• লা লিগা
  • " />

     

    আলাভেসের কাছেও হেরে গেল রিয়াল মাদ্রিদ

    আলাভেসের কাছেও হেরে গেল রিয়াল মাদ্রিদ    

    সেভিয়া, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, সিএসকেএ মস্কো। ১১ বছর পর টানা তিন ম্যাচে জয়হীন ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। 'লস ব্লাঙ্কোস'রা গোলেরও দেখা পায়নি গত তিন ম্যাচে। আজ আলাভেসের বিপক্ষে গোল এবং জয় খরা কাটানোর দৃঢ়প্রতিজ্ঞা নিয়েই মাঠে নেমেছিল রিয়াল। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শেষেও যখন গোলের দেখা পেল না হুলেন লোপেতেগির দল, তখন আবারও এক গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়া প্রায় নিশ্চিত ছিল রিয়ালের। কিন্তু ড্রটা জুটল না রিয়ালের। ৯৫ মিনিটে আলাভেসের কর্ণার এগিয়ে গিয়ে ধরতে চেয়েছিলেন থিবো কোর্তোয়া।  তার আগেই সেব্রিনো করেন হেড, সেটাও ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ কোর্তোয়া, এরপর ফার কর্নারে আবার গার্সিয়ার হেড জড়ায় রিয়ালের জালে। বুনো উল্লাসে তখন এস্তাদিও মেন্ডিজারোজায় কান পাতাই দায়। আর ডাগআউটে লোপেতেগির মাথায় হাত, হাত দিয়ে মুখ লুকালেন অধিনায়ক সার্জিও রামোস। গোল তো দূরে থাক, গোল খেয়ে হেরেই বসল রিয়াল। আলাভেসের কাছে ১-০ গোলে হেরে আপাতত টেবিলের দুইয়ে নম্বরেই থাকল তারা।

    ১৯৮৫ সালের পর এবারই প্রথম টানা চার ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হল রিয়াল। ২০০২ সালের পর আবারও লা লিগায় টানা তিন ম্যাচ গোলশূন্য থাকল তারা। রিয়ালকে হারিয়ে লা লিগার এবারের 'সারপ্রাইজ প্যাকেজ' আলাভেস উঠে আসল টেবিলের তিন নম্বরে। রিয়ালের সমান ১৪ পয়েন্ট তাদের। এই সপ্তাহের ফলাফল নিজেদের পক্ষে না গেলে টেবিলের ছয় নম্বরেও নেমে যেতে পারেন রামোসরা।


    আলাভেসের বিপক্ষে রিয়ালের মূল একাদশে ফিরেছিলেন গ্যারেথ বেল। মাঝমাঠে ক্রুস-মদ্রিচ-কাসেমিরো ত্রয়ীর সামনে ‘ফ্রি রোল’-এ দানি সেবায়োসকে নামিয়েছিলেন হুলেন লোপেতেগি। গত মৌসুমে এই মাঠেই রিয়ালের হয়ে জোড়া গোল করেছিলেন সেবায়োস। কিন্তু আজ আলাভেসের বিপক্ষে প্রথমার্ধে খুব সম্ভবত রিয়ালের হয়ে সবচেয়ে অনুজ্জ্বল ছিলেন তিনিই। বেল-বেনজেমাদের তো পাস যোগাতেই পারেননি, উলটো একাধিকবার বল হারিয়ে রামোস-ভারানদের ফেলেছিলেন বিপদে। ক্রুস-মদ্রিচরা অবশ্য ছিলেন স্বরূপে। তবে প্রথমার্ধে রিয়ালের সেরা পারফর্মার ছিলেন তরুণ রাইটব্যাক আলভারো ওদ্রিওজোলা। ১০ মিনিটে তার ক্রস থেকে আরেকটু হলেই দলকে লিড এনে দিতে পারতেন বেনজেমা। কিন্তু তার শট গোললাইন থেকে দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দেন চিমো নাভারো। 

     

     

    প্রথমার্ধে প্রায় একাই বেল-বেনজেমাদের আটকানোর কাজটা করেছেন বর্ষীয়ান এই ডিফেন্ডার। নাভারোর সাথে লাগুয়ার্দিয়া-মারিপানরা ছিলেন ইস্পাতদৃঢ়। প্রথমার্ধে আলাভেজের রক্ষণভাগের কারণে ঐ ১০ মিনিটের পর ফার্নান্দো পাচেকোকে আর তেমন পরীক্ষাতেই ফেলতে পারেননি। উলটো ২২ মিনিটে নাভারোর পাস জনি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে থিবো কর্তোয়াকে একা পেয়ে যেতেন তিনি। কিন্তু রিয়ালের ফরোয়ার্ডদের মত আলাভেজের আক্রমণভাগও ছিল বেশ নিষ্প্রভ। মৌসুমের অন্যতম ম্যাড়ম্যাড়ে প্রথমার্ধের পর সমর্থকদের দুয়ো শুনেই মাঠ ছেড়েছেন রামোসরা।

    গোলের আশায় প্রথমার্ধে একেবারেই নিষ্প্রভ বেনজেমাকে উঠিয়ে মারিয়ানোকে নামিয়ে দেন লোপেতেগি। মাঠে নেমেই রিয়ালকে লিডটা প্রায় এনেই দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ৪৯ মিনিটে তিনজনকে ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তার নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন পাচেকো। সাবেক দলের বিপক্ষে রীতিমত দুর্ভেদ্য এক দেয়ালই হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক। রিয়ালের হয়ে পরের সুযোগটিও পেয়েছিলেন মারিয়ানোই। কিন্তু ৫৮ মিনিটে বেলের ক্রস থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের রিয়ালের গোলমুখে সুযোগ বলতে এতটুকুই। বাকিটা সময় আলাভেজের নাছোড়বান্দা রক্ষণের বিপক্ষে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি রিয়াল। উপায়ন্তর না দেখে বেলের বদলে তরুণ সেনসেশন ভিনিসিয়াস জুনিয়র এবং কাসেমিরোর বিপক্ষে মার্কো আসেন্সিওকে নামিয়ে দিয়েও কোনো সৌভাগ্য পাননি লোপেতেগি। বেলদের দারুণভাবে পুরোটা ম্যাচ সামলানো আলাভেজ অবশ্য আকড়মণে সুবিধা করতে পারেনি দ্বিতীয়ার্ধেও। দূরপাল্লার শট এবং প্রতি-আক্রমণে নির্ভর ইবাই গোমেজদের দমিয়ে রাখতে কোনো সমস্যাই হয়নি রামোসদের। কিন্তু নিজেদের কাজটা ঠিকমতই করেছে আলাভেজ। রিয়ালকে আটকে দিয়ে শেষ মুহূর্তের গোলে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছেড়েছে তারা। শেষমেশ টানা চার ম্যাচে জয়হীন এবং গোলশূন্য থেকেই মাঠ ছাড়ে 'লস ব্লাঙ্কোস'রা।