সাইফের পর ইমরুল-লিটনে বাংলাদেশের ২-০
জিম্বাবুয়ে ২৪৬/৭, ৫০ ওভার (টেইলর ৭৫, রাজা ৪৯, সাইফ ৩/৪৫)
বাংলাদেশ ২৫০/৩, ৪৪.১ ওভার (ইমরুল ৯০, লিটন ৮৩, রাজা ৩/৪৩)
বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী ও সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে
২০১১ সালের পর আজকের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাটিং করে এতো রান তোলেনি জিম্বাবুয়ে। তবে যথেষ্ট হয়নি সেটাও। ইমরুল-লিটনের সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ থাকতে পারে, কিন্তু এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করার সুযোগ মিস করেনি বাংলাদেশ। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের দারুণ বোলিংয়ে জিম্বাবুয়েকে ২৪৬ রানে আটকে রাখার পর ৭ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে তারা।
চট্টগ্রামের এ উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন নয়, ইমরুল-লিটন দেখালেন সেটাই। শুরুটা ঝড়ো হয়নি, তবে প্রথম পাওয়ারপ্লেতে উঠেছে ৫০ রান। বাংলাদেশকে চেপে ধরতে দ্রুত উইকেট দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের, সেটা পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৪তম ওভার পর্যন্ত। শেষ তিন ম্যাচে দুইবার ওপেনিংয়ে সেঞ্চুরি জুটি পেলো বাংলাদেশ।
লিটন এর আগে ছিলেন দারুণ ছন্দে, পায়ের ওপরের বলকে দারুণ টাইমিংয়ে খেলেছেন সুবিধামতো অঞ্চলে। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে স্কয়ার লেগ- লিটন ১১টি বাউন্ডারি মেরেছেন এই পুরো অঞ্চল কাভার করেই। সঙ্গে লং-অন দিয়ে একটি ছয়। ইনসাইড-আউটে চার মারার পর আবার রাজাকে খেলতে গিয়েছিলেন একই শট, তবে বলের পিচিং পর্যন্ত পৌঁছাতে না পেরে কাভারে ক্যাচ তুলেছেন।
ইমরুল আগের ম্যাচের ফর্মকেই ডেকে এনেছেন, অবশ্য এদিন ছিলেন আগের ম্যাচের তুলনায় একটু ধীরগতির। তবে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটা পাননি নিজের দোষেই। লিটনের মতো বেরিয়ে এসে তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন লং-অফে। বারদুয়েক সুযোগ পেয়েছিলেন অবশ্য এর আগে। তবে ওপেনিংয়ে তামিম ফিরলেও ইমরুল নিজের দাবিটা আরেকবার জানালেন জোরালোভাবেই।
ইমরুলের আগে আরেকবার হতাশা সঙ্গী হয়েছে ফজলে রাব্বির, চতুর্থ বাংলাদেশী হিসেবে প্রথম দুই ওয়ানডে ইনিংসেই শুন্য রানে আউট হয়েছেন তিনি, রাজার ফ্লাইটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্টাম্পড হয়ে।
এরপর আর সফলতার দেখা পায়নি জিম্বাবুয়ে, মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন ৩৫ বল বাকি থাকতেই এনেছেন জয়। সেটা আরেকবার প্রমাণ করেছে, এ উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৪৬ রান যথেষ্ট নয়।
সাইফের বলে মাসাকাদজার দ্রুত উইকেটে নড়বড়ে শুরু ছিল জিম্বাবুয়ের। সেটা জিম্বাবুয়ে সামাল দিয়েছিল জুয়াও-টেইলরের ৫২ রানের জুটিতে। মিরাজের বলে জুয়াও ক্যাচ দেওয়ায় আরেকবার চাপে পড়েছে জিম্বাবুয়ে।
নতুন ব্যাটসম্যান শেন উইলিয়ামস রান তুলতে পারছিলেন না, অবশ্য আরেকদিকে স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলছিলেন টেইলর, আরেকটা দ্রুত উইকেট বাংলাদেশকে দারুণ জায়গায় নিতে পারতো। তবে টেইলর সেটা হতে দেননি। উইলিয়ামসের সঙ্গে তার জুটি জিম্বাবুয়েকে দিয়েছিল ভাল একটা ভিত। তবে ৭৫ রান করে আউট হয়েছেন অসময়ে, মাহমুদউল্লাহকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে।
শুরুতে সাইফ উদ্দিনের বলে আউটসাইড-এজড হয়েছিলেন একবার, স্লিপ ছিল না বলে বিপদ হয়নি। আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত দারুণ ছিলেন টেইলর, ৯ চারের আটটিই মেরেছেন ‘ভি’-এর মধ্যে। সুইপ করে ছয় মেরেছেন, ইন ফ্রন্ট অব স্কয়ারে ছিলেন দারুণ। কোচ লালচাঁদ রাজপুত তার কাছ থেকে বড় ইনিংস আশা করেছিলেন, টেইলর করেছেন ৭৫।
বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। এর আগে সুইপের চেষ্টায় এলবিডব্লিউর হাত থেকে বেঁচেছিলেন টেইলর, মাহমুদউল্লাহকে রিভার্স সুইপের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হয়েছেন এলবিডব্লিউ। উইলিয়ামসের সঙ্গে এরপর ছিলেন রাজা, শেষ ১০ ওভারে গিয়ার বদলানোর আগের কাজটা দুজন করলেন ভালভাবেই।
তবে আবার হাজির সাইফ উদ্দিন। পেস বৈচিত্রে নাকাল করলেন উইলিয়ামসকে, পিচে হোল্ড করা বলে কাট করতে গিয়ে এজড উইলিয়ামস- ৪৭ রান করে। ১ রানের জন্য ফিফটি মিস করেছেন রাজাও, মাশরাফির ক্রস-সিমের বলে খোঁচা মিরে ফিরেছেন রাজা। ব্যাটিং অর্ডারে উন্নতি হওয়ার মুর ক্যাচ দিয়েছেন মোস্তাফিজের বলে, চিগুম্বুরাকে ফিরিয়েছেন সাইফ উদ্দিন। শেষ ১০ ওভারে ৫৪ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে। মোস্তাফিজ ১০ ওভারে দিয়েছেন ৩৫ রান।
বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। এর আগে সুইপের চেষ্টায় এলবিডব্লিউর হাত থেকে বেঁচেছিলেন টেইলর, মাহমুদউল্লাহকে রিভার্স সুইপের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হয়েছেন এলবিডব্লিউ। উইলিয়ামসের সঙ্গে এরপর ছিলেন রাজা, শেষ ১০ ওভারে গিয়ার বদলানোর আগের কাজটা দুজন করলেন ভালভাবেই।
তবে সেটা শেষ পর্যন্ত করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সহজ জয়ই তাদের পরিণতি।