পাকিস্তানকে হারিয়ে বার্তা দিল আফগানিস্তান
পাকিস্তান ৪৭.৫ ওভারে ২৬২ (বাবর ১১২, মালিক ৪৪; নবী ৩/৪৬, রশিদ ২/২৭, দওলত ২/৩৭)
আফগানিস্তান ৪৯.৪ ওভারে ২৬৩/৭ (শহিদি ৭৪*, জাজাই ৪৯; রিয়াজ ৩/৪৬, ইমাদ ২/২৯)
ফলঃ আফগানিস্তান ৩ উইকেটে জয়ী
প্রস্তুতি ম্যাচ বলে খুব বেশি আবেগে ভেসে যাওয়ার সুযোগ নেই। ১৫ জনের স্কোয়াডের সবাই কমবেশি বোলিং বা ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছেন। তবে আফগানিস্তান জানান দিয়েছে, তারা দল হিসেবে কতটা উন্নতি করেছে। ব্রিস্টলে পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ২৬৩ রানের লক্ষ্যটা পেরিয়ে গেছে ২ বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখেই।
টসে জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পাকিস্তান। ইমাম উল হক বাউন্সারের ধাক্কা সামলে আবার ফিরেছেন মাঠে, তবে ফখর জামানের সঙ্গে জুটিটা আজ জমেনি বেশি। ইমাম হক অবশ্য দারুণ খেলছিলেন, তবে নবম ওভারে হামিমদ হাসানের বলে বোল্ড হয়ে গেছেন ৩৫ বলে ৩২ রান করে। ফখর জামানও থাকেননি বেশিক্ষণ, শুরুতে বল পাওয়া অফ স্পিনার মোহাম্মদ নবীর বলে বোল্ড হয়ে গেছেন ১৯ রান করে। সেই ওভারেই আবার আঘাত নবীর, এবারও শিকার আরেক বাঁহাতি। হারিস সোহেল বোল্ড হয়ে গেছেন ১ রান করেই।
রশিদ খান এসে শুরু থেকেই চেপে ধরেছিলেন পাকিস্তানকে। প্রথম উইকেটের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি, মোহাম্মদ হাফিজকে আউট করেছেন ১২ রানে। ১০০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছে তখন পাকিস্তান। তবে বাবর আজম এরপর দেখালেন, এই বিশ্বকাপে কেন তাঁকে পাকিস্তানের ট্রাম্পকার্ড মনে করা হচ্ছে। শোয়েব মালিকের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে জুটি গড়লেন ১০৩ রানের। মাইলককে ৪৪ রানে ফিরিয়ে জুটিটা ভেঙেছেন নবীই।
তার আগে ২৫তম ওভারে বাবর পেয়ে গেছেন ফিফটি, সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৪৩তম ওভার পর্যন্ত। ১০৮ বলে ১১২ রান করে শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন ৪৬তম ওভারে গিয়ে। তবে পাকিস্তানের দুশ্চিন্তা থাকতে পারে লোয়ার অর্ডার নিয়ে। শেষ দিকে এসে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট তুলে নিয়েছেন আফগান স্পিনাররা, ৫০ ওভারও খেলতে পারেনি পাকিস্তান। ৪৭.৫ ওভারেই অলআউট হয়ে গেছে ২৬২ রানে। নবী ৩ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার, তব্র ৯ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে রশিদ আরও একবার জানান দিয়েছেন তাঁর সামর্থ্য। আর পেসারদের মধ্যে দওলত জাদরান পেয়েছেন দুটি উইকেট।
আফগানিস্তানের যেরকম শুরু দরকার, দুই বিস্ফোরক ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ ও হজরউল্লাহ যাজাই ঠিক সেরকম একটা শুরু এনে দিয়েছিলেন। ৭ ওভারের মধ্যেই তুলে ফেলেছিলেন ৫০ রান, কিন্তু এরপর হাঁটুর সমস্যার জন্য মাঠ ছেড়ে যান শাহজাদ। আফগানিস্তান আশা করবে, গুরুতর কিছু হয়নি তাঁর। তবে জাজাই ছিলেন খুনে মেজাজেই, ওয়াহাব রিয়াজের এক ওভার থেকে নিয়েছেন ১৮ রান। শাহীন শাহ আফ্রিদির এক ওভারে মেরেছেন পাঁচটি চার। একটুর জন্য ফিফটি পাওয়া হয়নি, ২৮ বলে ৪৯ রান করে তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছেন শাদাব খান।
রহজতম শাহ এরপর ৩২ রান করে ফিরে গেছেন রিয়াজের বলে। তবে আফগানরা লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ভালোমতোই, হাশমতউল্লাহ শহিদি ও সামিউল্লাহ শেনোয়ারি গড়েছিলেন ৪৯ রানের জুটি। ২২ রানে শেনোয়ারিকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে আশা দেখান ইমাদ ওয়াসিম। এরপর আসগরকেও তুলে নেন ইমাদ।
তবে শহিদি ও নবী মিলে আফগানিস্তানকে প্রায় জয়ের দুয়ারে নিয়ে গেছেন। শেষ পর্যন্ত নবীকে ৩৪ রানে ফিরিয়ে দুজনের ৬৬ রানের জুটিটা ভেঙেছেন মোহাম্মদ হাসনাইন। তখন জয়ের জন্য আফগানদের দরকার ২২ বলে ১৯ রান। নাইব ও জাদরানকে ফিরিয়ে এরপর ম্যাচে উত্তেজনা ফিরিয়ে এনেছিলেন রিয়াজ। শেষ ওভারে যখন আফগানদের ৪ রান দরকার, বল করেছিলেন তিনিই। কিন্তু রশিদ ও শহিদি দুই বল বাকি থাকতেই এনে দিয়েছেন জয়।