালে বলও পাঠিয়েছিল তারা। কিন্তু ভিডিও রেফারির সাহায্যে মদ্রিচের গোলটি বাতিল করেন মূল রেফারি। এর মিনিট চারেক পর ডিবক্সের বাইরে থেকে মদ্রিচেরই আরেকটি জোরালো শট ফিরিয়ে দেন থমাস ভাচলিক। সেভিয়াও থেমে থাকেনি। প্রতি-আক্রমণে ৫৮ মিনিটে পাবলো সারাবিয়ার শট অবিশ্বাস্যভাবে ফিরিয়ে দেন কর্তোয়া। তিন গোল হজম করলেও দুর্দান্ত কিছু সেভে লোপেতেগির তাকে মূল একাদশে নামানোর সিদ্ধান্তের প্রতি সুবিচার করেছেন কর্তোয়া। প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ভাচলিকও কম যাননি। বেল-ক্রুসদের অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দিয়েছেন সেভিয়ার গোলরক্ষক। শেষদিকে সেভিয়ার ভাজকেজ ফাঁকা পোস্টে গোল করতে ব্যর্থ হলে তিন গোলের জয় নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় সেভিয়াকে।