মানসিক প্রস্তুতির সঙ্গে তামিমের লক্ষ্য '৫-১০% উন্নতি'
বিশ্বকাপের আরও বাকি ৪০ দিনেরও বেশি। তবে দল ঘোষণার পর সেই উত্তাপ এখনই কিছুটা লাগতে শুরু করেছে। তামিম ইকবাল যেমন বললেন, স্কোয়াড যেমনই হোক, এই ১৫ জনকে নিয়েই দেখতে হবে বিশ্বকাপের স্বপ্ন। আর সেজন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন।
আজ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মানিগ্রামের একটা অনুষ্ঠানে তামিম বললেন, এখন সবার উচিত এই ১৫ জনের পাশেই দাঁড়ানো, ‘আমার কাছে মনে হয় যেই স্কোয়াডই দেয়া হোক না কেন, যেই প্লেয়ারকেই নেয়া হোক না কেন, সবারই কিছু না কিছু যদি কিন্তু থাকবে। কিছু পছন্দ অপছন্দ থাকবে। এটাই নিয়ম। স্কোয়াড রেডি করা খুব সহজ জিনিস না। অবশ্যই এখানে কিছু প্লেয়ার আছে যারা খুব ভালো পারফর্ম করেছে কিন্তু সুযোগ হয়নি। আবার এমন প্লেয়ার আছে যারা খুব ভালো করেছে এবং তাদের সুযোগও হয়েছে। আমার মনে হয় এখন কে থাকা উচিত ছিল বা কে থাকলে ভালো হত, এই আলোচনা না করে যেই ১৫ জনকে সিলেক্ট করা হয়েছে তাদের পুরোপুরি ব্যাক করা। দিন শেষে এটা বাংলাদেশের স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে। অমুকের জায়গায় অমুক থাকলে ভালো হত, এমন কিছু করলে হবে কি, যারা সুযোগ পেয়েছে তাঁরা মন ছোট করবে। আমরা চার বছর অপেক্ষা করেছি বিশ্বকাপের জন্য। এখন মন ছোট না করে তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করা উচিত।’
কাগজে কলমে ২২ এপ্রিল থেকে ক্যাম্প শুরু হলেও এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। তামিম অবশ্য ব্যাটিং-বোলিংয়ের চাইতে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নেওয়াটাই বেশি গুরত্বপূর্ণ মানছেন, ‘মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় হবে কি, আপনি ৫০দিন অনুশীলন করেছেন, কিন্তু আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুত না, তাহলে ওই ৫০ দিন আপনাকে খুব বেশি সাহায্য করবে না। আমরা ভাগ্যবান যে আমরা ইংল্যান্ড যাচ্ছি অনেক আগেই। একটা ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলছি আয়ারল্যান্ডের সাথে। যদিও আয়ারল্যান্ডের উইকেট ও ইংল্যান্ডের উইকেটে অনেক পার্থক্য রয়েছে।’
নিজের প্রস্তুতির প্রসঙ্গও সেই সঙ্গে চলে আসেই। উঠে সে বিশ্বকাপের নিজের ব্যক্তিগত লক্ষ্যের কথা। বাংলাদেশের হয়ে রানের অনেক রেকর্ড তাঁর বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত কোনো সেঞ্চুরি নেই। তামিম অবশ্য কোনো লক্ষ্য স্থির করে যাচ্ছেন না এবার, ‘আমি কোনো লক্ষ্য স্থির করতে পছন্দ করি না। আমার যেই প্রক্রিয়া আছে, সেটা আমি মেনে চলার চেষ্টা করি। দল আমার কাছে যেই জিনিসটা দাবি করবে, আমি যেন সেই জিনিসটা দিতে পারি। এটাই আমার এক নম্বর লক্ষ্য। আমি জানি যে বিশ্বকাপের আগে কিছুদিন সময় আছে প্লাস আয়ারল্যান্ড সিরিজ। সবার শক্তির জায়গায়, দুর্বলতার জায়গা থাকে। আমি চেষ্টা করব আমার যেই দুর্বলতা আছে, সেই জায়গায় ৫-১০% উন্নতি করতে।’
সাতজনের জন্য এবারই প্রথম বিশ্বকাপ। ২০০৭ সালে তামিমের প্রথমবারেও ভারতের সঙ্গে দারুণ এক ফিফটিতে নিজের আগমনী বার্তা জানান দিয়েছিলেন বিশ্বমঞ্চে। তামিম এবারের তরুণদের জন্য এটাকে সুযোগ হিসেবেই দেখছেন, ‘অবশ্যই বিশ্বকাপ এমন একটা মঞ্চ, সবাই জানি যে ক্রিকেট বিশ্বে এটা সবচেয়ে বড় মঞ্চ। এই একটা টুর্নামেন্ট যেখানে তারকারা জন্ম নেয়। বিশ্বকাপে ভালো করলে আপনি এক রাতেই হয়তো সুপার স্টার বনে যাবেন। এটা সব তরুণ ক্রিকেটারের জন্যই বড় সুযোগ, তাঁরা কতোটা ভালো সেটা দেখানোর জন্য। অবশ্যই আমাদের দলে এমন বেশ কিছু প্লেয়ার আছে যারা তাদের প্রতিভা দেখাবে, আর এখানে প্রতিভা দেখানোর জন্য বিশ্বকাপের চেয়ে ভালো মঞ্চ হতে পারে না।’
কিন্তু দল হিসেবে বাংলাদেশের লক্ষ্য কী থাকবে? তামিম নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে রাজি হলেন না, ‘কতদূর যাওয়া সম্ভব এটা আমি বলতে পছন্দ করি না। কারণ ১০টা দল বিশ্বকাপ খেলছে। কোনো দল অংশগ্রহন করার জন্য খেলছে না। সবাই যাচ্ছে জেতার জন্য। আমরাও যাচ্ছি জেতার জন্য। এটাই মাথায় রেখে যে আমরা জিততে চাই। যদি আমি বলি শুধু অংশগ্রহন করার জন্য যাচ্ছি তাহলে যাওয়ার কোনো মানেই হয় না। আমার কথা হল, আমরা পারি বা না পারি, আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে আমরা জিততে পারি। এই বিশ্বাসটা নিয়েই আমাদের যেতে হবে।'