দুইবার প্রস্তাব পেয়েও শ্রীলংকার সাথে কাজ করতে রাজি হননি জয়াবর্ধনে
শ্রীলংকার ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান তিনি। অবসরের পর মাহেলা জয়াবর্ধনে কাজ করেছেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ও খুলনা টাইটানসের কোচ হিসেবেও। বিশ্বকাপের মত গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টের আগে তাই তাঁর সাহায্য চেয়েছিল শ্রীলংকা ক্রিকেট বোর্ড। তবে গত কয়েক বছর ধরে চলতে থাকা লংকান বোর্ডের স্বেচ্ছাচারিতায় রীতিমত বিরক্ত জয়াবর্ধনে। এজন্যই দুইবার প্রস্তাব পেয়েও জাতীয় দলের সাথে কাজ করতে রাজি হননি তিনি।
বর্তমান দলের অনেক ক্রিকেটারের মত জয়াবর্ধনের সাথেও বোর্ডের সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছে না। গত বছর শ্রীলংকার ঘরোয়া ক্রিকেটকে ঢেলে সাজাতে সাবেক বোর্ড প্রেসিডেন্টকে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা ও অরবিন্দা ডি সিলভা। তাদের সেই প্রস্তাবকে পাত্তাই দেয়নি বোর্ড। জয়াবর্ধনের রাগটা তখন থেকেই।
আইপিএলের এবারের আসরের পর জয়াবর্ধনেকে বিশ্বকাপে দলের সাথে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিল লংকান বোর্ড। দুইবার প্রস্তাব দিলেও তাদের না বলে দিয়েছেন জয়াবর্ধনে, ‘আমাকে বেশ কয়েকবার অনেক কমিটিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু আমি তাতে সাড়া দেইনি। আমার দায়িত্বটা কী হবে সেটাই তো পরিষ্কার করে বলা হচ্ছিল না। আর এমন পরিস্থিতিতে দলের কৌশলগত বিষয়ের সাথে জড়িত হওয়ার কোন মানে নেই। চূড়ান্ত দল নির্বাচন হয়ে গেছে। আমার আর কী কাজ? দলের ম্যানেজমেন্টে কিছুটা ভূমিকা রাখতে পেরেই খুশি। বোর্ডের আর কোনকিছুর সাথে জড়াতে চাই না। তাদের সাথে কাজ করার আমার রুচি নেই। আমার জন্য এই জায়গাটাও ঠিক না।’
জয়াবর্ধনেসহ তিন সাবেক ক্রিকেটারের তৈরি করা ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামোর প্রস্তাবটা না গ্রহণ করে ভুল করেছে বোর্ড, মানছেন জয়াবর্ধনে, ‘আমরা আট মাস ধরে ওই প্রস্তাবটা তৈরি করেছিলাম। আমাদের প্রস্তাবকে তাঁরা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছিল। আমরা এটা করেছিলাম কারণ আমরা চাইনা দেশের ক্রিকেটাররা অস্ট্রেলিয়া কিংবা ইংল্যান্ডের লিগে চলে যাক। ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের দরকার। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের অনেক দলেরই গড় বয়স ২৫, এটা খুবই হতাশাজনক। আমাদের সময় দলে সিনিয়র ক্রিকেটাররা থাকছেন। তাদের ছাড়া আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামো ভেঙ্গে পড়বে। তখন স্টেডিয়াম বানিয়েও লাভ হবে না।’
বোর্ড ও কোচের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে অধিনায়কত্ব হারিয়েছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও দিনেশ চান্ডিমাল। জয়াবর্ধনের অবসরের পর গত চার বছরে ওয়ানডেতে অধিনায়ক হয়ছেন পাঁচজন। ম্যাথিউস-চান্ডিমাল দুজনেই অধিনায়ক হিসেবে দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছিলেন বলেই তাদের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, দাবি জয়াবর্ধনের, ‘আমি আর সাঙ্গা ম্যাথিউসকে বলেছিলাম বোর্ডের ক্রিকেট রাজনীতির সাথে না জড়িয়ে পড়তে। তাকে আরও বেশি শক্ত হতে হতো। সে সেটা পারেনি, অন্যরা তাঁর হয়ে সিদ্ধান্ত নিতো। সে হাল না ছেড়ে দিলে আজকের অবস্থাটা দাঁড়াতো না। এটা তাকে আগেও বলেছি, এখনো বলি। শ্রীলংকার অধিনায়ক হতে হলে অনেক ব্যাপার সামলাতে হয়, সামনে থেকে নেতৃত্বও দিতে হয়। সে অসাধারণ ক্রিকেটার হলেও সেটা পারেনি। আমার মনে হয় চান্ডিমালও একই ঘটনার শিকার। সেও ম্যাথিউসের মত অন্যদের হাতে দলের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়েছে।’