'প্রতিপক্ষকে সম্মান করলেও কাউকে ভয় পায় না বাংলাদেশ'
বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজটাই ছিল বড় পরীক্ষা। ফাইনালে দুর্দান্ত পারফর্ম করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে শিরোপা জিতে সেই পরীক্ষায় ভালোভাবেই উতরে গেছে বাংলাদেশ। দলের এমন পারফরম্যান্স আশার আলো দেখাচ্ছে কোচ স্টিভ রোডসকে। গতকাল কার্ডিফে রোডস সংবাদ সম্মেলনে বলছেন, ফেভারিটের তকমা না পেলেও ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে আত্মবিশ্বাসী হয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। তাঁর মতে, বাংলাদেশ প্রতিপক্ষকে সম্মান করলেও কাউকে ভয় পায় না।
বিশ্লেষকদের ‘ফেভারিটের’ তালিকায় নেই বাংলাদেশ। এটা নিয়ে অবশ্য খুব একটা ভাবছেন না রোডস, ‘আমাদের দলটা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। তবে সবার মাথায় এটাও আছে যে অনেক শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে হবে। আমরা তাদের সম্মান করি, কিন্তু কাউকে ভয় পাই না! আসলে ‘আন্ডারডগ’ তকমা থাকটা একদিকে ভালো। কারণ আমরা যদি কয়েকটা বড় দলকে হারিয়ে দেই, তাহলে সবাই আমাদের নিয়ে কথা বলবে। আমরা কীভাবে এটা করলাম, সবার মনে এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাবে। আমাদের ম্যাচের সময় চাপটা সামলানোটা শিখতে হবে।’
রোডসের বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়ার এক বছরও পূর্ণ হয়নি। এই অল্প সময়ের মাঝেই দলকে যে বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত করেছেন, সেটার কৃতিত্ব ক্রিকেটারদেরই দিলেন তিনি, ‘আসলে আমি আসার আগেই দল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সঠিক পথে এগোচ্ছিল। আমি সেই যাত্রায় বাধা হতে চাইনি, তাদের জন্য নিজের কোচিং স্টাইলকেও মানিয়ে নিয়েছি। এটা শুরুতে একটু কঠিন ছিল, পরে সবাইকে নিজেদের দায়িত্বটা ভাগ করে দিয়েছি। যখন দরকার হয়েছে তখন তাদের সাহায্য করেছি। তবে প্রধান লক্ষ্যটা ছিল দলের মূল ছন্দে বাধা না দেওয়া। এজন্যই দলের অগ্রগতি এত ভালো হয়েছে।’
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপই মাশরাফির শেষ বিশ্বকাপ। দলকে তিনি নেতৃত্ব দেন ‘যোদ্ধার’ মতো, মানছেন রোডস, ‘মাশরাফি সেনাপতির মতো নেতৃত্ব দেয় দলকে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয় বলেই তাকে সবাই এত সম্মান করে। সে নিজে যা পারবে না সেটা অন্য কাউকে করতে বলে না। নিজে আগে কাজটা করে এরপর অন্যদের বলে, এটাই সত্যিকারের অধিনায়কের কাজ। আমি সবসময়ই চেষ্টা করি তাকে সাহায্য করার। দুজনের সম্পর্কটা দারুণ চলছে।’
অন্য দুই ফরম্যাটে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির চেয়ে সাকিব একটু আলাদা, জানালেন রোডস, ‘তাঁরা দুজন ভিন্ন ধরনের অধিনায়ক। সাকিব খুবই কৌশলী, সে প্রতিপক্ষের ব্যাপারে অনেক কিছু জানে, কখন কী করতে হবে সেটারও ভালো ধারণা আছে। মাশরাফি ও সাকিবের সাথে ভিন্নভাবে কাজ করতে হলেও দুজনের সাথেই সম্পর্কটা দারুণ। দুজনের নেতৃত্বে দল সঠিক পথেই এগোচ্ছে।’
কিছুদিন আগেই ওয়ানডেতে অলরাউন্ডারদের তালিকার শীর্ষস্থান ফিরে পেয়েছেন সাকিব। সাকিব না থাকলে কিছুটা সমস্যার মুখে পড়ে দল, মানছেন রোডস, ‘সাকিব বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। বল হাতে তাঁর পরেই আছে মোস্তাফিজ। তাই সাকিবই আমাদের সেরা খেলোয়াড়। তার মানে এই না যে দলে আর ভালো ক্রিকেটার নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফাইনালে সাকিবের বদলি হিসেবে যে মোসাদ্দেক এসেছিল, সেই ফিফটি করে ম্যাচ জিতিয়েছে, বলও করেছে। সাকিবের অনুপস্থিতিতেও আমরা ভালো করেছি। তবে সাকিব যখন না খেলে, সেটা একটু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। সেরা ক্রিকেটারকে মিসই করিনা শুধু, দলের ভারসাম্যটাও নষ্ট হয়। সে ব্যাটসম্যান ও বোলার হিসেবে দুই ক্ষেত্রেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ দলের জন্য।’