'মাহা'র বদলে রোহিত ঝড়ে রাজকোটে উড়ে গেল বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ১৫৩/৬, ২০ ওভার
ভারত ১৫৪/২, ১৫.৪ ওভার
ভারত ৮ উইকেটে জয়ী
ঘূর্ণিঝড় ‘মাহা’র শঙ্কা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত আসেনি রাজকোটে। তবে রাজকোটে এলো রোহিত-ঝড়। সে ঝড়েই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে উড়ে গেল বাংলাদেশ। ব্যাটিং উইকেটের পুরো সুবিধা আদায় করলেন ভারত অধিনায়ক, তার ৪৩ বলে ৮৫ রানের ইনিংসে বাংলাদেশের ‘বিলো-পার’ স্কোর ভারত পেরিয়ে গেছে ২৬ বল ও ৮ উইকেট বাকি রেখেই। সিরিজে ফিরে এসেছে স্বাগতিকরা, নাগপুরে তৃতীয় ম্যাচটি তাই এখন সিরিজের অলিখিত ফাইনাল।
টসে জিতে এবারও দুই অধিনায়কই নিতে চেয়েছিলেন ফিল্ডিং, এবার সে সুযোগটা পেলেন রোহিত। রাজকোটের উইকেটে বল ব্যাটে আসছিল দারুণভাবে, বাংলাদেশের শুরুটাও হয়েছিল দারুণ। তবে মাঝের ওভারগুলিতে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশ উড়ান দিতে পারেনি আর, আটকে গেছে গড়পড়তা এক স্কোর গড়েই। এরপর বাংলাদেশ বোলারদের নিয়ে খেলেছেন রোহিত, অন্য ভারতীয় ব্যাটসম্যানরাও ম্লান হয়ে গেছেন তাতে।
লেগসাইডে দুই ওয়াইড দিয়ে ইনিংস শুরু করেছিলেন মোস্তাফিজ, তাতেই যেন পাওয়া গিয়েছিল ইঙ্গিত। সে ওভারে শিখর ধাওয়ান দুই চার মেরে পার্টিটা শুরু করলেন, তবে শীঘ্রই হয়ে পড়লেন রোহিতের ব্যাটিংয়ের দর্শক। শুরুতে বেশ কিছু আলগা বল করেছেন মোস্তাফিজরা, এরপর রোহিত মুডে চলে গেছেন, আর কিছুতেই কিছু হয়নি। পাওয়ারপ্লেতে ৬৩ রান তোলা ভারত ১০ ওভারেই তুলে ফেলেছিল ১১৩ রান। ১০ম ওভারের প্রথম তিন বলে মোসাদ্দেককে টানা তিন ছয়ও মেরেছিলেন রোহিত।
পরের ওভারে বাংলাদেশ পেয়েছে প্রথম ব্রেকথ্রু, বিপ্লবের টার্ন করা ডেলিভারিটা মিস করে বোল্ড হয়েছেন ধাওয়ান। বিপ্লবই ফিরিয়েছেন রোহিতকে, পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ১৫ রানের জন্য পঞ্চম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিটা পাওয়া হয়নি ‘হিটম্যান’-এর। যেটুকু কাজ বাকি ছিল, লোকেশ রাহুলকে নিয়ে সেটি সেরেছেন এরপর শ্রেয়াস আইয়ার।
এর আগে বাংলাদেশ মিস করে গেছে বোর্ডে পর্যাপ্ত রান তোলার সুযোগটি।
পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে এসেছিলেন চাহাল, প্রথম ওভারে গুণেছিলেন ১৩ রান। প্রথম ৬ ওভারে ৫৪ রান তুলে উড়ন্ত শুরু করা বাংলাদেশের প্রথম ছন্দপতন হলো খলিলের ব্লকহোলের বলে লিটনের পায়ে লাগার পর থেকে। খলিল ছিলেন এলোমেলো, প্রথমে শর্ট অফ আ লেংথ বল করে সেসবের মাশুল গুণেছেন টানা বাউন্ডারি খেয়ে। লিটন দুইবার জীবন পেলেন এরপর- প্রথমে ঋষভ পান্ট স্টাম্পের আগে বল ধরায় স্টাম্পিং থেকে বাঁচলেন, এরপর ক্যাচ তুলেও বেঁচে গেলেন রোহিতের হাতে।
তবে দ্বিতীয় জীবন কাজে লাগাতে পারলেন না লিটন, চাহালের বল তার পায়ে লেগে সামনে এলো পান্টের শরীরে লেগে, কিছু না বুঝেই দৌড় শুরু করা লিটন শুধু দেখলেন পান্ট কীভাবে সরাসরি ভাঙলেন স্টাম্প। ততক্ষণে বাংলাদেশকে চেপে ধরেছে ভারত, বিশেষ করে তাদের স্পিনাররা। চাহাল প্রথম ওভারে ১৩ রান দিলেও ১৩তম ওভারে এসে করেছেন জোড়া আঘাত- টার্নের বিপরীতে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছেন মুশফিক, গুগলি পড়তে না পেরে স্টাম্পড হয়েছেন সৌম্য।
এর আগেই ফিরেছেন নাঈম, ওয়াশিংটন সুন্দরের পিচড-আপ ডেলিভারিটা টেনে মারতে গিয়ে। লিটনের উইকেটের পরও সৌম্য-নাঈম উইকেট ধরে রেখেছিলেন, মাঝের ওভারগুলি পার করে দেওয়ার কৌশল নিয়েছিলেন বলেই মনে হচ্ছিল। চাহালের ওই এক ওভারেই গড়বড় হয়ে গেল সব।
শেষ একটা উড়ান প্রয়োজন ছিল তাদের, সেটার চেষ্টা করলেন মাহমুদউল্লাহ খলিলকে এক ওভারে তিন চার মেরে। দীপক চাহারের স্লো বাউন্সারে থার্ডম্যান টপকাতে গিয়ে ধরা পড়লেন, এর আগেই খলিলকে একটু স্বস্তি দিয়ে কাভারে তার বলে ক্যাচ তুলেছেন আফিফ। শেষ ৩ ওভারে মাত্র ১৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
ভারতকে তো বাংলাদেশ এরপর নিয়ে যেতে পারলো শেষ ৩ ওভারেই।