'শরণার্থী' আহমদি ফেলে এলো মেসির দেওয়া জার্সি
পলিথিনে বানানো লিওনেল মেসির জার্সি গায়ে তার ছবি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল। আফগানিস্তানের সাত বছরের শিশু মুর্তজা আহমদি দুই বছর আগে দেখা করার সুযোগ পেয়েছিল মেসির সাথেও! সেই আহমদির পরিবার আবার ঘরছাড়া হয়েছে। তালেবানদের হামলার শঙ্কায় গজনি শহর ছেড়ে কাবুলে পাড়ি জমিয়েছে তাঁরা। শুধু দ্বিতীয়বারের মতো নিজের বাড়ি নয়, আহমদি পেছনে ফেলে এসেছে মেসির অটোগ্রাফ দেওয়া সেই বল ও জার্সিও।
কয়েক বছর আগে আফগানিস্তান থেকে প্রথমে পাকিস্তানে শরণার্থী হয়ে এসেছিল আহমদির পরিবার। সেখানে থাকা অবস্থায় ২০১৬ সালে পলিথিনের গায়ে মেসির নাম লিখে ফুটবল খেলত আহমদি। সেই ছবি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলে, এটা নজর এড়ায়নি মেসিরও। নিজের এই ক্ষুদে ভক্তের ছবি দেখে কিছুদিন পরেই তাঁকে অটোগ্রাফ দেওয়া বল ও জার্সি পাঠিয়ে দেন মেসি। সেই বছরের শেষে কাতারে প্রীতি ম্যাচ খেলতে আসে বার্সেলোনা। সেই ম্যাচে মেসির হাত ধরে মাঠে প্রবেশ করে আহমদি। রেফারি ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজানোর আগ পর্যন্ত মেসির সঙ্গ ছাড়তে চাইছিল না সে।
একটা সময় পাকিস্তান ছেড়ে নিজের বাড়িতে ফিরে যায় আহমদির পরিবার। মেসির অটোগ্রাফ দেওয়া জার্সি, বল ও তার সাথে কাটানো সময়ের স্মৃতি নিয়েই কাটছিল আহমদির দিন। তবে খ্যাতির বিড়ম্বনাও ছিল, এই দুই বছরে আহমদি আগের মতো রাস্তায় খেলতে পারত না, স্কুলেও পাঠানো হয়নি তাঁকে। হুট করেই গত কয়েক সপ্তাহে গজনি অঞ্চলে বেড়ে গেছে তালেবানদের আক্রমণে শঙ্কা। মেসির সাথে মাঠে নামার পর আহমদির প্রতি আরও বেশি নজর থাকবে তালেবানদের, এমনটাই আশংকা তার মা শফিকার, ‘সবাই বলছে, আমরা মেসির থেকে অনেক টাকা পেয়েছি। আমাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে, সেই টাকার ভাগ ক্ষমতাবানদের না দিলে তাঁরা আমার ছেলেকে নিয়ে যাবে।’
এই ভয়েই সবকিছু ছেড়ে কাবুলে পালিয়ে এসেছে তাঁরা, নিয়ে আসতে পারেনি ঘরের কিছুই। ফেলে আসা জিনিসের মাঝে আছে মেসির সাক্ষর করা সেই বল ও জার্সিও! প্রিয় ফুটবলারের দেওয়া উপহার ফেলে এসে স্বভাবতই মনমরা হয়ে আছে আহমদি।
কাবুলে পালিয়ে আসার পর আহমদির সাথে কথা বলেছিলেন সংবাদসংস্থা এএফপির এক সাংবাদিক। তাঁকে আহমদি জানিয়েছে, সে মেসির সাথে আবার দেখা করতে চায়, 'আমি মেসিকে মিস করি। যখন আবার তার সাথে দেখা হবে, তাঁকে সালাম দিয়ে জিজ্ঞাসা করতে চাই সে কেমন আছে। তখন সে আমাকে বলবে আমি যেন নিরাপদে থাকি। আমি আমার খেলার মাঠে ঢুকতে চাই তার সাথে, মাঠে বসে তার খেলাও দেখতে চাই।’
মেসি হয়ত এই ক্ষুদে ভক্তের জার্সি ও ফুটবল হারানোর খবরটা পাবেন। খরবটা শুনে কি আবার তাঁকে অটোগ্রাফ দেওয়া বল ও জার্সি পাঠিয়ে দেবেন?