• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    স্পেন, ইতালির দুই রকম জয়ের রাত

    স্পেন, ইতালির দুই রকম জয়ের রাত    

    দু'দলের মাঝে র‍্যাঙ্কিংয়ের ব্যবধানটা ৩৯ ধাপের। স্কোয়াডের শক্তিমত্তার বিচারে স্পেন-নরওয়ের ম্যাচটা 'ডেভিড বনাম গোয়ালিথ' বললেও হয়ত কম বলা হবে। কিন্তু ভ্যালেন্সিয়ার এস্তাদিও মেস্তায়ায় আজ নরওয়ে প্রমাণ করল, কেন ফুটবলের কেতাবী পরিসংখ্যানকে ঠুনকোই বলা চলে। তবে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে লার্স লাগেরবাকের দল জয় বা ড্র ছিনিয়ে আনতে পারেনি। শেষ হাসি হেসেছে লুইস এনরিকের স্পেনই। 'এফ' গ্রুপে ইউরো বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে নরওয়েকে ২-১ গোলে হারিয়েছে স্পেন। 

    নিজেদের মাঠে নরওয়ের বিপক্ষে জয়টা যে এতটা কষ্টসাধ্য হবে, প্রথমার্ধে স্পেনের পারফরম্যান্সে তা বোঝা যায়নি একেবারেই। ১৬ মিনিটেই জর্দি আলবার মাইনাসে গোলের সামনে থেকে দলকে লিড এনে দেন ভ্যালেন্সিয়ার 'ঘরের ছেলে' রড্রিগো মরেনো। রড্রিগো বলেই হয়ত স্প্যানিশ সমর্থকদের উল্লাসটা ছিল বাধভাঙ্গা। নরওয়েকে আক্রমণের জোয়ারে ভাসালেও মাত্র এক গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করায় নিজেদের দুষতেই পারে স্পেন। গোলমুখে কম সুযোগ হাতছাড়া করেননি মোরাতারা। প্রথমার্ধে ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল পাওয়া হয়নি 'লা রোহা'দের।

    আরেকটু হলেই মিসের চড়া মাশুল প্রথমার্ধেই দিতে হতো লুইস এনরিকের দলকে। কিন্তু হেনরিকসেনের ক্রস থেকে ফাঁকা গোলের সামনে থেকেও বল জালে পাঠাতে পারেননি মোহামেদ এল-ইয়ুনুসি। প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও স্প্যানিশদের ফিনিশিং ছিল যাচ্ছেতাই। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১৫ মিনিটেই গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি রামোস এবং মোরাতা। প্রথমার্ধে বেঁচে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে ঠিকই ভুগতে হয়েছে স্পেনকে। ৬৪ মিনিটে কর্নারের সময় জনসনকে ডিবক্সে ফেলে দেন ইনিগো মার্টিনেজ, পেনাল্টির বাঁশি দেন রেফারি।

     

     

    ১২ গজ থেকে ডেভিড ডি গেয়াকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি জশুয়া কিং। ১৩ বছর আগে শেষবার মেস্তায়াতে খেলেছিল স্পেন, সেবার ড্র করেছিল বসনিয়া-হার্জগোভিনার সাথে। এক যুগেরও বেশি সময়ের ইতিহাস পুনরাবৃত্তির আশঙ্কায় তখন স্পেন। ঠিক তখনই নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মেরে বসে নরওয়ে। ৭১ মিনিটে মোরাতাকে ডিবক্সে ফেলে দেন নরওয়ে গোলরক্ষক জারস্টেইন। দুর্দান্ত এক 'পানেনকা'য় লিড পুনরোদ্ধার করেন অধিনায়ক রামোস। শেষ পর্যন্ত নরওয়েজিয়ান কোনও রূপকথা নয়, ম্যাচ শেষ হয়েছে স্প্যানিশদের স্বস্তির জয়েই।

     

     

    স্পেনের মত অবশ্য এত কাঠখড় পোড়াতে হয়নি ইতালিকে, ফিনল্যান্ডকে তাঁরা হারিয়েছে ২-০ গোলে। স্তাদিও ফ্রুলিতে 'জে' গ্রুপে বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচের ৭ মিনিটেই লিড নেয় রবার্তো মানচিনির দল। দুর্দান্ত শটে 'আজ্জুরি'দের হয়ে নিজের প্রথম গোল করেন মিডফিল্ডার মার্কো বারেল্লা। পুরো ম্যাচে কিয়েলিনি-বনুচ্চিদের তেমন পরীক্ষায়ই ফেলতে পারেনি ফিনিশরা। ম্যাচের মিনিট পনের বাকি থাকতে জয় নিশ্চিতও করে ফেলে ইতালি।

     

     

    চিরো ইমোবিলের পাস থেকে ইতালির জার্সিতে প্রথমবারের মত মূল একাদশে সুযোগ পাওয়াটা গোল দিয়ে স্মরণীয় করে রাখলেন মইস কিন। ইতালির ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা বনে গেলেন জুভেন্টাসের স্ট্রাইকার। ম্যাচের মিনিট ছয়েক বাকি থাকতে ইমোবিলের বদলে নেমেছিলেন এই মৌসুমে সিরি আ-এর সর্বোচ্চ ফাবিও কোয়াল্লারেলা। ৮৬ মিনিটে তার দুর্দান্ত ভলি ক্রসবারে প্রতিহত না হলে 'আজ্জুরি'দের জার্সিতে ফেরাটা গোল দিয়েই স্মরণীয় করে রাখতে পারতেন সাম্পদোরিয়ার ৩৬ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। কোয়াল্লারেলা পারেননি, কিন্তু বাছাইপর্বের শুরুটা ঠিকই জয় দিয়েই করেছে ইতালি।

    রাতের অন্যান্য খেলার ফলাফল-

    'ডি' গ্রুপঃ 

    জর্জিয়া ২-০ সুইজারল্যান্ড।

    আয়ারল্যান্ড ১-০ জিব্রাল্টার।

    'এফ' গ্রুপঃ 

    ফ্যারো আইল্যান্ড ১-২ মাল্টা।

    রোমানিয়া ১-২ সুইডেন।

    'জে' গ্রুপঃ

    আর্মেনিয়া ১-২ বসনিয়া-হার্জগোভিনা।

    লিখস্টেইন ০-২ গ্রিস।