মাশরাফির জন্য বিশ্বকাপটা স্মরণীয় করে রাখতে চান মুশফিক
২০০৩ বিশ্বকাপ খেলেছেন, এরকম দুজন আছেন এবার, ক্রিস গেইল আর মাশরাফি বিন মুর্তজা। গেইল টানা পাঁচটি খেলছেন, ২০১১ বিশ্বকাপ খেললে টানা পাঁচটি হতো মাশরাফিরও। সেটা হয়নি, অধিনায়কের মতো চারটি বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকের রহিমেরও। বাকি নয় দলের চেয়ে এখানেই আলাদা হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে এই চারজন অন্তত আরেকটি বিশ্বকাপ হয়তো খেলবেন, যে সম্ভাবনা মাশরাফির নেই বললেই চলে। এবারের বিশ্বকাপে তাই মাশরাফির জন্য দারুণ কিছু করতে চান মুশফিকরা।
মুশফিকদের জন্য ব্যাপারটা বেশ আবেগঘন তো বটেই। ২০০৭ বিশ্বকাপে তামিম, সাকিবসহ তিনি মাত্র ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের হয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সেবার ভারতকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল বাংলাদেশ, তাতে তিন তরুণ তারা হয়ে ছিলেন। মুশফিক আজ হাসতে হাসতেই বললেন এক যুগ আগের সেই কথা, ‘২০০৭ তো পুরাটাই ঘোরের মধ্যে ছিলাম। বয়স কম ছিল, উত্তেজনা ছিল কখন যাব কখন খেলব। অত বড় জায়গায় খেলিনি। শচীন, লারা, পন্টিং, গিলক্রিস্ট ... যাদের খেলা টিভিতে দেখে আমরা বড় হয়েছি তাদের সঙ্গে খেলেছি। সব মিলে সেবার রোমাঞ্চটা ছিল অন্যরকম। সব দিক দিয়ে এখনকার খেলোয়াড়েরা অনেক বেশি পরিণত। রাহী ছাড়া আমরা বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে। এই অভিজ্ঞতা বেশ কাজে দেবে, আমার মনে হয় উপভোগ করাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। খেলাটা যে ক্রিকেট সেটা মাথায় রেখে নিজের শতভাগ দেওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ’ মাশরাফির তার আগেই অবশ্য একটি বিশ্বকাপ খেলা হয়ে গেছে, তবে পুরো বাংলাদেশ দলের সঙ্গে ২০০৩ বিশ্বকাপটা ভুলে যেতে চাইবেন তিনি নিজেও।
মুশফিক, তামিম, সাকিব এখন ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে। এবারের পরেও আরও একটি বিশ্বকাপে না থাকলে সেটি হবে বড় অঘটন। তবে ৩৫ বছর বয়সী মাশরাফির জন্য বিশ্বকাপি হয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের হয়ে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। সেজন্যই এবারের আসরটা মাশরাফির জন্য স্মরণীয় করে রাখতে চান মুশফিক, ‘বিশ্বকাপ সবচাইতে বড় মঞ্চ। এখানে সবাই পারফর্ম করতে চাইবে। মনে হয় এটাই একসাথে হয়তবা আমাদের শেষ বিশ্বকাপও হতে পারে। মাশরাফি ভাই যদি এরপরে আর বিশ্বকাপ খেলতে না পারে এটাই আমাদের এ্কসঙ্গে শেষ বিশ্বকাপ। তো আমরা সবাই চাইবো মাশরাফি ভাই’র জন্য হলেও যেন বিশেষ কিছু করতে পারি। যেটা কি না স্মরণীয় হতে পারে। আমার মনে হয় এটা অবশ্যই অনেক বড় সুযোগ। একই সাথে আমাদের সুযোগও অনেক বেশি আছে এই বিশ্বকাপে ভালো করার।’
কন্ডিশন বা ফর্ম হয়তো ঠিক বাংলাদেশের পক্ষে নয়, তবে কাগজে কলমে বাংলাদেশ সম্ভবত নিজেদের সেরা দল নিয়েই যাচ্ছে বিশ্বকাপে। মুশফিকও তা মেনে নিলেন, ‘অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে এটা আমদের সেরা। সবচেয়ে শক্তিশালী হয়তো ঠিক না হলেও বিশ্বসেরাদের একটা তো বটেই। সব মিলে আমার মনে হয় এটা সেরা কম্বিনেশনের টিম। গত কয়েক বছরে অনেক টুর্নামেন্টের ফাইনালে গিয়ে আমরা ফিরে এসেছি। আমার নিজের বিশ্বাস আছে, আল্লাহ আমাদের জন্য বড় কিছু রেখে দিয়েছেন। যেজন্য আমরা এত কিছু উৎসর্গ করেছি। সব ম্যাচ না হলেও সেটা সম্ভব করতে হলে আমাদের অনেক ম্যাচ জিততে হবে।’