• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    ৮৩ মিনিটের গোলে কম্বোডিয়ার মাঠে বাংলাদেশের জয়

    ৮৩ মিনিটের গোলে কম্বোডিয়ার মাঠে বাংলাদেশের জয়    

    নমপেনে ম্যাচের সাত মিনিট বাকি থাকতেও খেলা ছিল গোলশূন্য। প্রায় পুরোটা সময়জুড়ে ম্যাচ নিজেদের দখলে রাখলেও গোলটাই পাওয়া হয়নি তখনও বাংলাদেশের। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নেমেছিলেন মাহবুবুর রহমান এবং রবিউল হাসান। বাংলাদেশের গেরো খুলল তাতেই। মাহবুবুরের ক্রস থেকে রবিউলের গোলে প্রীতি ম্যাচে কম্বোডিয়া থেকে ১-০ গোলের জয় নিয়ে ফিরল ‘লাল সবুজ’রা। অক্ষুণ্ণ থাকল কম্বোডিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত থাকার রেকর্ডও (৩ জয়, ১ ড্র)।

    পাঁচ মাস পর আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ, র‍্যাঙ্কিং-এ ২০ ধাপ এগিয়ে থাকা প্রতিপক্ষ, নতুন কন্ডিশন- কোনও কিছুই যেন আজ দমাতে পারেনি জামাল ভূঁইয়াদের। শুরু থেকেই বল দখলের লড়াই, সুযোগ তৈরিতে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশই। ম্যাচের আগে জামাল বলেছিলেন, কৃত্রিম টার্ফে হয়ত সমস্যা হতে পারে তার দলের। অধিনায়কের সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। পুরো ম্যাচেই মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়েছে তপু বর্মণদের।

    তবে আক্রমণে লম্বা থ্রো এবং সেটপিসের পুরনো টোটকাই  কাজে দিয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি প্রথমার্ধে। ১২ মিনিটে কর্নার থেকে মিডফিল্ডার বিপলো আহমেদের শট কম্বোডিয়ার এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয় বারপোস্টে। তবে বাংলাদেশের আক্রমণ থেমে থাকেনি তাতে। ৪-৪-২ ফর্মেশনে দুই স্ট্রাইকার নাবিব নাওয়াজ জীবন এবং মতিন মিয়া খেলেছেন দুর্দান্ত। বদলি হওয়ার আগে পর্যন্ত কম্বোডিয়ার রক্ষণকে বেশ কয়েকবারই পরীক্ষায়ই ফেলেছেন তারা।

     

     

    ১৪ মিনিটে এই জীবন-মতিন বোঝাপড়ায়ই লিড নিতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু দুর্দান্ত ব্লকে মতিন মিয়াকে গোলবঞ্চিত করেছেন কম্বোডিয়া ডিফেন্ডার লাই ভাহেদ। বাংলাদেশের আক্রমণ সামলে প্রথমার্ধে কম্বোডিয়া সুযোগই পেয়েছে হাতেগোণা অল্প কয়েকটি। ৩৩ মিনিটে তপু, সুশান্ত ত্রিপুরার ভুল বোঝাবুঝিতে কর্নার পায় স্বাগতিকরা। কর্নার থেকে কম্বোডিয়া মিডফিল্ডার চং বুন্নাথের শট চলে যায় আশরাফুল ইসলাম রানার গোলের সামান্য উপর দিয়ে। বুন্নাথের প্রচেষ্টা বাদে প্রথমার্ধে বাকিটা গল্প কেবল বাংলাদেশ আক্রমণেরই। শেষদিকে আবারও সেই মতিন-জীবন জুটিতে সুযোগ পেয়েছিল ডে-র দল, কিন্তু এবার শট বাইরে মারেন মিডফিল্ডার মাশুক মিয়া জনি।

    প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও বজায় ছিল বাংলাদেশের আধিপত্য। ছোট ছোট পাস বা ক্রসে কাজ না হওয়ায় এবার দূরপাল্লার শটই বেছে নেন জামালরা। প্রথম প্রচেষ্টাটি ছিল বাংলাদেশ অধিনায়কেরই। ৫৫ মিনিটে তার জোরাল শট অবশ্য ফিরিয়ে দিয়েছে কম্বোডিয়া গোলরক্ষক হাল কিমুই। তবে মিনিট তিনেক পিছিয়েও যেতে পারত বাংলাদেশ। চেং মেং-এর ফ্রিকিক বাংলাদেশ ডিফেন্ডার ইয়াসিনের গায়ে লেগে চলে যায় গোলের সামান্য বাইরে দিয়ে। কৃত্রিম টার্ফে বাকি সময়ের যুদ্ধটা গড়িয়েছে মাঝমাঠে, গোলের তেমন সুযোগ পাওয়া হয়নি কোনও দলেরই।

    সেই আশায়ই মাহবুবুর এবং রবিউলদের নামিয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে। পুরো ম্যাচে জীবন-মতিন জুটি থেকে যা পায়নি বাংলাদেশ, ঠিক তা-ই করে দেখিয়েছে  বদলি জুটি। নিজেদের অর্ধ থেকে পাঠানো লং বল ধরে বামদিক দিয়ে ডিবক্সের ভেতর ঢুকে পড়েছিলেন মাহবুবুর, এরপর কম্বোডিয়ার এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে স্কয়ার করেছেন। গোলরক্ষক সেই পাস নাগাল পাওয়ার আগেই রবিউল করেন শট, সেটাই ঢুকে যায় কম্বোডিয়ার গোলে।  

    শেষদিকে কম্বোডিয়া চাপে ফেললেও আর পথ হারায়নি বাংলাদেশ। 

     

     

    বাংলাদেশ একাদশ

    বাংলাদেশ (৪-৪-২): রানা; ইয়াসিন, তপু, বিশ্বনাথ, সুশান্ত; জামাল, ফাহাদ, বিপলো, মাশুক; জীবন, মতিন