পুরো দায়ভার আমি নিচ্ছি, দেশে ফিরে বললেন মাশরাফি
কম তো নয়, দেখতে দেখতে দুই মাস হয়ে গেল। সেই আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে শুরু, এরপর বিশ্বকাপ। প্রথম এক মাস কাটছিল স্বপ্নের মতো, এরপর শেষে এসে সবটা হয়ে গেল এলোমেলো। মাশরাফি-তামিম-মুশফিকদের দেখে বোঝা যাচ্ছিল, আর শরীর চলতে চাইছে না। সঙ্গে বিমানভ্রমণের ক্লান্তি তো আছেই। মাশরাফির ক্লান্ত কন্ঠেও সেই হতাশারই অনুরণন। ইংল্যান্ডে বলা কথাগুলো বললেন আরেকবার। শুধু বললেন, সেমিফাইনালের দৌড় থেকে বাদ পড়ার পরেই আসলে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে বাংলাদেশের।
যে বিশ্বকাপটা হতে পারত বাংলাদেশের জন্য স্বপ্নের, শেষ পর্যন্ত সেটাই হলো ভুলে যাওয়ার মতো। পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচটা জিতলে পাঁচে থাকতে পারত, এখন আট নম্বরে থেকে শেষ করতে হচ্ছে বিশ্বকাপ। মাশরাফি অবশ্য নিজের হতাশাটা গোপন করলেন না, ‘যে প্রত্যাশা নিয়ে গিয়েছিলাম সে জায়গা থেকে অবশ্যই দল হতাশ। বাট পুরো বিশ্বকাপ যদি দেখেন, আমরা যেভাবে খেলেছি যদি কিছু জিনিস আমাদের পক্ষে থাকত আমরা সেমিফাইনালে যেতে পারতাম। কিন্তু ওভারল খেলার ধরন বা সব মিলে যেরকম ছিল অবশ্যই সেটা অনেক পজিটিভ ছিল। একই সঙ্গে টিমে আশা যেরকম ছিল সে জায়গা থেকে হতাশ।’
তাতে নিজের দায়টাও মাথা পেতে নিলেন, ‘অধিনায়ক হিসবে প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো না খেললে সেটার সমালোচনা ও পুরো দলের দায়ভার আমাকে নিতে হবে। সেটাই স্বাভাবিক। আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও নিতে হতো। আমি অবশ্যই পুরো দায়ভার নিচ্ছি। একই সময়ে সমালোচনা হচ্ছে বা হবে। এটা সারাবিশ্বে বা সারা দেশে যে কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্টের পর হয়, বিশেষ করে বিশ্বকাপের পর হওয়া খুব স্বাভাবিক। আবার এটাও বলব, কিছু জিনিস আমাদের পক্ষে গেলে অন্যরকম জায়গায় থাকতে পারত।’
তবে সব কিছুর পরও মাশরাফি মনে করিয়ে দিলেন, সেমিতে উঠতে না পারার পরেই আসলে বিশ্বকাপ ব্যর্থ হয়ে গেছে, ‘প্রতিটা ম্যাচই... পাঁচ যাওয়ার সুযোগ ছিল সেটা দেখেন শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। তার মানে আমরা শেষ ম্যাচ ফিনিশ করতে পারলে পাঁচ হতাম। কিন্তু দেখেন আপনাদের বা সাধারণ মানুষ বা সবার আশা ছিল চারের মধ্যে থাকা। চারে না থাকতে পারলে শেষ ম্যাচ জিতলে আমরা পাঁচে থাকতাম। সেটা হয়তোবা আলাদা জিনিস হতো। আবার এটা দেখেন আমরা যদি চারে না থাকতে পারলে এই বিশ্বকাপের অর্থ এখানেই শেষ।’
সাকিব-মুশফিক ছাড়া এবার বাকি সিনিয়ররা কেউ সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। সাইফ উদ্দিন-মিরাজ-মোস্তাফিজরা বরং একটু হলেও ভালো করেছেন। মাশরাফি বলছেন, এই তরুণরাও সামনে আরও বেশি দায়িত্ব নিতে শিখবেন, ‘দেখেন প্রথমত যারা তরুণদের সবসময় একতরফা দোষ দেওয়া হয়। আজকের সিনিয়রা একসময় তরুণ ছিল, এতোটা ধারাবাহিক ছিল না। আজকের তরুণরা যতটা ধারাবাহিক খেলছে। এতো বেশি চাপের মধ্যে ক্রিকেট খেলছে যেটা আমরা যখন তরুণ ছিলাম আমাদের নিতে হয়নি। তরুণদের একতরফা দোষ দিয়ে লাভ নেই। তারাও অনেক চেষ্টা করেছে। এই মঞ্চ অনেক বড়। এখানে আসলে এত সহজ না। আমি আশা করি, আজকের সাকিব-মুশফিক-তামিম-রিয়াদ যে অবস্থানে আছে তারাও সেখানে যাবে।’