• দক্ষিণ আফ্রিকার ভারত সফর
  • " />

     

    'টিম ম্যানেজমেন্টের জন্যই ভারত ২০১৯ বিশ্বকাপ জিততে পারেনি'

    'টিম ম্যানেজমেন্টের জন্যই ভারত ২০১৯ বিশ্বকাপ জিততে পারেনি'    

    ক্যান্সারের সাথে লড়াইয়ে জিতে ক্রিকেটে ফিরেছিলেন ২০১১ বিশ্বকাপে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক যুবরাজ সিং। ফেরার পর দারুণ ফর্মে থাকলেও ফিটনেস টেস্টে উতরাতে না পেরে বাদ পড়েছিলেন তিনি। এরপর ফিট হয়ে ফিরলেও আর জাতীয় দলের হয়ে খেলা হয়নি যুবরাজের। ভারতীয় টিভি চ্যানেল ‘আজ তাক’কে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে যুবরাজ জানিয়েছেন, ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের কোনো সাহায্যই তিনি পাননি। নাহলে ২০১৯ বিশ্বকাপ অনায়াসেই খেলতে পারতেন বলে বিশ্বাস যুবরাজের। যুবরাজ এও বলেছেন, টিম ম্যানেজমেন্টের কারণেই ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে শিরোপা জিততে পারেননি বিরাট কোহলিরা। 

    ২০১১ বিশ্বকাপে যুবরাজ হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলয়াড়। এরপর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েক বছর খেলা থেকে দূরে ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে সুস্থ হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন যুবরাজ। তবে সেই ফেরাটা স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ১১ ম্যাচ। এই ১১ ম্যাচেই ৯৮.৬৭ স্ট্রাইক রেট ও ৪১.৩৩ গড় নিয়ে যুবরাজ মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন, তিনি ফুরিয়ে জাননি! তবে ফিটনেস টেস্টে উতরাতে ব্যর্থ হয়ে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন তিনি, এরপর আর ভারতের হয়ে খেলা হয়নি। 


    ক্যান্সার থেকে ফিরে যেবার করেছিলেন সেঞ্চুরি

     

    টিম ম্যানেজমেন্টকে ক্ষমা করতে পারেননি যুবরাজ, ‘ক্যান্সারের সাথে লড়াইয়ের পর ফেরত আসায় আমাকে নিয়ে সবাই খুশি ছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুই বছর কঠোর পরিশ্রম করেই জাতীয় দলে ফিরেছিলাম। ফিরে আমি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলি। কিন্তু অনেক বিষয় নিয়েই হতাশাটা রয়ে গেছে। আমি কোনো সমর্থন পাইনি, বিশেষ করে টিম ম্যানেজমেন্ট ও আশেপাশে থাকা মানুষদের থেকে। সেটা পেলে আমি নিশ্চিতভাবেই আরেকটি বিশ্বকাপ খেলতে পারতাম। আমি তখন যা করেছি, সবই নিজেই ইচ্ছাশক্তি দিয়ে। আমার কোনো ‘গডফাদার’ ছিল না। এতো অসুস্থতা নিয়েও ক্রিকেট খেলতে পেরে আমি গর্বিত।’ 

    ঠিক কোন কারণে তাকে জাতীয় দলে ফেরানো হয়নি, সেটা আজও জানেন না যুবরাজ, ‘আমি যে আটটি ওয়ানডে খেলেছিলাম ফেরার পর, দুটিতেই ম্যাচসেরা হয়েছিলাম। আমার স্ট্রাইক রেট, গড় সবই ভালো ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে ইনজুরিতে পড়লে আমাকে বলা হয় টি-টোয়েন্টি না খেলতে। এরপর ইয়ো-ইয়ো টেস্টে উতরাতে পারিনি। পরবর্তীতে ৩৬ বছর বয়সে এই টেস্টে উতরে যাই, ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলি। নির্বাচকরা ভেবেছিলেন আমি ওই বয়সে সেই টেস্টে উতরাতে পারব না। তারা এটাকে অজুহাত হিসেবে দেখাতে চেয়েছিলেন। ওই পরীক্ষায় উতরে যাওয়ায় আমাকে আসলে কী বলা উচিত সেটা ভেবে পাননি তারা। যিনি ১৫-১৭ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছে, তাকে তো বলা উচিত কেনো তাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। কেউ আমাকে এটা বলেনি।’ 

    যুবরাজ বলছেন, চার নম্বরে পজিশনে ভারত সঠিক কাউকে নেয়নি বলেই ২০১৯ বিশ্বকাপে শিরোপা জেতেনি বিরাট কোহলিরা, ‘আমার বাদ পড়ার পর মনিশ পান্ডে এলো, এরপর আরও দুই-একজনের পর এলো লোকেশ রাহুল। এরপর রায়না, রাইডুকেও খেলানো হলো। রাইডু ভালো করছিল। বিশ্বকাপের ঠিক আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খারাপ করায় তাকে বাদ দিয়ে হঠাৎ করেই বিজয় শঙ্করকে আনা হলো। বিশ্বকাপে ভারতের চার নম্বর ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৪৮! অধিনায়ক, কোচ ও নির্বাচকদের তো এটা জানা উচিত যে ইংলিশ কন্ডিশনে চার নম্বরের ভূমিকাটা কত গুরুত্বপূর্ণ। বিজয়ের সেই অভিজ্ঞতাটা ছিল না, পান্টেরও ছিল না। কার্তিক অভিজ্ঞ ছিল, কিন্তু পুরো টুর্নামেন্ট বেঞ্চে কাটিয়ে সেমিতে নামতে হলো। কোনো ক্রিকেটার থেকে ফলাফল পেতে হলে তাকে ভরসা দিতে হবে। এটাই ভারতের বিশ্বকাপ না জেতার বড় কারণ। নাহলে তো ভারতের ফাইনাল না খেলার কোনো কারণই ছিল না।'