এক বছর আগে থেকে তাহিরকে দিয়ে বোলিং ওপেন করানোর পরিকল্পনা করেছিল দ. আফ্রিকা
ইমরান তাহিরকে দিয়ে বোলিং ওপেন করানোর ব্যাপারটা এক বছর আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি। প্রথম ওভারে জনি বেইরস্টোর উইকেট পাওয়াটাও তাই ‘বিস্ময়ের নয়, বরং পরিকল্পনা’ বলে মত তার।
ওভালে মেঘাচ্ছন্ন কন্ডিশনে টসে জিতে বোলিং নিতে চেয়েছিলেন দুই অধিনায়কই। সেটা নিতে পারলেন ফাফ ডু প্লেসি। তবে বিস্ময় হয়ে এলো ইমরান তাহিরের নতুন বল হাতে নেওয়া। বিস্মিত হয়েছিল ইংলিশ ক্যাম্পও, নতুন বলের শুরুতেই কাগিসো রাবাদাকে না দেখে। এরপরেরটা ভেবে দেখুন না, দ্বিতীয় বলেই সফল তাহির। অফস্টাম্পের বাইরে পড়া বলটা পিচে হোল্ড করলো, টার্ন করলো সামান্য। টোপ গেলা মাছের মতো করে সেদিকে এগিয়ে গেল বেইরস্টোর ব্যাট, মিস করলেন না কুইন্টন ডি কক। এরপর ছুটতে শুরু করলেন তাহির, তার সেই বিখ্যাত দৌড়, যে দৌড় দেখলেই মনে হয়, তিনি থামবেন না আর এ জীবনে!
তাহিরের উইকেটটাতে বিস্ময়ের কিছু নেই বলেই জানাচ্ছেন ডু প্লেসি, “এটা নিয়ে আমরা আসলে এক বছর আগে থেকেই ভেবে রেখেছি। এটা এমন একটা অনুভূতি যে, এটা আলাদা কিছু (হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে)। অবশ্য টসে জিতে বোলিং নিয়ে ব্যাপারটা নিয়ে একটু চাপ ছিল। ওভালে সাধারণত আপনি দুইদিক থেকেই পেসারদের দিয়ে শুরু করাতে চাইবেন। তবে আমি পরিকল্পনায় আটকে থেকেছিলাম, উইকেট নেওয়ার জন্য সেটাই ছিল সেরা পরিকল্পনা।”
ম্যাচশেষে মিলিয়ে গেছে তাহিরের এই উল্লাস/আইসিসি
“সবার কাছেই ব্যাপারটা এমন ছিল। আমার মন বলছিল ইমরান উইকেট পাবে। সে নতুন বলে গত দুই সপ্তাহ ধরে অনুশীলন করেছে। যেটা সে এর আগে খুব বেশি করেনি। তবে সে প্রথম ওভারে আজ কী করতে হবে, সেটা জানতো।”
তাহিরের শুরুর উইকেট বেশ কাঁপিয়েই দিয়েছিল ইংল্যান্ডকে, অথবা ভাবা হয়েছিল এমনই। তিন ওভার পর প্রথম স্পেল শেষ করেন তাহির, এরপর ফিরে এসে নেন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট- অইন মরগানের। মাঝে পেসাররা তাদের কাজটা একটু দেরিতে হলেও করেছেন। ডু প্লেসির মতে, তার বোলাররা তাদের কাজটা করেছেন ঠিকঠাকই, “ইংল্যান্ডের মতো দলকে এমন স্কোরে আটকে রাখাটাকে আমি বোলিং বিভাগের দারুণ সাফল্য বলে বিবেচনা করবো। হয়তো ১০টির মতো কম রান হলে আরেকটু ভাল হতো, তবে সেটা চাওয়াটা একটু বেশি হয়ে যায় বোলারদের জন্য।”
রানতাড়ায় শুরুটা দক্ষিণ আফ্রিকার হয়েছে অপ্রত্যাশিত আঘাত দিয়ে, জফরা আর্চারের বাউন্সারে আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন হাশিম আমলা। পরে তিনি আবার নামলেও ততক্ষণে খেই হারিয়ে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, “বড় স্কোর তাড়া করতে শুরুটা সবসময়ই ভাল লাগে, এটা গুরুত্বপূর্ণ। হাশিমের বেরিয়ে আসাটা সহায়তা করেনি। এরপর এইডেন (মার্করাম) আউট হলো, আমি আউট হলাম। শুরুতেই তিনজন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেললে এমন স্কোর তাড়া করা আসলে আরও কঠিন হয়ে যায়। মনে হয় অনেক দূরের পথ।”
মার্করাম ও ডু প্লেসি, দুজনই আউট হয়েছেন আর্চারের বলে। তাকে খেলার অভিজ্ঞতাটা বলছেন তিনি, “তার বিপক্ষে অনেকেই খেলেনি। তার অ্যাকশনটা আলাদা, সেটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগবে। এ কারণেই সে এক্স-ফ্যাক্টর বোলার। তবে দ্রুত ৩ উইকেট যাওয়ার পর আসলেই ব্যাপারটা কঠিন, এমনকি কুইনি (ডি কক) ও রাসির (ফন ডার ডুসেন) দারুণ ব্যাটিংয়ের পরও।”
এ ম্যাচের আগেই ইংল্যান্ডকে ফেভারিট বলে ডু প্লেসি বলেছিলেন, তাদের আশা ‘আপসেট’ ঘটানো। সেটা হয়নি। তবে টুর্নামেন্ট লম্বা, আপাতত সেটাকে লিগ ধরে নিয়ে এগুতে চান তিনি, এদিনের হতাশা থেকে বেরিয়ে আসতেও চান দ্রুত।
সেটা থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ২ মে, বাংলাদেশের বিপক্ষে ওভালেই সেদিন ম্যাচ তাদের।