সৌম্য-সাব্বিরের ফর্ম ভাবাচ্ছে মিনহাজুল-আকরামদের
মাশরাফি বিন মুর্তজা যতই বলুন, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ দিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্ততি হয় না; জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান সেটা মানলেন না। দুজনেই বললেন, সৌম্য-সাব্বিরদের রান না পাওয়াটা ভাবাচ্ছে তাঁদের।
অথচ এমন নয়, দুজন নিউজিল্যান্ড সিরিজে রানই পাননি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে এসে সাব্বির পেয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। সৌম্যও হ্যামিল্টনে পেয়েছিলেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতেও রান পেয়েছিলেন সাব্বির, কিন্তু প্রিমিয়ার লিগ শুরু হতেই যেন হারিয়ে গেলেন। দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র একটি ফিফটি পেয়েছিলেন, ১০ ম্যাচ খেলে একমাত্র ফিফটিও হয়ে আছে তা। ত্রিশও পেরুতে পেরেছেন মাত্র দুইটি ম্যাচে। ১০ ম্যাচ খেলে ২০০ রানও করতে পারেননি, আজ শেখ জামালের বিপক্ষে ছিলেন না দলেই।
সাব্বিরের মতো না হলেও সৌম্যর ফর্মও কিছুটা উদ্বেগের। ক্রাইস্টচার্চের ওই ঘটনার পরেই এসে মাঠে নেমে গিয়েছিলেন, কিন্তু আট ম্যাচ একটি ফিফটিও নেই। প্রথম তিন ম্যাচে আউট হয়েছেন ত্রিশ থেকে চল্লিশের মধ্যে, তবে সর্বশেষ চার ম্যাচে বিশের বেশি রান করতে পারেননি একবারও। জাতীয় দলের অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের মধ্যে লিটন দাস তিন ম্যাচে খারাপ করেননি, একবার সেঞ্চুরির কাছাকাছিও গিয়েছিলেন। মোহাম্মদ মিঠুন পাঁচ ম্যাচ খেলেছেন, এর মধ্যে তিন বার আউট হয়েছেন ৩০ থেকে ৪০ রানের মধ্যে।
এই কজন বিশ্বকাপ দলে না থাকলে সেটা হবে বড় অঘটনই। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুলও স্বীকার করলেন, এই ব্যাপারটা একটু ভাবাচ্ছে তাঁদেরও, ‘ফর্ম অবশ্যই চিন্তার বিষয়। প্লেয়ার যখনই যেই মঞ্চেই খেলতে যাক না কেন, বিশেষ করে বিশ্বকাপে যখন খেলতে যাবে, সবসময় কিন্তু একটা আত্মবিশ্বাসের মধ্যে থাকতে হবে। ব্যাটসম্যান কিংবা বোলার, সাথে যদি রান বা উইকেট থাকে, তাহলে কিন্তু প্লেয়ার ভালো পজিশনে থাকে। আমার বিশ্বাস যারা রানে নেই, যাদের নিয়ে ভাবছি তাঁরা অবশ্যই রানে ফিরে আসবে। সামনে অনেক গুলো ম্যাচ আছে। সময় আছে বিশ্বকাপের আগে। একটা ম্যাচ ক্লিক করলেই ধারাবাহিকতা চলে আসবে।’
ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খান স্পষ্ট করেই বললেন, কেউই অটোমেটিক চয়েস নন, ‘সিনিয়র যে কজন আছে তারা আছে আর কেউই অড়োমেটিক চয়েস নয়। পারফর্ম করেই সেটা হতে হবে। নিউজিল্যান্ডে না হয় খেলোয়াড়েরা ভালো করতে পারেনি। তবে এখানে তাদের আরও বেশি স্বচ্ছন্দে, আরও বেশি ভালো খেলা উচিত। তাদের কাছ থেকে যে প্রত্যাশা ছিল সেটাও পূরণ করতে পারছে না। এটা বড় সমস্যাই, কারণ আয়ারল্যান্ড বা বিশ্বকাপে এরকম হলে জেতা কঠিন হবে। আশার কথা, লিগের আরও কিছু ম্যাচ বাকি। সেখানে হয়তো রানের মধ্যে ফিরবে তারা।’
তবে বাস্তবিতা হচ্ছে, সৌম্য-সাব্বিরদের কারও বাদ পড়া অনেক বড় চমকই হবে। সেক্ষেত্রে আসলে দুইটি জায়গার জন্য লড়াই করতে হবে মোসাদ্দেক-ইয়াসির বা ওদিকে তাসকিন-শফিউলদের। তবে সেটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হলেন না মিনহাজুল। ১৮ এপ্রিলেই সবকিছু জানা যাবে, সেটিও জানালেন, ‘কে থাকছে কে না থাকছে এটা নিয়ে এখন কিন্তু কোনো মন্তব্য করা যাবে না। তবে অনেক গুলো খেলোয়াড়ের পারফর্মেন্স দেখা হচ্ছে। যেহেতু ইংলিশ কন্ডিশন, দলের ফাস্ট বোলার একটু বেশি টিমে থাকবে। তাই অনেক গুলো ফাস্ট বোলারকে দেখা হচ্ছে। আমরা পরবর্তীতে সুপার লীগে দুই খেলা পরেই কিন্তু আমরা সিলেকশনের প্রক্রিয়াটা শেষ করব। তারপর ১৮ তারিখের দিকে আমরা টিম অ্যানাউন্স করব।’