পথশিশু ক্রিকেট বিশ্বকাপে থাকছে বাংলাদেশও
মাশরাফি-সাকিবদের মতো খেলার চেষ্টা হয়ত তারাও করে। সারাদিনের জীবিকা নির্বাহের মাঝে বাংলাদেশের পথশিশুদের জীবনে একটু আনন্দ এনে দেয় এই ক্রিকেটই। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল তো বিশ্বকাপ খেলতে ইংল্যান্ডে যাচ্ছে। তাদের পাশাপাশি আরেকটি ‘বিশ্বকাপ’ খেলতে ইংল্যান্ডে যাচ্ছে বাংলাদেশের পথশিশুদের একটি দলও! আগামী ৪ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রথম পথশিশু বিশ্বকাপে ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ডের মতো দলের সাথে অংশ নেবে বাংলাদেশও।
পথশিশুদের নিয়ে আবার বিশ্বকাপ আয়োজন করা যায় নাকি? প্রথমে এমন কিছু শুনলে অবাকও হতে পারেন অনেকে। সেই অবাক করার মত কাজটা করে দেখানোর সাহসটা দেখিয়েছে ‘স্ট্রিট চাইল্ড ইউনাইটেড’ নামের একটি সংস্থা। পথশিশুদের নিয়ে কাজ করা এই সংস্থাটি বরাবরই অবহেলিত শিশুদের নানা অধিকার নিয়ে সোচ্চার।
এবারের বিশ্বকাপের আসর বসছে ইংল্যান্ডে। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে পথশিশুদের জন্য বিশ্বব্যাপী সচেতনতা কীভাবে বাড়ানো যায়, সেটা নিয়েই ভাবছিল ‘স্ট্রিট চাইল্ড ইউনাইটেড’। এরপর সিদ্ধান্ত হয়, আসন্ন বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আয়োজন করা হবে পথশিশুদের বিশেষ বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ, ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, নেপাল, তানজানিয়া, জ্যামাইকা, কঙ্গো ও মরিশাসকে নিয়েই অনুষ্ঠিত হবে এই বিশ্বকাপ।
নয় দেশ থেকে বাছাই করে নিয়ে আসা হবে পথশিশুদের। তাদের মাঝে প্রাধান্য পেয়েছে মাদকাসক্ত জীবন থেকে ফিরে আসা শিশুরা। এরই মাঝে বাছাইপর্ব শেষ হয়েছে, তাদের দেওয়া হচ্ছে বিশেষ ট্রেনিংও। বাংলাদেশ থেকে যাবে আট জনের দল। তাদের মাঝে চারজন ছেলে, চারজন মেয়ে।
মরিশাস থেকে দল নিয়ে আসছে স্যাফায়ার নামের একটি বেসরকারি সংস্থা, তাঁরা ২০০২ সাল থেকে সেখানে কাজ করছে। তাদের প্রধান এডলি মুরের বলছেন, অভাবের তাড়নাতেই ভুল পথে যাচ্ছে পথশিশুরা, ‘এখানে মাদকের শিকার হওয়া শিশুর সংখ্যাই বেশি। কারণ অভাবের জন্য তাদের টিকে থাকাটাই কঠিন হয়ে যায়। তাঁরা শিক্ষার সুযোগও পায় না। আমরা তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাই করছি।’
মরিশাসের ১৫ বছর বয়সী পথশিশু সেরেনার কথাই ধরুন। স্যাফায়ারের অধীনে থাকা সেরেনা দুই সপ্তাহ ধরে ক্রিকেট খেলা শিখছে। বিশ্বকাপে অনেক নতুন বন্ধু পাবে সে, এতেই উচ্ছ্বসিত সেরেনা।আগামী পরশু ক্যামব্রিজে শুরু হবে এই বিশেষ বিশ্বকাপ। ৭ মে লর্ডসে হবে ফাইনাল। বাংলাদেশের শিশুরা কি শিরোপা জিতে ফিরতে পারবে?