• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    রোনালদোর ইনজুরিতে বিবর্ণ পর্তুগাল; ফ্রান্স, ইংল্যান্ডের বড় জয়

    রোনালদোর ইনজুরিতে বিবর্ণ পর্তুগাল; ফ্রান্স, ইংল্যান্ডের বড় জয়    

    বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে শত চেষ্টা করেও ইউক্রেনের রক্ষব্যূহ ভেদ করতে পারেননি। সার্বিয়ার বিপক্ষে আজ জয়ের জন্য অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দিকেই তাকিয়ে ছিল পর্তুগাল। কিন্তু ইনজুরিতে পড়ে উঠে গেলেন রোনালদো, জয়ও পাওয়া হল না পর্তুগালের। এস্তাদিও দে লুজে 'বি' গ্রুপে বাছাইপর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সার্বিয়ার সাথে ১-১ গোলে ড্র করেছে পর্তুগাল। ২ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ২ নম্বরে থাকল ফার্নান্দো সান্তোসের দল।

    ইনজুরিতে পড়ে উঠে যাওয়ার আগে অবশ্য বেশ ভয়ঙ্করই মনে হচ্ছিল রোনালদোকে। ৫ মিনিটেই দারুণ এক পাস বাড়িয়েছিলেন উইলিয়াম কারভালহোকে, কিন্তু গোলের সামনে থেকে বল জালে পাঠাতে পারেননি পর্তুগিজ মিডফিল্ডার। মিসের চড়া মাশুলই দিতে হয়েছে ইউরো চ্যাম্পিয়নদের। ৭ মিনিটে গাসিনোভিচকে ডিবক্সে ফেলে দেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিও। ১২ গজ থেকে দলকে লিড এনে দিতে ভুল করেননি দুসান তাদিচ। ৯ মিনিটেই অবশ্য দলকে সমতায় ফেরাতে পারতেন রোনালদো, কিন্তু তার জোরাল শট দারুণভাবে ফিরিয়ে দিয়েছেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক দিমিত্রোভিচ।

    ২৬ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন রোনালদো, এবারও তাকে ফিরিয়ে দেন দিমিত্রোভিচ। ৩১ মিনিটে রক্ষণ থেকে ভাসানো লম্বা পাস ধরতে যেয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরিতে পড়েন রোনালদো, সাথে সাথেই বদলি হওয়ার ইশারা করেন বেঞ্চের দিকে। তবে রোনালদোকে হারিয়েও দমে যায়নি পর্তুগাল। বরং ৪১ মিনিটে দূরপাল্লার আগুনে শটে দলকে সমতায় ফেরান দানিলো পেরেইরা। পর্তুগাল সমতায় ফিরলেও গোলের সুযোগের দিক দিয়ে এগিয়ে ছিল সার্বিয়াই। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় আর লিড পুনরুদ্ধার করা হয়নি তাদের।

     

     

    দ্বিতীয়ার্ধে প্যাট্রিসিওকে একা পেয়েও গোলের অন্তত তিনটি নিশ্চিত সুযোগ হাতছাড়া করেছেন তাদিচ, লায়িচরা। গোলমুখে সার্বিয়ানদের ব্যর্থতার সুযোগটাও আরেকটু হলেই কাজে লাগিয়েছিল পর্তুগাল। কিন্তু ৭১ মিনিটে আন্দ্রে সিলভার শট লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন মিলেঙ্কোভিচ। মিনিট দুয়েক পর সিলভার হেড লাইন থেকে ম্যাক্সিমোভিচ হাত দিয়ে ফেরালেও পেনাল্টির বাঁশি দেননি রেফারি। তবে হাল ছাড়েনি পর্তুগাল। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে লেফটব্যাক রাফায়েল গুরেরোর আগুনে শট চলে যায় সার্বিয়ান গোলের সামান্য বাইরে দিয়ে, আবারও নিজেদের মাঠে ড্রয়ের হতাশার দীর্ঘশ্বাস নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় পর্তুগিজদের।

