আফগানিস্তানকে উড়িয়ে অবশেষে হাসতে পারল দক্ষিণ আফ্রিকা
আফগানিস্তান ৩৪.১ ওভারে ১২৫ (রশিদ ৩৫, জাদরান ৩২; তাহির ৪/২৯, মরিস ৩/১৩)
দক্ষিণ আফ্রিকা ২৮.৪ ওভারে ১৩১/১ (ডি কক ৬৮, আমলা ৪১*; নাইব ১/২৯ )
ফলঃ দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ উইকেটে জয়ী
প্রথম চার ম্যাচে জয়হীন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আফগানিস্তানের বিশ্বকাপটাও কাটছিল দুঃস্বপ্নের মতোই। বৃষ্টি বাগড়া না দিলে পঞ্চম ম্যাচ এসে একদল অন্তত জয়ের মুখ দেখত। আফগানদের ৯ উইকেটে উড়িয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা পেয়েছে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম জয়, থমকে থাকা আশার পালে একটু হলেও লেগেছে মন্দমধুর হাওয়া।
কার্ডিফে আজ বার বারই চোখ রাঙাচ্ছিল বৃষ্টি। শুরুতে একবার ম্যাচ বন্ধ ছিল, এরপর খেলা হয়ে যায় দ্রুতই। দুই আফগান ওপেনার হজরত জাজাই ও নুর আলী জাদরান শুরুটা একদম মন্দ করেননি। তবে দলের ৩৯ রানে ধৈর্যচ্যুতি হয় জাজাইয়ের, রাবাদাকে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন ২৩ বলে ২২ রান করে। রহমত শাহও টেকেননি বেশিক্ষণ, মরিসের বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে করেছেন ৬ রান।
এর্পর ২ উইকেটে যখন ৬৯ রানে পৌঁছাল আফগানিস্তান, কার্ডিফের আকাশে রোদ সরে আরও একবার নেমে এলো বৃষ্টি। খুব বেশিক্ষণ অবশ্য বন্ধ থাকল না খেলা। তবে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে এসেছে দুই ওভার। কিন্তু কে জানত, সেই বৃষ্টিই এমন সর্বনাশ করবে আফগানদের। খেলা আবার শুরুর পরেই হাশমতউল্লাহ শহিদি ক্যাচ দিলেন ফেহলেকোয়ার বলে। নুর আলী জাদরান ভালোই খেলছিলে, ৩২ রানও করে ফেলেছিলেন। কিন্তু ইমরান তাহির বোলিংয়ে এলেন, প্রথম বলটা গুগলি ছিল। বুঝতে না পেরে জাদরান বোল্ড, আফগানিস্তান হারাল চতুর্থ উইকেট। আসগর আগান সুযোগ পেয়েছিলেন আজ, কিন্তু কাজে লাগাতে পারলেন না। তাহিরের ওই ওভারেই আরেকটু গুগলিতে বোকা বনলেন, ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন কোনো রান না করেই।
পরের ওভারে আরও বড় ধাক্কা খেল আফগানিস্তান, এবার ফেহলেকায়োর বলটা স্টাম্পে টেনে নিয়ে এলেন মোহাম্মদ নবী। আউট হয়ে গেলেন ১ রান করেই। ১০ বলের মধ্যে মাত্র ১ রান যোগ করতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলল আফগানিস্তান। তাহির এরপর আবার আঘার হানলেন। এবার লং হপে ক্যাচ তুলে দিলেন। মিড উইকেটে দুর্দান্ত ক্যাচের জন্য অবশ্য মার্করামেরও বড় কৃতিত্ব প্রাপ্য। ৭৭ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর এরপর একটু ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা আফগানদের।
রশিদ খান ও ইকরাম আলীখিল মিলে এরপর যোগ করলেন ৩৪ রান, এর মধ্যে অবশ্য রশিদের অবদানই বেশি। আলীখিলকে আউট করে জুটিটা ভেঙেছেন মরিস। রশিদ ২৫ বলে ৩৫ রান করে ফেলেছিলেন, তাহিরের ওপরেই ঝাল ঝাড়ছিলেন বেশি। শেষ পর্যন্ত তাহিরকে উড়িয়ে মারতে ক্যাচ দিলেন ডিপ মিড উইকেটে। আউট হয়ে গেলেন ২৫ বলে ৩৫ রান করে। সেই ১২৫ রানেই শেষ পর্যন্ত অলআউট হয়ে গেছে আফগানিস্তান।
সেই রান তাড়া করে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা হয়েছিল বেশ সাবধানী। পাওয়ারপ্লেতে আমলা ও ডি কক কোনো ঝুঁকিই নেননি, ১০ ওভারে তুলেছেন ৩৫ রান। রশিদ খান এলেন, ডি কক তাঁকে চার মেরে বেরুলেন খোলস ছেড়ে। ডি কক শুরু করলেন উইকেটের চার দিকে শট খেলা, ফিফটি পেলেন ৫৮ বলে। যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচটা শেষ করে আসবেন, ৬৮ রান করে আউট হয়ে গেলেন নাইবের বলে। আমলা ও ফেলেকায়োর অবশ্য ম্যাচটা শেষ করে আসতে কোনো সমস্যা হয়নি।