'ডি ভিলিয়ার্স নিজেই জাতীয় দলে ফেরার ব্যাপারে আগ্রহী ছিল না'
সাউদাম্পটনের সংবাদ সম্মেলনে তিনি ছিলেন ২০ মিনিটের মতো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে ওই সংক্রান্ত প্রশ্ন বেশি করা হবে, এমনটাই হয়ত ভেবেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা কোচ ওটিস গিবসন। তবে হলো একদমই উল্টো কাহিনী, প্রায় পুরোটা সময়ই গিবসনকে কথা বলতে হয়েছে এবি ডি ভিলিয়ার্সের ফেরার সেই খবরটা নিয়ে। গিবসন বলছেন, যদি সত্যিই এবি জাতীয় দলে ফিরতে চাইতেন, তাহলে তিনি এই মুহূর্তে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকতেন।
বিশ্বকাপের মাঝেই খবরটা ছড়িয়ে পড়েছিল গত সপ্তাহে। এবি নিজেই জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপে খেলার জন্য অবসর ভেঙ্গে জাতীয় দলে ফিরতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে তাঁর ফেরার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাননি দলের অধিনায়ক, কোচ কিংবা টিম ম্যানেজমেন্টের কেউই। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে পরে জানানো হয়, ডি ভিলিয়ার্সকে না নেওয়ায় তাদের কোন আফসোস নেই।
সংবাদ সম্মলেনে গিবসন জানিয়েছেন, আসলে এবির নিজেরই ফেরার শতভাগ ইচ্ছা ছিল না, ‘সবার কথা শুনে আমার মনে হচ্ছে, এবি নিজে যতটা না ফিরতে চেয়েছে, তাঁর চেয়ে অন্যরা এটা বেশি চেয়েছিল! যদি সে নিজে সত্যিই ফিরতে চাইত, তাহলে এখন সে দলের সাথে থাকতো। আমরা কি শুধু তাঁকে নিয়েই কথা বলতে থাকবো? নাকি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচ নিয়েও কিছু ভাবতে হবে?’
গিবসন বলছেন, এবি জাতীয় দলে ফেরার সিদ্ধান্ত নিতে অনেক দেরি করে ফেলেছিলেন, ‘আইপিএলে খেলার সময় হয়ত সে ডু প্লেসিকে নিজের ফেরার কথাটা জানিয়েছিল। এরপর ডু প্লেসি আমাকে ফোন দিয়ে জানায় ব্যাপারটা। সে জিজ্ঞাসা করেছিল কোনভাবে এবিকে ফেরানো যায় কিনা। আমি সাথে সাথেই বলেছিলাম, সে অনেক দেরি করে ফেলেছে। এবির অবসরের পর অনেক কিছু হয়ে গেছে। আমরাও নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছি।’
ডু প্লেসি কি এবিকে ফেরানোর ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন? গিবসন সাফ জানিয়ে দিলেন, কেউই তাঁকে দলে ফেরত চাননি, ‘আমরা সবাই একটা কথাই বলেছিলাম, অনেক দেরি হয়ে গেছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁর জন্য দলের দরজা খোলা ছিল। যদি সে সত্যিই বিশ্বকাপ খেলতে চাইতো, তাহলে সে শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের গুরুত্বটা বুঝে সেখানে খেলত। মার্চ থেকে বিশ্বকাপ পর্যন্ত আর কোন ম্যাচ ছিল না। সে তাঁর সিদ্ধান্তটা আগেই নিয়ে নিয়েছিল। আমি তাঁকে অনেক আগে একবার জিজ্ঞাসা করেছিলাম, সে সত্যিই অবসর নিতে চায় কিনা। সে তখন আমাকে বলেছিল অবসরের সিদ্ধান্তে সে খুশি। কাউকে আসলে জাতীয় দলে খেলার জন্য আপনি অনুরোধ করতে পারেন না! আমি তাঁকে পরিষ্কার বলে দিয়েছিলাম, সে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে বিশ্বকাপে আমাদের সাথেই থাকতে পারত, কিন্তু সে পরিবারের সাথে সময় কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
বিশ্বকাপের প্রথম তিন ম্যাচের সব কয়টিতে হেরে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন খাদের কিনারায়। গিবসন মনে করেন, এবির ব্যাপারটা পুরো ড্রেসিংরুমের মনোযোগ নষ্ট করেছে, ‘আমরা ভালো খেলে সবাইকে দেখাতে চাই যে আমরাও শিরোপার যোগ্য দাবিদার। এবিকে নিয়ে যত কথাই হোক, সে আমাদের সাহায্য করতে পারবে না। আমাদের নিজেদেরই নিজেদের সাহায্য করতে হবে। নিজেদের ওপর বিশ্বাসটা রাখতে হবে। এবির ব্যাপারটা পুরো ড্রেসিংরুমের মনোযোগ নষ্ট করেছে। সে আর ফিরছে না, তাই এই ব্যাপারটা সবার ভুলে যাওয়া উচিত।’