    পর্তুগাল খোঁড়ালেও আবারও নিজেদের সামর্থ্যের জানান দিয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। স্তাদ দে ফ্রান্সে 'এইচ' গ্রুপে দ্বিতীয় ম্যাচে আইসল্যান্ডকে ৪-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের ফুটবলের শতবর্ষ উদযাপনটা বড় জয় দিয়েই করেছে দিদিয়ের দেশমের দল। ম্যাচের ১২ মিনিটেই কিলিয়ান এম্বাপ্পের ক্রসে হেড করে দলকে এগিয়ে নেন স্যামুয়েল উমতিতি। প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ পেলেও গোলমুখে জিরু-গ্রিযমানরা ছিলেন বেশ সাদামাটা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ঠিকই স্বরূপে ফিরেছেন তারা। আর তাতেই পুড়েছে আইসল্যান্ডের কপাল।

     

     

    ৬৮ থেকে ৮৪- এই ১৬ মিনিটের ঝড়ে আইসল্যান্ডকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে ফ্রান্স। শুরুটা করেছিলেন জিরু। ৬৮ মিনিটে বেনজামিন পাভার্ডের ক্রস থেকে গোল করেন তিনি, ডেভিড ত্রেজেগেকে হটিয়ে এখন ফ্রান্সের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা এখন জিরুই (৩৫)। মিনিট দশেক পর গ্রিযমানের থ্রু পাস থেকে ব্যবধান ৩-০ করেন এমবাপ্পে। ৮৪ মিনিটে ফ্রান্সের চতুর্থ গোলও এসেছে গ্রিযমান-এমবাপ্পে জুটি থেকেই, কিন্তু দুজনের 'রোল' গেছে বদলে। এবার এম্বাপ্পের দুর্দান্ত ব্যাকহিলে এগিয়ে আসা হালদরসনকে চিপ করে আইসল্যান্ডের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন গ্রিযমান।

    ফ্রান্সের মত জিততে কষ্ট হয়নি ইংল্যান্ডেরও। তবে এস্তাদিও পড গারিকমে 'এ' গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মন্টেনেগ্রোকে ৫-১ গোলে হারিয়েছে 'থ্রি লায়ন্স'রা। তবে ম্যাচের শুরুতে পিছিয়ে পড়েছিল ইংলিশরাই। ১৭ মিনিটে দলকে লিড এনে দেন মার্কো ভেসোভিচ। তবে পিছিয়ে পড়ে দমে যায়নি ইংল্যান্ড। উল্টো ৩০ মিনিটে রস বার্কলির ফ্রিকিকে হেড করে দলকে সমতায় ফেরান ডিফেন্ডার মাইকেল কিন। ৩৯ মিনিটে ক্যালাম হাডসন-ওদোয়ের ক্রসে পা ছুঁয়ে দলকে লিড এনে দেন বার্কলি। ৬০ মিনিটে ব্যবধান ৩-১ করেন তিনিই।

     

     

    রহিম স্টার্লিংয়ের পাস থেকে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন চেলসি মিডফিল্ডার বার্কলি। ৭১ মিনিটে আবারও স্টার্লিংয়ের পাসে ইংল্যান্ডের গোল, এবার বল জালে পাঠালেন হ্যারি কেইন। আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা স্টার্লিং আজ অ্যাসিস্ট করেছিলেন দুটি। মন্টেনেগ্রোর কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন তিনিই। ৮১ মিনিটে জর্ডান হেন্ডারসনের পাস থেকে ব্যবধান ৫-১ করেন স্টার্লিং। ১৯৮৪ সালের পর এবারই প্রথম টানা দুই ম্যাচে ৫ গোল করল ইংল্যান্ড, তখন জন্মই হয়নি ইংলিশদের বর্তমান স্কোয়াডের কারোই!

     

     

    রাতের অন্যান্য খেলায় 'এ' গ্রুপে কসোভো-বুলগেরিয়ার ম্যাচ শেষ হয়েছে ১-১ গোলের ড্রয়ে। 'বি' গ্রুপে অন্তিম মুহূর্তের গোলে লুক্সেমবার্গকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইউক্রেন। 'এইচ' গ্রুপে মলদোভাকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে তুরষ্ক। একই গ্রুপে অন্য খেলায় অ্যান্ডোরাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে আলবেনিয়া।