কে এই ব্রাহিম দিয়াজ?
১৫.৫ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ম্যানচেস্টার সিটি ছেড়ে সাড়ে ছয় বছরের জন্য রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছেন তরুণ উইঙ্গার ব্রাহিম দিয়াজ। লা লিগায় ধুঁকতে থাকা রিয়াল যেন গোল করতেই ভুলে গেছে। ফর্মে নেই করিম বেনজেমা, গ্যারেথ বেলদের কেউই। মাত্র ১৯ বছর বয়সী তরুণ ব্রাহিমের কাঁধে তাই দায়িত্বটাও বেশ বড়ই।
ইউরোপিয়ান ফুটবল অঙ্গনে বেশ অপরিচিত হলেও রিয়াল ব্রাহিম দিয়াজকে মনে রেখেছে ঠিকই। ২০১৭-১৮ প্রাক-মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে রিয়ালের বিপক্ষে গোল করেছিলেন তিনি, জিতেছিলেন ম্যান অফ দা ম্যাচও। ঐ ম্যাচের পরই তাঁকে দলে ভেড়াতে চেয়েছিল রিয়াল, কিন্তু বাঁধ সাধে সিটি। ডানপ্রান্তে খেলে পুরোটা ম্যাচই রিয়ালের রক্ষণভাগকে ভুগিয়েছিলেন তিনি। ম্যানচেস্টার সিটি একাডেমির অন্যতম ‘হট প্রস্পেক্ট’ হলেও মূল দলে সুযোগই পাননি তিনি। ফুলহ্যামের বিপক্ষে যে ম্যাচে মূল একাদশে খেলেছিলেন, জোড়া গোল করে সে ম্যাচেই প্রমাণ করেছিলেন নিজেকে। পেপ গার্দিওলা এবং সিটির জোরাজুরির পরও মূল একাদশে নিয়মিত হওয়ার জন্যই সিটি ছেড়েছেন- এমনটাই জানিয়েছেন আজ বার্নাব্যুতে।
মূলত ডানপ্রান্তে খেলা উইঙ্গার হলেও ব্রাহিমের অন্যতম শক্তি আক্রমণের যেকোনও পজিশনে খেলার সামর্থ্য। দুই উইঙয়ের সাথে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বা মূল স্ট্রাইকার হিসেবেও খেলায় পারদর্শী তিনি। মালাগার যুবদল থেকে উঠে আসা দিয়াজের শুরুটা হয়েছিল স্ট্রাইকার হিসেবেই। পরে অবশ্য খেলেছেন আক্রমণের সবখানেই। ম্যান সিটিতে খেলা গুটিকয়েক ম্যাচে ডানপ্রান্তেই খেলেছেন তিনি। তবে দিয়াজের মূল শক্তি তাঁর ড্রিবলিং। বলের ওপর চমৎকার নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষীপ্রগতি থাকায় যেকোনও ডিফেন্ডারের জন্যই তাকে সামলানো বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অনুশীলনে তাঁর বিপক্ষে খেলে এমনটা নিজেরাই স্বীকার করেছেন ম্যানচেস্টার সিটির অধিনায়ক ভিনসেন্ট কোম্পানি এবং ডিফেন্ডার নিকোলাস অটামেন্ডি।
রিয়ালের আক্রমণের দুর্দশার কারণে মূল একাদশে সুযোগ পাচ্ছেন ভিনিসিয়াস জুনিয়রের মত তরুণরা। ভিনিসিয়াসের মত কেনার পর ধারে না পাঠিয়ে দিয়াজকে রাখা হয়েছে রিয়ালের মূল স্কোয়াডেই। এতেই প্রমাণ হয়, তাঁর ওপর ঠিক কতটা বিশ্বাস আছে রিয়ালের হর্তা-কর্তাদের। গ্যারেথ বেল ইনজুরিতে থাকায় হয়ত এই সপ্তাহে লেগানেসের বিপক্ষে কোপা ডেল রে দিয়েই অভিষেক হতে পারে দিয়াজের। আবার গতকাল লুকাস ভাজকেজ রিয়াল সোসিয়াদাদের বিপক্ষে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ায় আগামী সপ্তাহেই হয়ত লা লিগায়ও অভিষেক হতে যেতে পারে তার। রিয়ালের এমন দুর্দিনে একজন ফরোয়ার্ডকে দলে ভেড়ানো ইতিবাচক দিক হিসেবেই ধরা যেতে পারে। এখন দেখার বিষয়, মাত্র ১৯ বছর বয়সী দিয়াজ বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাবের দুর্দশা থেকে উঠতে কেমন পারফর্ম করতে পারেন।