ডেম্বেলেতে ম্লান কস্তা, বার্সা-অ্যাটলেটিকোর পয়েন্ট ভাগাভাগি
নেইমারের বদলে খেলতে এসে প্রায় দেড় বছর পরও দলে থিতু হতে পারেননি। শীতকালীন দলবদলের বাজারে তার বার্সেলোনা ছাড়ার গুঞ্জনও উঠে গেছে তাই। তার আচরণ নিয়েও আছে প্রশ্ন। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচেও একাদশে ছিলেন না। ডিয়েগো কস্তার গোলে বার্সা পিছিয়ে পড়ার তাকে নামিয়েছিলেন এর্নেস্তো ভালভার্দে। এর আগেও এই মৌসুমে দুইবার বদলি নেমে বার্সাকে হারের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন উসমান ডেম্বেলে। এবারও তিনিই উদ্ধার করেছেন দলকে। ডেম্বেলের ৯০ মিনিটের গোলে অ্যাটলেটিকোর সঙ্গে ১-১ এ ড্র করে লা লিগার শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে বার্সেলোনা।
ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিটেই আসলে জমে উঠেছিল খেলা। এর আগ পর্যন্ত দুই দল খেলেছে নিজেদের চিরাচরিত ধারাতেই। বল পজেশন বজায় রাখছিল বার্সা, অন্যদিকে কাউন্টার অ্যাটাকে বার্সাকে ঘায়েল করার ছক কষেছিলেন ডিয়েগো সিমিওনে। ম্যাচের বেশিরভাগ সময়ই দুই দল খেলেছে নির্ভুল। খেলোয়াড়দের শারীরিক শক্তিমত্তার পরীক্ষা দিতে হয়েছে মুহুর্তে মুহুর্তে। তাই প্রথমার্ধটা গেছে ম্যাড়মেড়ে। গোল তো দূরে থাক, গোলে শটই নিতে পারেনি দুই দলের কেউই। ফিলিপ কৌতিনহো, ইভান রাকিটিচকে ছাড়া খেলতে নামা বার্সা প্রথমার্ধে সার্জি রবার্তোকে হারায় ইনজুরির কারণে। পরে তার জায়গায় নেমেছিলেন আর্তুরো ভিদাল।
ম্যাচে গোল করার মতো প্রথম আক্রমণ ৬০ মিনিটে। আতোয়া গ্রিযমানের বুদ্ধিদীপ্ত এক মুহুর্ত তখনই এগিয়ে দিতে পারত অ্যাটলেটিকোকে। বার্সার কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে ডিবক্সের ভেতর ঢুকে গিয়েছিলেন গ্রিযমান, এরপর মাইনাস করেছিলেন ডিয়েগো কস্তার কাছে। কস্তাও স্লাইড মেরেছিলেন, কিন্তু বলের সঙ্গে পায়ের সংযোগ ঘটাতে পারেননি, সে দফায় তাই বেঁচে যায় বার্সা।
কিন্তু ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানো হুট করেই ৭০ মিনিটের পর থেকে তাঁতিয়ে তোলেন ডিয়েগো সিমিওনে। নিজের ক্যারিশমাটা জমিয়ে রেখেছিলেন হয়ত শেষ অঙ্কের জন্যই। ডাগ আউটে দলের সঙ্গে উজ্জীবিত করছিলেন সমর্থকদের। সেই চাপে কাবু হয়ে বার্সাও খেই হারিয়ে ফেলেছিল, ফলাফল নিজেদের অর্ধ থেকে বের হতেই বেগ পেতে হচ্ছিল বার্সাকে। প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে ৭৭ মিনিটে কর্নার আদায় করে নেয় অ্যাটলেটিকো। এবার গ্রিযমান-কস্তা জুটি দেখল সাফল্যের মুখ। ফার পোস্টে কর্নার মেরেছিলেন গ্রিযমান, নিখুঁত হেডে মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগানকে শাস্তি দিয়ে কস্তা পেয়ে যান কাঙ্ক্ষিত গোল। ফেব্রুয়ারির পর থেকে লা লিগায় গোলশূন্য ছিলেন কস্তা, খরা কাটানোর এর চেয়ে মোক্ষম সুযোগ আর কই পেতেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার! ম্যাচে দুই দলের প্রথম শট অন টার্গেটও ছিল কস্তার ওই শটই।
এক গোলে এগিয়ে থাকা অ্যাটলেটিকো এরপর রক্ষণে আরও মনোযোগী হয়। লুইস সুয়ারেজ স্ট্রাইকার ভূমিকায় খেলার সুযোগ পেয়েছেন কম, লিওনেল মেসিও ছিলেন ছায়া হয়ে। তিনটি ফ্রি কিক পেলেও এদিন কাজে লাগাতে পারেননি একটিও। শেষে বদলি ডেম্বেলেই কেড়ে নেন অ্যাটলেটিকোর হাসি। মেসিও সময়মতো জ্বলে উঠলেন শেষে গিয়ে। ডানদিক থেকে আসা বল নিয়ন্ত্রণ করে, আরেক পায়ে পাস বাড়ালেন ডেম্বেলের দিকে। ডিবক্সের ভেতর থাকা ডেম্বেলে এরপর প্রথম সুযোগেই শট না করে, নিশ্চিত হয়ে মারলেন ইয়ান অবলাকের পায়ের নিচ দিয়ে। গোললাইনে লুকাস হার্নান্দেজ পাহারায় ছিলেন, কিন্তু ডেম্বেলের শট গোললাইন অতিক্রম করার পথে বাধা হতে পারেননি তিনিও। ওই গোলেই হাঁপ ছেড়ে বাঁচে বার্সা।
লা লিগার ১৩ ম্যাচ শেষে তাই ২৫ পয়েন্ট নিয়ে বার্সা থেকে গেছে শীর্ষে, আর তাদের বিপক্ষে এক পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা অ্যাটলেটিকোর পয়েন্ট ২৪। রবিবার নিজেদের মাঠে রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে জয় পেলে অবশ্য সবাইকে ছাড়িয়ে একে উঠে যাবে সেভিয়া।