• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    ওয়ার্নারের রানের রহস্য 'পপ সঙ্গীত' থেরাপি ?

    ওয়ার্নারের রানের রহস্য 'পপ সঙ্গীত' থেরাপি ?    

    ঘণ্টায় ১৪০-১৫০ কিলোমিটার বেগের বল, স্টেডিয়ামের দর্শকের চিৎকার, নিন্দুকের দুয়ো; ডেভিড ওয়ার্নারকে সামলাতে হচ্ছে সবকিছুই। চাইলেই তো আর ইংল্যান্ডের দর্শককে চুপ করানো সম্ভব নয়, তাহলে কী উপায়? ভরা স্টেডিয়ামে মনঃসংযোগ ধরে রাখতে ওয়ার্নার অবশ্য বেছে নিয়েছেন অভিনব এক পদ্ধতি। অনুশীলনের সময় কানে হেডফোন গুজে রেখেই ব্যাটিং করেন তিনি। আর বিশেষ কিছু পপ সঙ্গীতেই নিজের মনঃসংযোগটা বাড়িয়েছেন এই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার।  

    ওয়ার্নার যখন নেটে ব্যাটিং করেন, একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে তার কানে সাদা একটি ওয়্যারলেস হেডফোন, হাতে স্মার্টওয়াচ। গান শুনতে শুনতে হয়ত অনেকেই ব্যাটিং করেন। কিন্তু ওয়ার্নারের এই হেডফোন পরে অনুশীলন করার পেছনে আছে আরেকটি কারণও। শুধু গান শোনা নয়, পপ মিউজিক দিয়ে নিজের মনঃসংযোগটাও ঝালিয়ে নেন তিনি। 

    বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির জন্য এক বছর নিষিদ্ধ ছিলেন ওয়ার্নার। এই এক বছরে বদলে গেছে তার জীবনের অনেক কিছুই। ব্যাটিংয়ের সময় কীভাবে মনোযোগ বাড়ানো যায়, এর জন্য বিশেষ এই পদ্ধতির দ্বারস্থ হয়েছেন ওয়ার্নার, ‘আমি কেনো অনুশীলনে হেডফোন পরে ব্যাটিং করি? আসলে এটা আমার মনকে শান্ত করে। গত ১২ মাসে অনেক ভিন্ন জিনিস নিজের জীবনে আনার চেষ্টা করেছি, এটা সেটার মাঝে অন্যতম। যখন ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগে কেউ আপনার বিপক্ষে বোলিং করছে, তখন আপনি অন্য কোনদিকে মনোযোগ দিতে চাইবেন না। তাই আমি নিজের স্মার্টওয়াচে ৪০টির মতো গান ভরে ব্যাটিংয়ে নামি। এটাই আমাকে ধীরস্থিরভাবে ব্যাটিং সাহায্য করে।’ 

    শরীর ও মনকে শান্ত রাখার জন্য বিশেষ থেরাপিও নিয়েছিলেন ওয়ার্নার, ‘আমি ক্রায়োথেরাপি নিয়েছিলাম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। মনের ক্লান্তি দূর করার জন্য আমি নেটে নেমেও গান শুনি। এভাবে বেশ কয়েকটি অনুশীলন সেশনে ব্যাটিং করেছি, এটা বেশ কাজে দিয়েছে।’ 

    ওয়ার্নার জানালেন, পপ সঙ্গীতই তার বেশি পছন্দ, ‘এই মুহূর্তে আমি লুইস ক্যাপালিডির গান বেশি শুনছি। পপ সঙ্গীতই বেশি শোনা হয়। এছাড়া ধীর গতির গানও শোনা হয় অনেক। গানের সুরেই আমার মন শান্ত হয়ে যায়।’ 

    ইংল্যান্ডে এসে বেশ কয়েকবারই দর্শকের দুয়ো শুনতে হয়েছে ওয়ার্নারকে। এসব দুয়োকে এখন হাসিমুখেই এড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি, ‘মানুষ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে স্টেডিয়ামে আসছে। তারা যদি আমাদের দুয়ো দিতে চায় দিতে পারেন। আগের ম্যাচে ফিল্ডিংয়ের সময়ও এসব শুনেছি, কিন্তু পাত্তা দেইনি। দিনশেষে এসব ব্যাপারকে হাসিমুখেই মেনে নিতে হবে। আমি সবসময় দর্শককে ভালো কিছু দেওয়ার চেষ্টা করি, হাসার চেষ্টা করি। যে যাই বলুক না কেনও গ্যালারি থেকে, আমি তাদের চোখের দিকে তাকিয়ে হাসি দেই। আমি দেশের হয়ে খেলছি, এটার চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না।’ 

    ওয়ার্নারের ‘পপ সঙ্গীত’ থেরাপি যে কাজে দিচ্ছে, সেটার প্রমাণ তো তার পারফরম্যান্সই। সাত ম্যাচে ৫০০ রান করেছেন ওয়ার্নার, গড় ৮৩.৩৩। ফিফটি আছে তিনটি, সেঞ্চুরি দুটি। এই মুহূর্তে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে আছেন তিনিই।