• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    হেনরি-ফার্গুসন বা গাপটিল-মানরো, কেউই করুণা করলেন না শ্রীলঙ্কাকে

    হেনরি-ফার্গুসন বা গাপটিল-মানরো, কেউই করুণা করলেন না শ্রীলঙ্কাকে    

    শ্রীলঙ্কা ১৩৬ অল-আউট, ২৯.২ ওভার 
    নিউজিল্যান্ড ১৩৭/০, ১৬.১ ওভার 
    নিউজিল্যান্ড ১০ উইকেটে জয়ী 


    কীভাবে কী ঘটলো, পড়ুন লাইভ রিপোর্টে


    ম্যাট হেনরির সিম-সুইংয়ের ভাষা যেন জানা নেই শ্রীলঙ্কার। এরপর লকি ফার্গুসনের পেস, নেই সেটা সামলানোর সামর্থ্য। প্রথম ইনিংসের পরই ম্যাচের অনেকখানি হেরে বসেছে শ্রীলঙ্কা, মার্টিন গাপটিল-কলিন মানরোর ঝড়ো ব্যাটিংয়ের তাই কোনও জবাব ছিল না তাদের কাছে। কার্ডিফে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়টা বেশ সরলরৈখিকভাবেই তাই পেল নিউজিল্যান্ড। শ্রীলঙ্কার ইনিংসে একমাত্র আলো দিমুথ করুনারত্নের ব্যাটিং, সেটি ছাড়া ম্যাচে অবশ্য কিছুই ছিল না তাদের জন্য। ১৩৭ রান তাড়ায় নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনারের লেগেছে মাত্র ১৬.১ ওভার, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয়বার ১০ উইকেটের জয় পেয়েছে তারা। 

     

     

    কার্ডিফের সবুজ উইকেটই ইঙ্গিত দিয়েছিল, শ্রীলঙ্কান টপ অর্ডারের জন্য বেশ একটা চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। তবে সে চ্যালেঞ্জ সঞ্চারিত হলো পুরো ব্যাটিং লাইন-আপেই। দ্বিতীয় বলে লাহিরু থিরিমান্নেকে এলবিডব্লিউ করে শুরুটা করেছিলেন হেনরি। ওভার দ্য উইকেট থেকে করা বলটা লাইন ধরে রেখেছিল, থিরিমান্নে মিস করে গেছেন পুরোপুরি। রিভিউ নিয়ে সে উইকেটটা পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। সেই যে শ্রীলঙ্কার বাঁধ ভাঙলো, সেটা আটকালো না কিছুতেই।


    উপাত্তচিত্র/জাহিদুর রহমান


    কুসাল পেরেরা প্রতি-আক্রমণ শুরু করেছিলেন। তার শট ফিরে ফিরে আনে সনাথ জয়াসুরিয়ার স্মৃতি, আনলো এদিনও। তবে সেটা দীর্ঘস্থায়ী হলো না। হেনরির হোল্ড করা বলে আগেভাগেই ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ তুলে ফিরেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা এরপর মেতেছেন যাওয়া-আসার খেলায়। টানা ৭ ওভার বোলিং করেছেন হেনরি, সে স্পেল শেষ করার আগে ফিরিয়েছেন কুসাল মেন্ডিসকেও, যিনি স্কয়ারড আপ হয়ে এজড হয়েছিলেন, এরপর পরিণত হয়েছেন দ্বিতীয় স্লিপ থেকে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়া মার্টিন গাপটিলের দারুণ ক্যাচে। 

    একপাশে ট্রেন্ট বোল্টকে সরিয়ে আগেই লকি ফার্গুসনকে এনেছিলেন উইলিয়ামসন। শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জটা তাতেই হয়ে গেছে দ্বিগুণ, সুইংয়ের সঙ্গে এবার তাদের সামনে হাজির হয়েছে পেস। ওভার দ্য উইকেট থেকে ভেতরের দিকে ঢোকার চেষ্টা করেছেন ফার্গুসন, কাজে এসেছে তার তৈরি করা সেই অ্যাঙ্গেল। প্রথমে এলবিডব্লিউ হয়েছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, ব্যাট নামিয়ে আনার আগেই প্যাডে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বল। 

    জিভান মেন্ডিসের উইকেটে ফার্গুসনের সঙ্গে ভাগ আছে উইলিয়ামসনের অধিনায়কত্বেরও। এর আগের বলেই গালিতে এনেছিলেন জিমি নিশামকে, মেন্ডিস ক্যাচ দিয়েছেন ঠিক সেখানেই। ডি সিলভা-মেন্ডিসের উইকেটের মাঝে স্যান্ডউইচ হয়ে ফিরেছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, কলিন ডি গ্রান্ডহোমের লেংথ বলটা একটু সিম করে বেরুচ্ছিল, ম্যাথিউসের সর্বনাশ হয়েছে তাতেই।


     


    ৬০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কাকে চোখ রাঙাচ্ছিল ১০০-এর নিচেই অল-আউট হয়ে যাওয়া। থিসারা পেরেরার সঙ্গে  করুনারত্নের ৫২ রানের জুটিতে সেটা হয়নি, এ জুটি ছিল শ্রীলঙ্কার ইনিংসের সর্বোচ্চ। মিচেল স্যান্টনারকে তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে ক্যাচ দেওয়ার আগে পেরেরা করেছেন ২৩ বলে ২ ছয়ে ২৭ রান। ইসুরু উদানা, সুরাঙ্গা লাকমাল, লাসিথ মালিঙ্গা- করুনারত্নকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য এরপর বাকি ছিলেন শুধু শ্রীলঙ্কার টেইল-এন্ডাররা। তারা বেশিক্ষণ টেকেননি, তিনজন ফিরেছেন যথাক্রমে নিশাম, বোল্ট ও ফার্গুসনের বলে। করুনারত্নে ফিফটি পর একটা ক্যাচ তুলেছিলেন, ডিপ-মিডউইকেটে স্যান্টনার সামনে ডাইভ দিয়ে সেটা দারুণভাবে নিলেও টিভি আম্পায়ার নাকচ করেছেন সেটা। পরের বলেই আউট হয়েছেন মালিঙ্গা, আর তাতেই ক্যারি ব্যাট থ্রু দ্য ইনিংস করা দ্বিতীয় শ্রীলঙ্কান হয়ে গেছেন করুনারত্নে। বিশ্বকাপেও এমন ঘটনা এটি দ্বিতীয়, এর আগে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওপেনিংয়ে নেমেও শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের রিডলি জ্যাকবস। 

    আগের দিন পাকিস্তান ১০৫ রানে অল-আউট হয়েও ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিয়েছিল ৩ উইকেট, শ্রীলঙ্কা তাদের এশীয় প্রতিদ্বন্দ্বীর মতো এদিন নিতে পারলো না একটিও। বেশ কয়েকবার এজড হলেন গাপটিল-মানরো দুজনই, তবে স্লিপ বা গালিতে জায়গামতো ফিল্ডার ছিলেন না একবারও। দুই ওপেনারই বেশিরভাগ রান করেছেন বিহাইন্ড দ্য স্কয়ারে। তবে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ বেশি করে পেয়েছেন দুজন। গাপটিল ফিফটি পূর্ণ করেছেন ৩৯ বলে, মানরো করেছেন ৪১ বলে। ১৭তম ওভারে প্রথম বলে মানরো সিঙ্গেল নিয়ে নিশ্চিত করেছেন নিউজিল্যান্ডের জয়।