• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    হেলসকে আর 'বিশ্বাস করতে পারছেন না' মরগানরা

    হেলসকে আর 'বিশ্বাস করতে পারছেন না' মরগানরা    

    ব্রিস্টলের ঘটনা নিয়ে অ্যালেক্স হেলস বলেছিলেন, একটা (নেতিবাচক) ভাবমূর্তি গড়ে উঠতে সময় লাগে দশ সেকেন্ড, তবে সেটা মুছে ফেলতে লাগে দশ বছর। ব্রিস্টলের নাইটক্লাবের সামনে মারামারির সেই ঘটনা বেশ পেছনে ফেলে এসেছেন বলেই মনে হচ্ছিল তখন। তবে হেলসের এবড়োথেবড়ো পথে হাঁটা শেষ হয়নি এখনও, নতুন করে ড্রাগ সংক্রান্ত ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ার পর তার পথটা দীর্ঘ হয়েছে আরও।

    ইংল্যান্ডের সতীর্থরা তাকে আর বিশ্বাস করতে পারছেন না বলেই তিনি স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন বলে জানিয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ওইন মরগান। ব্রিস্টলের ঘটনার পর থেকে দলের মাঝে যে সংস্কৃতি গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন তারা, হেলস সেসবের প্রতি সম্মান রাখতে পারেননি বলেই দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা চাননি তিনি স্কোয়াডে থাকুন। 

    ‘রিক্রিয়েশনাল’ বা ‘আনন্দবর্ধক’ ড্রাগ নেওয়ার কারণে ২১ দিনের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন হেলস। তবে ইসিবির রীতি অনুযায়ী, এটি রাখা হয়েছিল গোপন। এমনকি মরগান বা দলের অন্য কেউও জানতেন না, আদতে হেলস কেন নিজেকে বিরত রেখেছিলেন নটিংহ্যামশায়ারের হয়ে খেলা থেকে। ‘ব্যক্তিগত কারণে’ ছুটি নিয়েছেন, এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর হেলসকে টেক্সটও করেছিলেন মরগান, তবে হেলস তাকে সে সময় তার নিষেধাজ্ঞার কথা জানাননি ইংল্যান্ড অধিনায়ককে। 

     

     

    সংবাদমাধ্যমে তার নিষেধাজ্ঞার খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই মরগানরা জানতে পেরেছেন সেটা। কার্ডিফে প্রাক-মৌসুম পুনর্মিলনীর পর সোমবার ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপসহ ঘোষিত আয়ারল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে হেলসকে। মরগান বলছেন, সিনিয়র ক্রিকেটার ও কোচের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তার, “আমি কোচ (ট্রেভর বেইলিস) এর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। সব সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, কিভাবে সামনে যাওয়া যায়, (হেলসের ব্যাপারটি) দল ও দলের সংস্ক্রৃতির ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে সেটা নিয়ে।” 



    এই সিনিয়র ক্রিকেটারদের মধ্যে মরগান ছাড়াও ছিলেন জো রুট, মইন আলি, বেন স্টোকস, জস বাটলার ও ক্রিস ওকস। তারা সবাই একমত হয়েছেন, হেলসকে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়াটাই দলের জন্য সবচেয়ে ভাল, “আমরা গত ১৮ মাস ধরে এই দলীয় সংস্কৃতি গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। আমরা এমন সব মূল্যবোধ গড়ে তুলতে চাইছি, যেসব মেনে চলতে পারি।

    “তবে অ্যালেক্স হেলসের এসব ব্যাপারে নিশ্চিতভাবেই শ্রদ্ধার ঘাটতি আছে। দল ও অ্যালেক্সের মধ্যে বিশ্বাস পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। মিটিংয়ে সবাই একমত হয়েছে, তার চলে যাওয়াটাই ভাল।

    “আমরা অনেক দিন ধরে একসঙ্গে আছি। অনেক কিছুর ভেতর দিয়ে গেছি। আর একটা দল হিসেবে, সংস্কৃতিটা গুরুত্বপূর্ণ। আর ওই মিটিংয়ে যেটা প্রতিফলিত হয়েছে, বিশ্বকাপ ও অ্যাশেজের বছরে এই ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 

    “বিশ্বকাপ জিততে আমাদের ১৫ জন দরকার। যেভাবেই অ্যালেক্স এটার সাথে মানিয়ে নিত না কেন, বাকি ১৪ জন অস্বস্তিতে থাকতো। ফলে যে ঘাটতিটা হতো, তার পারফরম্যান্স সেটা মেটাতে পারতো না।” 

    অবশ্য হেলসকে দলে না রাখার সিদ্ধান্তটা ইসিবিরই ছিল বলে জানিয়েছেন মরগান, তারা শুধু দলের চাওয়াটা জানিয়েছেন। এর আগে ইসিবির ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট অ্যাশলি জাইলস হেলসকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে বলেছিলেন, ‘দলের স্বার্থেই’ এমন সিদ্ধান্ত তাদের, যাতে “মাঠে তারা সফল হতে পারে, কোনও কিছু তাদের ফোকাস নড়িয়ে দিতে না পারে”। 

    এদিকে হেলসের ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞার পরও বিশ্বকাপে তার জায়গা নিয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছিল ইসিবি। আর আপাতত নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়াতে নটিংহ্যামশায়ারের হয়ে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন হেলস। এ ব্যাপারে তাকে সহায়তা করা হবে বলেই জানিয়েছেন মরগান, “আমি তার সঙ্গে এরপর থেকেই কথা বলেছি। তাকে সমর্থন দেওয়া হবে। সে কিভাব সেসব কাজে লাগাবে, সেটাই দেখার বিষয়।” 

    তা যেটাই করুন না কেন, হেলসের সামনে পথটা হয়তো তার সেই 'দশ বছরের' মতোই দীর্ঘ।