অস্ট্রেলিয়াকে পুড়িয়ে যাচ্ছেন বার্নস
দ্বিতীয় দিন শেষে
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ২৮৪ ( স্মিথ ১৪৪)
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ২৬৭/৪ (বার্নস ১২৫*, স্টোকস ৩৮; প্যাটিনসন ২/৫৪)
টেস্ট ক্রিকেটে শেষ কবে এরকম ব্যাটিং করেছে ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার? বেশ খানিকক্ষণ ভাবতে হতে পারে আপনাকে। সেই পথটা আজ দেখিয়ে দিয়েছেন ররি বার্নস। অষ্টম টেস্টে এসে অবশেষে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এই ইংলিশ ওপেনার, সেটাও আবার অ্যাশেজে! এজবাস্টন টেস্টে তাতেই শক্ত অবস্থানে পৌঁছে গেছে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় দিন শেষে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে মাত্র ১৭ রানে পিছিয়ে আছে ইংলিশরা। খুব বড় কোনো বিপর্যয় না হলে বড় লিডের স্বপ্ন তারা দেখতেই পারে!
একদম ক্লাসিক টেস্ট ক্রিকেট ব্যাটিং যাকে বলে, সেটাই হয়েছে আজ। এজবাস্টনের উইকেট আজ সহজ হয়ে এসেছে অনেকটা, তবে বোলারদের জন্য কিছু সাহায্য ছিলই। সকালে জেমস প্যাটিনসন দারুণ বোলিংয়ে সেটাই কাজে লাগাচ্ছিলেন। জেসন রয়কে বার কয়েক বিট করার পর শেষ পর্যন্ত পেয়ে গেলেন উইকেট। বাড়তি বাউন্স করা বলটা খেলতে গিয়ে রয় ক্যাচ দিলেন স্লিপে স্মিথের কাছে, ফিরলেন ১০ রানে। ২২ রানে প্রথম উইকেট হারাল ইংল্যান্ড।
জো রুটের অনেক দোনোমোনোর পর তিনে উঠে আসা কতটা দরকার ছিল, সেটা দেখা গেছে এরপর। ররি বার্নসকে নিয়ে এরপর পার করে দিয়েছেন বড় একটা সময়। আম্পায়ারিংয়ের করুণ দশা কাটেনি আজও, রুটকে দুইবার আউট দিয়ে দিয়েছিলেন আলিম দার ও জোয়েল উইলসন। দুবারই রুট রিভিউ নিয়েছেন সঙ্গে সঙ্গে। একবার ছিল ইনসাইড এজ, আরেকবার ক্যাচের আবেদনে বল ব্যাটেই লাগেনি। অবশ্য একটা ভুলের মাশুল নিতে পারেনি অস্ট্রেলিয়াও। লায়নের বলে বার্নসকে একবার এলবিডব্লু দেননি আলিম দার। অস্ট্রেলিয়াও রিভিউ নেয়নি, নিলে দেখা যেত বল লেগ স্টাম্পে লেগে আউট বার্নস।
সেটার মাশুল এরপর কড়ায় গণ্ডায় দিয়ে গেছেন বার্নস। একটু আনঅর্থোডক্স স্টান্স নিয়েও অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের ভুগিয়ে গেছেন ম্যাচের বাকিটা সময়। শুরুতে রুটের সঙ্গে গড়েছেন ১৩২ রানের জুটি। রুট এর মধ্যে পেয়ে গেছেন ফিফটি, শেষ পর্যন্ত দুর্দান্ত এক ফিরতি ক্যাচ নিয়ে ইংলিশ অধিনায়ককে ৫৭ রানে ফিরিয়েছেন সিডল। এরপর ডেনলির সঙ্গে ৩৫ রান যোগ করেছেন। এরপর বল বদলানোর সুফল পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। প্যাটিনসনের ভেতরের দিকে ঢোকা একটু বলে এলবিডব্লু হয়ে গেছেন ডেনলি, ফিরেছেন ১৮ রানে। আর দারুণ এক স্পেলের পুরস্কার পেয়েছেন প্যাট কামিন্স, তুলে নিয়েছেন বিপজ্জনক জস বাটলারকে। এবারও একটু লেট সুইংয়ে খোঁচা দিয়েছেন বাটলার, স্লিপে দারুণ একটা ক্যাচ নিয়েছেন ক্যামেরন ব্যানক্রফট। ৪ উইকেটে ইংল্যান্ডের রান ১৯৪, অস্ট্রেলিয়া দেখছে ম্যাচে ফেরার আশা।
কিন্তু সেটা আর পূরণ হয়নি। বার্নস এরপর ঢুকে গেছেন নব্বইতে, অনেকক্ষণ আটকে থাকার পর শেষ পর্যন্ত পেয়েছেন সেঞ্চুরি। আবেগাপ্লুতও হয়ে পড়েছিলেন বেশ, অ্যাশেজে অভিষেক সেঞ্চুরি বলে কথা। সেঞ্চুরির পর আর কোনো বিপদও হতে দেননি, শেষ পর্যন্ত স্টোকসের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৭১ রানের জুটিতে পার করে দিয়েছেন দিন। দিন শেষে অভিনন্দন পেলেন স্মিথের, এখন পর্যন্ত যা এই টেস্টের প্রতীকী ছবি।