শেষের বীরত্বে রিয়ালের জয় নিশ্চিত করলেন কর্তোয়া
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে ক্রস করলেন রায়ো ভায়েকানোর থমাস। সার্জিও রামোসের ওপর লাফিয়ে উঠে দারুণ এক হেড করলেন ইম্বুলা। রায়োর সমর্থকেরা সমতায় ফেরার উদযাপনের প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন প্রায়। কিন্তু তখনই হাওয়ায় ভেসে দুর্দান্তভাবে হেডটি ফিরিয়ে দিলেন রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া। ফিরতি বল পেলেন অ্যালেগ্রিয়া। কিন্তু আবারও বাঁধ সাধলেন কর্তোয়া! ফিরিয়ে দিলেন তার জোরাল শট। বল আবারও অ্যালেগ্রিয়ার পায়ে যাবার আগেই লাইন থেকে ক্লিয়ার করলেন দানি কারভাহাল। রুদ্ধশ্বাস শেষ কয়েক মিনিটে রায়ো আক্রমণঝড় সামলে জয় ঠিকই ছিনিয়ে এনেছে রিয়াল। করিম বেনজেমার একমাত্র গোলে রায়োকে ১-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল। সেভিয়ার চেয়ে ১ ম্যাচ বেশি খেলে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন-এ উঠে এসেছে তারা। ২০১৫ সালের পর এবারই প্রথম লা লিগায় টানা ৩ ক্লিনশীট রাখল রিয়াল।
স্কোরবোর্ড দেখেই অবশ্য বোঝা যাচ্ছে, জয়ের জন্য ঠিক কতটা ঘাম ঝড়াতে হয়েছে রিয়ালকে। তবে প্রথমার্ধে রিয়ালের কাছে পাত্তাই পায়নি রায়ো। ইনজুরিতে পড়া গ্যারেথ বেলের বদলে আজ মূল একাদশে ফিরেছিলেন লুকাস ভাজকেজ। ম্যাচের শুরু থেকেই রায়োর ডিফেন্ডারদের রীতিমত তটস্থ রেখেছিলেন তিনি। ম্যাচে রিয়ালের একমাত্র গোলের উৎস ছিলেন ভাজকেজই। ১৩ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে তার বুদ্ধিদীপ্ত পাসে রায়োর গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান বেনজেমা। ডানপায়ের জোরাল শটে দলকে লিড এনে দেন তিনি। লিড নেওয়ার মিনিট চারেক পরই ব্যবধান দ্বিগুণের দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল। ১৭ মিনিটে দুর্দান্ত এক প্রতি-আক্রমণে টনি ক্রুসের পাস থেকে গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি মার্কো আসেন্সিও।
ফর্মে নেই অনেকদিন ধরেই, তার ওপর এমন এক মিসে বার্নাব্যুর দুয়োধ্বনিও শুনতে হয়েছে আসেন্সিওকে। রিয়ালের আক্রমণের ধার অবশ্য বেড়েই গিয়েছে সময়ের সাথে। কিন্তু রায়ো গোলরক্ষক দিমিত্রিভোস্কি ছিলেন দারুণ ফর্মে। তবে ভাগ্যও ছিল রায়োর সার্বিয়ান গোলরক্ষকের সাথে। ৩৬ মিনিটে ক্রুসের আগুনে শট তাকে পরাস্ত করলেও প্রতিহত হয় বারপোস্টে। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বেনজেমার নিশ্চিত গোল অসামান্য দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন দিমিত্রিভোস্কি।
প্রথমার্ধে রিয়ালের অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধেও স্বরূপে ছিলেন দিমিত্রিভোস্কি। ৫০ মিনিটে মদ্রিচের মাইনাস থেকে আসেন্সিওর শট দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দেন তিনি। রায়ো গোলরক্ষকের অতিমানবীয় পারফরম্যান্সে ব্যবধান আর বাড়ানো হয়নি রিয়ালের। রায়ো ফরোয়ার্ডরাও অবশ্য ম্যাচে ফিরতে থাকেন দ্বিতীয়ার্ধে। মাঝমাঠ থেকে গোছানো ফুটবলে সার্জিও রামোসদের বেশ কয়েকবার বিপাকে ফেলেছিলেন বেবেরা।
কিন্তু থিবো কর্তোয়াকে আর পরাস্ত করা যায়নি। ৬৭ মিনিটে বল রায়োর জালে আবার ঠিকই পাঠিয়েছিল রিয়াল। কিন্তু ক্রুসের ফ্রিকিক থেকে রামোসের হেড জালে জড়ালেও অফসাইডে বাতিল হয় গোল। সময়ের সাথে আক্রমণের ধার বাড়ানো রায়ো চেষ্টা করে গেছে শেষ পর্যন্ত। কিন্তু গত সপ্তাহে হুয়েস্কার মত এবারও রিয়ালকে বাঁচিয়ে দিলেন কর্তোয়া। বেলজিয়ান গোলরক্ষকের দক্ষতায়ই বছরের শেষ লা লিগা ম্যাচটি জয় দিয়েই উদযাপন করল রিয়াল।