• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    বিশ্বকাপের দুঃস্বপ্ন বা ইংল্যান্ডের সুখস্মৃতি, কিছুই মনে রাখতে চান না তামিম

    বিশ্বকাপের দুঃস্বপ্ন বা ইংল্যান্ডের সুখস্মৃতি, কিছুই মনে রাখতে চান না তামিম    

    প্রশ্নটা করতে না করতেই থামিয়ে দিলেন তিনি।

    'একদমই ভালো না, ভাই। বলেন।'

    তামিম ইকবাল তথ্যটা জানেন বটে। মনে করিয়ে দেওয়ায় একটু অপ্রসন্নও বোধ হয় হলেন। হওয়ারই কথা। তিন বিশ্বকাপে ২১ ম্যাচে ৪৮৩ রান, গড় ২৩, কোনো সেঞ্চুরি নেই, ফিফটি মাত্র তিনটি; নাহ তামিমের সঙ্গে ঠিক মিলছে না। গত বিশ্বকাপের পর থেকে যেখানে তাঁর ক্যারিয়ার গড় ৫৮.৩৭, এর মধ্যে সাতটি সেঞ্চুরির সঙ্গে করেছেন ১৬টি ফিফটি; সেখানে তামিমের বিশ্বকাপ পরিসংখ্যান আরও বেশি অদ্ভুতুড়ে মনে হয়!

    মিরপুরের কাঠফাটা রোদ্দুরে ঘামতে ঘামতেই তামিম তাই ঘোরগ্রস্তের মতো বলে চলেন, ‘কোন টার্গেট না, কোনো কিছু না। কারণ আমার কাছে মনে হয় যে আমি যখনই কোন কিছু নিয়ে বেশি ভাবি, কেন যেন সেটা আমি অর্জন করতে পারি না। তাই আমি এটা নিয়ে খুব বেশি ভাবছি না। বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি নাই, এই নাই, সেই নাই - আমি সবই জানি। এখন এটা তো আমি চেঞ্জ করতে পারবো না। এই বিশ্বকাপে যদি আমি এটাই টার্গেট করে যাই যে একটা সেঞ্চুরি করতে হবে বা খুব রান করতে হবে, তাহলে আমি আসলে অপ্রয়োজনীয় চাপ নিবো আমার উপরে। আমি এটা চাই না। বিশ্বকাপ ছাড়াও আমার দুশ্চিন্তা করার আরও জায়গা আছে।  সেটা হচ্ছে দল আমাকে যে ভূমিকাটা দেবে, সেটা যদি আমি ভালোভাবে পালন করি, তাহলেই সুযোগ আসবে বড় ইনিংস খেলার।’

    হতাশার পিঠে আছে আলোও। সেটা হচ্ছে খেলাটা ইংল্যান্ডে বলেই। নয় বছর আগে এই ইংল্যান্ডেই লর্ডস আর ওল্ড ট্রাফোর্ডের সেই দুর্দান্ত দুই ইনিংসে তামিম নিজের আগমনী বার্তা জানান দিয়েছেন বিশ্বমঞ্চে। দুই বছর আগে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে প্রথম ম্যাচে পেয়েছিলেন সেঞ্চুরি, পরের ম্যাচে পেতে পেতেও পাননি। দুঃস্বপ্নের সঙ্গে সেইসব সুখস্বপ্নও তামিম মনে রাখতে চান না, ‘এগুলো নিয়ে আমি একটা ফোঁটাও ভাবি না যে আমি ইংল্যান্ডে ভালো করেছি। আমার কাছে মনে হয় যে যদি আমি এগুলো ভাবি, এটা আমাকে কোনোভাবেই সাহায্য করবে না। আমি এতটুকু জানি যে,  কাজটা হবে অনেক কঠিন। আরও বেশি কঠিন হবে যদি আমি বিশ্বকাপে সফল হতে চাই। আমাকে শুন্য থেকে শুরু করতে হবে। তাই কী করেছি ইংল্যান্ডের মাটিতে, সেটা নিয়ে আমি খুব বেশি ভাবি না। এটা ইতিহাস হয়ে থাকুক, সেটাই আমি চাই। ভালো করি বা না করি, আমি কখনো পিছনের জিনিস নিয়ে চিন্তা করতে চাই না। যেটা বর্তমানে আছে, সেটা নিয়েই আমাকে ভাবতে হবে। আর একটা জিনিস আমি জানি,  আমি যদি বিশ্বকাপে সফল হতে চাই, তাহলে আমাকে প্রচন্ড কষ্ট করে এবং মাঠে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েই সেটা করতে হবে।’

     

     

    সেই সঠিক সিদ্ধান্তের মধ্যে একটা অবশ্যই প্রশ্ন, প্রিমিয়ার লিগে বিরতি না নিয়ে কি ঠিক করেছেন? তামিম এ নিয়ে একদমই নিঃসংশয়, ‘আমি অনেকটা সন্তুষ্ট। আমার মূলত যে জিনিসটা ছিল, ব্যাটিংয়ের চেয়েও বেশি হলো ফিজিক্যাল ফিটনেস।আমি যে লক্ষ্য নিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ মিস করেছিলাম,  আমার মনে হয় সেই লক্ষ্যটা পূরণ হয়েছে।’

    বিশ্বকাপে ফ্ল্যাট উইকেট থাকবে, এটা এখন একরকম ‘ওপেন সিক্রেট’। ইংল্যান্ডের ছোট মাঠে তাই এমনকি ৩৫০ তাড়া করাও হয়তো কঠিন হবে না। সেটাও মাথায় আছে তামিমের, ‘দেখেন এই একটা জিনিস যেটায় আমরা খুব একটা অভ্যস্ত নই, ৩৪০-৩৫০ তাড়া করা। সাথে এটাও আমরা জানি যে, বিশ্বকাপে হয়তো বেশিরভাগ ম্যাচেই আমাদের ২৮০-৩০০-৩২০ চেজ করতে হবে। এটার একটা সমাধান দরকার হবে আমাদের। এই কারণেই এই ট্রেনিং সেশনগুলো বা যে পাঁচটা ম্যাচ আমরা খেলবো আয়ারল্যান্ডে , সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে যে আমাদেরকে বড় রান তাড়া করতে হবে। আমার মনে হয়, ৩০০ রানে কোন প্রতিপক্ষকে আটকাতে চাইলেও বোলারদেরকে খুব ভালো বল করতে হবে। দুয়েকটা দিন ব্যতিক্রম যেতে পারে যেদিন আপনি ২৪০-২৫০ রানে অলআউট করে দিতে পারেন। আমার কাছে মনে হয়, ইংল্যান্ড ৩০০ রান এটার জন্য আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। ’