বিশ্বকাপের আগে বদলে গেল ও. ইন্ডিজের কোচ ও নির্বাচক প্যানেল
সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হেড কোচ রিচার্ড পাইবাসকে। বিশ্বকাপের কয়েক দিন আগে এমন বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাইবাসের জায়গায় অন্তর্বতীকালীন কোচ করা হয়েছে ফ্লয়েড রেইফারকে। ২০০৯ সালে বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টের আগের দিন নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিলেন তখনকার স্কোয়াডের সদস্যরা, অধিনায়ক করা হয়েছিল তারও প্রায় এক দশক আগে শেষ টেস্ট খেলা রেইফারকে। আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট শরণাপন্ন হলো তার।
পরিবর্তন এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নির্বাচক প্যানেলেও। প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কোর্টনি ব্রাউনকে, যিনি ২০১৩ সাল থেকে নির্বাচক ও ২০১৬ সাল থেকে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ব্রাউনের জায়গায় অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রবার্ট হেইন্সকে।
পাইবাসকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তটা অবশ্য চমক হয়ে আসেনি। ইংল্যান্ডের সঙ্গে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয় তার অধীনে এলেও নিয়োগের প্রক্রিয়ার সময় থেকেই তাকে নিয়ে ঝামেলা আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট জিমি অ্যাডামস সম্ভাব্য কোচদের ১১ জনের যে সংক্ষিপ্ত তালিকা দিয়েছিলেন, তাতে পাইবাসের নাম না থাকলেও ‘স্বেচ্ছাচারী’ হিসেবে তাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন তখনকার বোর্ড প্রেসিডেন্ট ডেভ ক্যামেরন।
সম্প্রতি বোর্ডের নির্বাচনে রিকি স্কেরিটের কাছে হেরে গেছেন ক্যামেরন। নতুন বোর্ড প্রেসিডেন্টের অধীনে পাইবাসের সরে যাওয়াটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সময়ের ব্যাপারই। তিনি এখন হাইপারফরম্যান্স ডিরেক্টর পদে যোগ দেবেন।
আবারও রেইফারের দ্বারস্থ ওয়েস্ট ইন্ডিজ/ক্রিকইনফো
এর আগেও অন্তর্বর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন রেইফার, বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলকে কোচিং করানোরও অভিজ্ঞতা আছে তার, যারা জিতেছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০১৮ সালে রিজিওনাল ফিফটি ওভার টুর্নামেন্টে তার দল কমবাইন্ড ক্যাম্পাসেস অ্যান্ড কলেজেস জিতেছিল শিরোপা। এর আগে কোচিংয়ের ক্ষেত্রে স্থানীয় কাউকে না পাওয়া গেলেই বিদেশীদের কথা চিন্তা করা হবে জানিয়েছিলেন স্কেরিট। রেইফারকে তিনি বলেছেন “অসাধারণ উদীয়মান স্থানীয় কোচ”।
আর ব্রাউনসহ নির্বাচক প্যানেল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে লকহার্ট সেবাস্তিয়ান, ট্রাভিস ডাউলিন ও এলডাইন বেপটিস্টেকে। আপাতত হেইন্সকে দল নির্বাচনে সহায়তা করবেন অ্যাডামস ও রেইফার। দলীয় অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডারও বিশ্বকাপ স্কোয়াড নির্বাচনে যুক্ত থাকবেন।
কোচ ও নির্বাচক প্যানেলের এই পরিবর্তনে একাধিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটার অবসর ভেঙেও আসতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট থাকাকালীন সময়ে পাইবাসের নেওয়া সিদ্ধান্তের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটার। জাতীয় দলে খেলার ক্ষেত্রে বিবেচ্য হতে ঘরোয়া লিগে খেলা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
সব মিলিয়ে এসব পদে বদলের ব্যাপারটাকে শুধুই ব্যক্তিগত ব্যাপার বা তাড়াহুড়ো করে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত নয় বলে জানিয়েছেন স্কেরিট, “এ সপ্তাহে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হিসাব করে নেওয়া কৌশলি সিদ্ধান্ত। এটা সাজানো হয়েছে আমাদের ক্রিকেটকে আমাদের সংস্কৃতির সেই জায়গায় ফিরিয়ে নিতে। যেটা আগে ছিল- একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে।”
বিশ্বকাপের আগে ৫ মে থেকে আয়ারল্যান্ডে স্বাগতিক ও বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।