ভারতের ক্রিকেটারদের নিবেদন বাংলাদেশে দেখেন না বিসিবি সভাপতি
টি-টোয়েন্টিতে তাও একটু লড়াই করেছিল, একটি টি-টোয়েন্টি অন্তত জিতেছিল। কিন্তু টেস্টে কোনো লড়াই-ও করতে পারেনি বাংলাদেশ, হেরেছে তিন দিনের মধ্যেই। তবে টেস্টের চেয়ে টি-টোয়েন্টিতে হারার দুঃখটাই বড় হয়ে বাজছে বিসিবি সভাপতির বুকে। টেস্ট ক্রিকেট নিজেদের দুর্বলতম জায়গা সেটিও স্বীকার করে নিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। তবে বলেছেন, ভারতের ক্রিকেটের নিবেদন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে দেখেননি।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ সিরিজ জেতার মতো অবস্থায় থাকলেও শেষদিকে ব্যাটিং ধসে ভেঙে পড়েছে বাংলাদেশ। সেই শোক এখনও ভুলতে পারেননি বিসিবি সভাপতি, ‘আমি এখনো নিজে এটা মেনেই নিতে পারছি না এই ম্যাচটাও হারব। মিঠুন যদি এই রান করতে পারে, আমাদের টি-টোয়েন্টির বাকি যারা প্লেয়ার; যারা এতো বছর ধরে পরিচর্যা করছি। যাদের পেছনে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করছি... শুধু আপনি হিসেব করে দেখেন সৌম্য, লিটন, মুশফিক, রিয়াদ; এদের চেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তো আমাদের আর নেই।এরা যদি ১০ করে ৪০ রানও করত আমরা সেদিন ম্যাচ জিতে জেতাম। কারণ বাকি যে সাত রান থাকে ওটা বাকিরা করে নিত। ফাইনালে গিয়ে যদি এই অভিজ্ঞদের কাছ থেকে পারফরম্যান্স না পাই তাহলে এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। এরা তো কেউ খারাপ খেলোয়াড় না। হয় না কেন জানি, কে জানি ভারতের সঙ্গে এলে এটা বেশি হয়। এবার একদম মনে প্রানে বিশ্বাস ছিল এবার মারা জিতবই। সেটা হয়নি এবং সেই শোকই এখনো ভুলতে পারিনি।’
কিন্তু টেস্ট দলের এভাবে হারটা তো অনেক বড় অশনী সংকেত বাংলাদেশের জন্য, নাজমুল হাসান কি তা মানেন? বিসিবি সভাপতি দলের টেস্ট দলের দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিলেন। সেজন্য টেস্ট দল গঠনের বিকল্প দেখছেন না, ‘আমাদের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা হচ্ছে টেস্ট। ভারতের সাথে টি-টোয়েন্টি সিরিজটা যে খেললাম এতোগুলো প্লেয়ার ভারতের শুধু রোহিত শর্মা এসেছে। আমাদের প্রায় সবাই টেস্ট খেলছে। আমাদের আলাদা একটি টিম করতে হবে। এটা আমাদের সবচেয়ে দুর্বল জায়গা। ভারত হচ্ছে এখন সবচেয়ে শক্তিশালী। অন্যরাও শক্তিশালী। কিন্তু আমরা দুর্বল এটা স্বীকার করতে হবে। আমরা যে প্ল্যানে এগোচ্ছি, আশা করি এক থেকে দেড় বছর পর আমাদের একটি টেস্ট টিম হবে।’
ভারতের সঙ্গে নিজেদের ক্রিকেট সংস্কৃতির তুলনা করতে গিয়ে হতাশাই ঝরে পড়ল নাজমুল হাসানের কন্ঠে, ভারতের খেলোয়াড়দের চিন্তা ধারাই অন্যরকম। ওদের মন প্রাণ জীবনের সব কিছুই ক্রিকেট। একটা ছেলে জাতীয় দলে চান্স পাবে কি না তা নিয়ে চিন্তাও করে না। একটা বাচ্চা ছেলে স্কুল টিমে চান্স পাবে এটাই ওর এম্বিশন। রঞ্জি ট্রফিতে খেলতে হবে তাই জান দিয়ে দিচ্ছে। দিন রাত কষ্ট করছে। জাতীয় দলের চিন্তাই করে না। এতো ডিসিপ্লিন এতো নিয়ম কানুন মানে ওরা। আমাদের মধ্যে কিন্তু এই জিনিসটা দেখতে পাই না।এটা এতো সহজে আসবে না। ইন্ডিয়াতে এটা এসেছে আমাদের মধ্যেও আসবে একটু সময় লাগবে।’
পেস বোলিংকেই এই বাংলাদেশ টেস্ট দলের মূল সমস্যা বলে মনে হচ্ছে বিসিবি সভাপতির, ‘আমাদের এখন মূল সমস্যা পেস বোলিং। স্পিনে তো আমরা আহামরি কখনও ছিলামই না। ঘরোয়া লিগ ছাড়া। মোস্তাফিজ আমাদেরকে পেসে সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট দিয়ে আসছিলো। দুর্ভাগ্যবশত সেও এখন ধারাবাহিক হতে পারছে না। আমাদের এটা নিয়ে কাজ করতে হবে। বের করতে হবে কি করা যায় দেখা যায়। নতুন ছেলেরাও খারাপ করছে না।’