স্লিপ নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে রোডসেরও
৩০ অক্টোবর, পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে বাংলাদেশের টেস্ট প্রস্তুতি। উইকেটকিপিংয়ে মুশফিকুর রহিম, প্রথম স্লিপে মোহাম্মদ মিঠুন, দ্বিতীয় স্লিপে লিটন দাস, তৃতীয় স্লিপে মেহেদী হাসান মিরাজ।
১ নভেম্বর, টেস্ট শুরুর দুই দিন আগে। সকালের শুরুতেই স্লিপ ফিল্ডিং নিয়ে ব্যস্ত দল। এবারও কিপিংয়ে মুশফিক, প্রথম স্লিপে মিঠুন, দ্বিতীয় স্লিপে লিটন, আর তৃতীয় স্লিপে ইমরুল কায়েস।
দুই দিনই স্লিপ ফিল্ডারদের পারফরম্যান্স শ্যেনদৃষ্টিতে দেখছিলেন স্টিভ রোডস। আজকের অনুশীলনেও বোঝা যাচ্ছিল, স্লিপ ফিল্ডিং বেশ ভাবাচ্ছে তাঁকে। পরে সাংবাদিকদের কাছেও সেটা নিয়ে নিজের আক্ষেপ লুকাননি।
রোডস অবশ্য আক্ষেপ করছেন এই কদিনে। আর স্লিপ ফিল্ডিং নিয়ে বাংলাদেশের আক্ষেপ বলতে গেলে ১৯ বছরের টেস্ট অধ্যায়রের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই। রঙিন পোশাকে সেটা খুব বেশি বোঝা যায় না, কিন্তু টেস্টে স্লিপ ফিল্ডিং নিয়ে হাহাকারটা সেই শুরু থেকেই। দেশের মাটিতে পেসে তো আছেই, স্পিনেও স্লিপে বাংলাদেশের ক্যাচ ফেলে দেওয়ার রেকর্ড এন্তার। স্পেশালিস্ট স্লিপ ফিল্ডার হিসেবেও কেউ নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলতে পারেননি। ঘরোয়া ক্রিকেটে যে ধরনের উইকেটে খেলা হয়, তাতে স্লিপে বলও আসে না খুব বেশি। এর মধ্যে রোডসেরও তা জানা হয়ে গেছে, ‘'আমি আসলে বেশ দুঃখিত বাংলাদেশকে নিয়ে স্লিপ ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে। কারণ ঘরোয়া ক্রিকেটে আমাদের খুব বেশি স্লিপ ফিল্ডার থাকে না। সেখানকার উইকেট অনেক বেশি ফ্ল্যাট এবং স্লো, স্পিনাররা অনেক ওভার বোলিং করে। সুতরাং তাঁরা খুব বেশি প্রস্তুতি নিতে পারে না। এমনকি অনুশীলনেও তাঁরা স্লিপ ফিল্ডিংয়ে বেশি জোর দেয় না। সুতরাং তাদেরকে এই ক্ষেত্রে অনেক অনুশীলন করতে হবে।’
দেশের বাইরে অবশ্য সেই অভাবটা আরও বেশি করে টের পাওয়া যায়। তবে রোডসকে দেখে মনে হচ্ছে, স্লিপের জন্য স্পেশালিস্ট ফিল্ডার তৈরির দিকে তাঁর ঝোঁক আছে। সেজন্য কিছু উপায়ের কথাও চিন্তা করে রেখেছেন, ‘যখন আমরা দেশের বাইরে যাব আমাদের স্লিপে ক্যাচ নিতে হবে। আশা করি আমরা এই ব্যাপারে উন্নতি করতে পারব। এটি অবশ্য খুব সহজ হবে না। আমরা যেটি করতে পারি তা হল ক্যাচিং মেশিনের মাধ্যমে অনুশীলন করা। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে এখনও।’
একটা ব্যাপার মোটামুটি বলে দেওয়া যায়, গত দুই দিনের অনুশীলনের যে চার জন স্লিপে ছিলেন, তাঁদের মধ্যে তিন জন বা দুজনই দাঁড়াবেন স্লিপে। রোডস তাঁদেরকে ভালো সার্টিফিকেটই দিলেন, ‘আমি অবশ্য বলবো যে এরই মধ্যে অনেক ছেলেরা উন্নতি করছে এই ক্ষেত্রে। স্লিপ ক্যাচিংয়ে দারুণ করছে তাঁরা। লিটন অসাধারণ ভাল করছে। সে অসাধারণ একজন ফিল্ডার। তাঁর অনেক ভাল একটি ক্রিকেটীয় হাত রয়েছে। শান্তও স্লিপে ক্যাচ নিতে পারে। ইমরুলও সেটি পারে। মিরাজও আছে। সুতরাং আমাদের অনেকেই আছে যারা স্লিপ ফিল্ডিং পারে। তবে প্র্যাকটিস মেকস এ ম্যান পারফেক্ট। আশা করি আমরা বুঝতে পারব যে বাংলাদেশ কেন ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছে।'
অনুশীলনে কতটা কাজে দিয়েছে দুই দিন পর প্রথম টেস্টেই তা বোঝা যাবে।