• লা লিগা
  • " />

     

    ভায়োকানো ভয়ই পাইয়ে দিয়েছিল বার্সাকে

    ভায়োকানো ভয়ই পাইয়ে দিয়েছিল বার্সাকে    

    আগের সপ্তাহে রিয়াল মাদ্রিদকে উড়িয়ে দেওয়ার পর হারতেই বসেছিল বার্সেলোনা। রায়ো ভায়োকানোর মাঠে ৮৬ মিনিট পর্যন্তও পিছিয়ে ছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এরপর তিন মিনিটের এক ঝড়ে ভায়োকানো ভয় জয় করে বার্সা। ৮৭ মিনিটে উসমান ডেম্বেলে, আর ৯০ মিনিটে লুইস সুয়ারেজের দ্বিতীয় গোলে অস্বস্তির হাত থেকে রেহাই মেলে কাতালান ক্লাবটির।

    এই মৌসুমে মাত্র একটি জয় নিয়ে ভায়োকানো নেমেছিল বার্সার বিপক্ষে খেলতে। ১০ মিনিটেই সুয়ারেজের গোলে বার্সা এগিয়ে যাওয়ায় তাই চমকের তেমন কিছুই ছিল না। বার্সার টেক্সটবুক আক্রমণ থেকেই আসে গোল, জর্দি আলবার মাইনাস থেকে সুয়ারেজ বাম পায়ের ফিনিশে সহজেই এগিয়ে দেন বার্সাকে। এরপরই শুরু ভায়োকানোর ভেলকি। হোসে পোজোর একাদশেই থাকার কথা ছিল না। পিছিয়ে পড়ার পর তিনি ফাঁকা বারে গোল মিস করে তার একাদশে ফেরার যৌক্তিকতাও প্রমাণ করতে পারলেন না। কিন্তু বার্সার রক্ষণ গলে যে সহজেই কিছু একটা করে বসা সম্ভব সেটা তখনই বুঝে গেল ভায়োকানো। ৩৫ মিনিটে সেই পোজো নিজেকে প্রমাণ করলেন। ডিবক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক স্ট্রাইকে ঘরের দলকে সমতায় ফেরালেন তিনি। মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগান বাম দিকে শুয়ে পড়ে সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করেছিলেন। কিন্তু পোজোর নিখুঁত শটের কাছে হার মানতে হয়েছে তাকে, সঙ্গে মৌসুমে প্রথমবারের মতো ডিবক্সের বাইরে থেকেও গোল হজম করতে হয়েছে স্টেগানকে।




    বার্সেলোনা তখনও ততোটা ভয় পায়নি, ৪০ মিনিটে রাফিনহার সঙ্গে ওয়ান-টুতে ডিবক্সের বাইরে থেকে দেখার মতো এক শট করেছিলেন সুয়ারেজ। বারপোস্টে আঘাত পেয়ে দেখার মতো শটটা আর দেখার মতো গোলে পরিণত হয়নি। তাই বিরতিতে যাওয়ার সময় কিছুটা হতাশ হলেও, ভায়োকানোতে এতোটা ভুগতে হবে বার্সাকে- সেটা তখনও আঁচ করা যায়নি। সেটা বোঝা যায়নি ৫০ মিনিটেও। রাফিনহা গোলরক্ষকের সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ানে পছন্দের বাম পায়েও লক্ষ্যে শট করতে পারলেন না। রাফিনহা সুযোগ হারিয়েছেন, এরপর আর মাঠে থাকারও সুযোগ পাননি। তার জায়গায় এর্নেস্তো ভালভার্দে নামিয়ে দেন উসমান ডেম্বেলেকে। এরপর খেলার বেশিরভাগ সময়ই ভায়োকানোর গল্প।

    ৫১ মিনিটে রাউল ডি টমাসকে দারুণ একটা পাস দিয়েছিলেন মোরেনো। টমাস আর গোলের মাঝে পার্থক্য ছিল কেবল স্টেগান, টমাস মেরেছিলেন স্টেগান বরাবরই। বার্সা গোলরক্ষকও শক্ত হাতে ফিরিয়ে দিয়েছেন ভায়োকানোকে সেই দফায়।  যদিও খুব বেশিক্ষণের জন্য আটকে রাখতে পারেননি তিনি। ৫৬ মিনিটে মাঠে নেমেছিলেন আলভারো গার্সিয়া। নেমেই পেলেন গোল, তাও বার্সার বিপক্ষে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে থাকা গোল! ডানদিক থেকে আসা ক্রসে টমাস হেড করেছিলেন প্রথম, বারপোস্টে লেগে সেই বল ফেরত যায় গার্সিয়ার কাছে। এর চেয়ে সহজ গোল ক্যারিয়ারে কমই করবেন গার্সিয়া। ৫৭ মিনিটেই তাই ভায়োকানো ২, বার্সা ১। 

    এরপর কৌশল বদলে আর্তুরো ভিদাল, মুনির এল হাদ্দাদিকে নামান ভালভার্দে। তবুও বার্সার চেহারা ফেরে না, লিওনেল মেসির অনুপস্থিতি রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে না ভোগালেও পয়েন্ট তালিকার তলানীর দিকের দলের বিপক্ষে বার্সাকে ভোগাল বেশ। গোলের নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতেই ৮৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল বার্সাকে। মুনিরের থ্রু পাস থেকে সুয়ারেজ অবশ্য পরে সুবিধা করতে পারেননি। এর দুই মিনিট পরই স্বস্তির গোলটা পায় বার্সা। ডিবক্সের ভেতর জেরার্ড পিকে বল নামিয়ে দিয়েছিলেন, বাকি কাজ কোণাকুণি শটে গোল করে সেরেছেন ডেম্বেলে। এর দুই মিনিট পর সার্জি রবার্তোর ডিপ ক্রস ফারপোস্টে স্লাইড মেরে বল জালে পাঠান সুয়ারেজ,  ভায়োকানোর স্বপ্নটাও 'নির্দয়ের' মতো শেষ করেন। তবে সবচেয়ে বড় কথা, বার্সা সমর্থকেরা স্বস্তি খুঁজতে পারেন অন্যকিছুতে। মেসির অবর্তমানে সুয়ারেজই যে হাল ধরেছেন তাদের!