রহস্য যখন সিলেটের উইকেট
অনুশীলনে এসেই খানিক পর সেন্টার উইকেটের দিকে চলে গেল জিম্বাবুয়ে। গোটা দল গভীর মনযোগে তা দেখল, দূর থেকে মুখে তাদের অভিব্যক্তিটা অবশ্য বোঝা গেল না। বাংলাদেশ দল অবশ্য একটা সুবিধা পেয়েছে এখানে, তিন দিন আগেই সিলেটে ঘাঁটি গেড়ে বসায় স্বাগতিক হিসেবে উইকেটটা একটু বেশি খতিয়ে দেখতে পেরেছে। সিলেটে নভেম্বরের আকাশ একেবারে ঝকমকে, রোদের তাপ প্রায় ঝলসেই দিচ্ছে। তারপরও সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে একটা ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে- কেমন হবে প্রথম টেস্টের উইকেট?
প্রথম ভেন্যু বলেই উইকেট নিয়ে আগ্রহটা এবার একটু বেশি। এর আগে সিলেটে বিপিএল হয়েছে, এই বছর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে টি-টোয়েন্টিও হয়েছে একটি। তার আগে ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের বেহস কটি ম্যাচও হয়েছে, সেবার উইকেটে বল ব্যাটে এসেছিল দারুণ। তখনও সিলেটের উইকেটে বাড়তি বাউন্স থাকার কথা বলেছিলেন অনেক খেলোয়াড়ই, পরিসংখ্যানও সাক্ষ্য দেয় জাতীয় লিগের ম্যাচে সিলেটে পেসাররা একটু বেশিই ভালো করেছেন। কিন্তু গত দুই বছরে একটু যেন উলটো দিকে হাঁটতে শুরু করে উইকেট। স্পিনাররা একটু বেশি সাহায্য পাওয়া শুরু করেছেন। এই বছর জাতীয় লিগের যে একটি ম্যাচ হয়েছে, তাতে খেলেছেন এই টেস্টে জাতীয় দলে থাকা দুই পেসার খালেদ আহমেদ ও আবু জায়েদ রাহী। কিন্তু রাহী এক ইনিংস বল করার সুযোগ পেয়ে একটি উইকেট পেয়েছেন, খালেদ তাও পাননি। বরং বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের নায়ক এনামুল হক জুনিয়র এক ইনিংসে পেয়েছেন ছয় উইকেট।
উইকেট নিয়ে কাল বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডসকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কোচ অবশ্য কিছুটা কূটনৈতিক ভঙ্গিতেই বলেছেন, ভালো একটা উইকেট আশা করছেন যেখান থেকে ব্যাটসম্যান ও বোলার সবাই সুবিধা পাবে। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকেও আজ একই প্রশ্ন করা হলো। তিনিও সরাসরি কিছু বলেননি, ‘আজ সকালে উইকেট দেখেছি। আগামীকাল সকালেও দেখব। কিছুটা ড্রাই আছে এই মুহূর্তে। মাঝে কিছু ঘাস রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে আমরা খুব একটা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। তবে আমরা দুই পেসার, দুই স্পিনার বা তিন স্পিনার ও এক পেসার নিয়েও খেলতে পারি। এখনও নিশ্চিত না, কাল উইকেট দেখে নিশ্চিত হব ।’
সরাসরি কিছু না বললেও মাহমুদউল্লাহ আভাস দিয়েছেন, এক পেসার নিয়েও খেলতে পারে বাংলাদেশ। তার মানে স্পিন জাল বিছিয়ে রাখারই পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যেখানে সাকিবের অনুপস্থিতিতে মূল দায়িত্ব থাকবে মেহেদী হাসান মিরাজ আর তাইজুল ইসলামের ওপর। আর তৃতীয় স্পিনার হিসেবে ঢুকে যেতে পারেন নাজমুল ইসলাম অপু। এক পেসার থাকলে মোস্তাফিজুর রহমান সেক্ষেত্রে অটোম্যাটিক চয়েস, আর দুজন খেললে তাঁর সঙ্গী হওয়ার জন্য লড়বেন শফিউল ইসলাম ও আবু জায়েদ রাহী। খালেদ দলে থাকলেও তাঁর অভিষেক যে হচ্ছে না, সেটা একটু ঝুঁকি নিয়েই বলে ফেলা যায়।
সমীকরণ যা বলছে, তাতে সিলেটে তাই প্রথাগত স্পিন উইকেটই থাকছে। তবে সেটা ঢাকার মতো র্যাঙ্ক টার্নার নাকি চট্টগ্রামের মতো একটু বেশি ব্যাটিং উপযোগী সেটাই এখন প্রশ্ন।