কিক অফ : দশকের শেষ এল ক্লাসিকোর আগে
কবে, কখন
এল ক্লাসিকো
বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ
লা লিগা
রাত ১.০০টা
হোসে মরিনহো-পেপ গার্দিওলাদের দিয়ে শুরু, জিনেদিন জিদান-এর্নেস্তো ভালভার্দে দিয়ে শেষ। গত এক দশকে নানা রূপে উত্তাপ ছড়িয়েছে এল ক্লাসিকো। প্রতিদ্বন্দ্বীতা শত্রুতা পর্যায়ে পৌঁছেছে, মেসি-রোনালদো দ্বৈরথ নতুন রঙ চড়িয়েছে- সবকিছুর পর এখন পরিস্থিতি ঠান্ডা। তবে সেটা কোনোভাবেই শান্ত নয়।
মাঠের বাইরের রাজনীতিতে এক দফা এরই ভেতর পিছিয়ে প্রায় দুই মাস পর শুরু হচ্ছে মৌসুমের প্রথম ক্লাসিকো। ১৬ ম্যাচ শেষে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইদলই এখন সমান। এই মৌসুমে এখনও দেখা না হওয়ায় তাই গোলব্যবধানে নির্ধারণ হয়েছে শীর্ষস্থান, তাতে সবার ওপরে বার্সেলোনা, দুইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ। যদি ভেবে থাকেন রঙ হারিয়েছে এল ক্লাসিকো, তাহলে ভুল ভাবছেন। এই ম্যাচ গড়ে দিতে পারে শিরোপা ভাগ্যও।
গত এক দশকে লা লিগায় বার্সেলোনার ছায়ায় পড়ে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এই সময়ে মাত্র দুইবার লা লিগা জিততে পেরেছে লস ব্লাঙ্কোরা। রিয়ালের চ্যাম্পিয়নস লিগ সাফল্যে অবশ্য ঢেকে দিয়েছে এই ব্যর্থতা। সেটা সাফল্য বুভুক্ষ ধরিয়েছে বার্সেলোনা সমর্থকদের মনে।
ইউরোপের চিন্তা অবশ্য এখানে অবান্তর। শিরোপা প্রত্যাশী দুইদল মাঠে নামছে- সেটাই আসল কথা। এই দুইদল যখন একে অপরের বিপক্ষে খেলে তখন এই ম্যাচের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু থাকে না। স্পেনেও আপাতত এর বড় চিন্তা বা দুশ্চিন্তার কারণ নেই। নিরাপত্তাজনিত কারণে দুই দল অবস্থান নিয়েছে একই হোটেলে, দুইদলই এক সঙ্গে রওয়ানা হবে মাঠে। মাঠে থাকছে নজিরবিহীন নিরাপত্তাও, এতোসংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী আগে কখনই মোতায়েন করা হয়নি এল ক্লাসিকোতে।
পয়েন্টের মতো মাঠের খেলায় দুই দলের পার্থক্য করা কঠিন। বার্সেলোনাকে এগিয়ে রাখছে ঘরের মাঠ। গত এক বছরে ন্যু ক্যাম্পে কোনো ম্যাচ হারেনি ব্লগ্রানারা। রিয়ালের আবার সাম্প্রতিক ফর্ম ভালো, শেষ ৫ অ্যাওয়ে ম্যাচের একটিতেও হারেনি জিদানের দল, জিতেছে চারটিতেই। দুইদল মুখোমুখি হচ্ছে শেষ ম্যাচে পয়েন্ট খোয়ানোর পর। বার্সেলোনা রিয়াল সোসিয়েদার মাঠে জিততে পারেনি, আর রিয়াল মাদ্রিদ শেষ মুহুর্তের গোলে ভ্যালেন্সিয়ার সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে।
শেষ ৫টি এল ক্লাসিকোর ফল পুরোপুরি রিয়ালের বিপক্ষে। একবারও জেতা হয়নি মাদ্রিদের রাজাদের, আর বার্সা জিতেছে ৪ বারই। এর্নেস্তো ভালভার্দেকে নিয়ে বার্সেলোনা সমর্থকদের যত হা-হুতাশ থাক, একটি জায়গায় তারা আছেন আগের মতোই। ভালভার্দেও রিয়ালকে হারিয়েছেন আরামসেই!
ম্যাচ ড্র হলেও বার্সেলনাই থাকবে শীর্ষে। এমন ম্যাচে অবশ্য দুই দলের কেউই ড্রয়ের লক্ষ্যে নামে না। পুরোদমে তাই আক্রমণাত্মক ফুটবল দেখার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারেন আপনি। সময় বদলে যাওয়ায় বহুদিন পর আরও একবার বাংলাদেশ সময় গভীর রাতে পাওয়া গেছে এল ক্লাসিকোর শিডিউল। আগের দশকে এটাই ছিল নিয়ম। সেটা বদলে এই দশক থেকে এশিয়ার সমর্থকদের কথা মাথায় রেখে এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল এল ক্লাসিকোর সময়। পরদিন যাদের কাজ-কর্ম আছে তাদের জন্য অবশ্য কঠিন কাজ, তবে এটুকু কষ্ট করাই যায়!
দলের খবর
এডেন হ্যাজার্ড খেলবেন না সেটা আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল। মার্সেলো, হামেস রদ্রিগেজ, লুকাস ভাসকেজও ইনজুরি থেকে ফেরেননি। তাই ক্লাসিকোতে নেই তাদের কেউ। এক ম্যাচ বিশ্রামে থাকার পর পুরোদমে ফেরার কথা কাসেমিরোর।
বার্সেলোনার অবস্থা অবশ্য এদিক দিয়ে ভালো। জর্দি আলবা আগের ম্যাচেই ফিরেছিলেন, ইনজুরি থেকে ফিরেছেন নেলসন সেমেদোও। উসমান ডেম্বেলে ও আর্থার ইনউরি নিয়ে মাঠের বাইরে সময় কাটাচ্ছেন। এছাড়া মোটামুটি ফিট আছেন বাকিরা।
সম্ভাব্য একাদশ
বার্সেলোনা
টের স্টেগান, সেমেদো, পিকে, লেংলে, আলবা, ডি ইয়িং, রাকিটিচ, বুস্কেটস, মেসি, গ্রিযমান, সুয়ারেজ
রিয়াল মাদ্রিদ
কোর্তোয়া, কারভাহাল, ভারান, রামোস, মেন্ডি, কাসেমিরো, ক্রুস, ভালভার্দে, রদ্রিগো, ভিনিয়সিয়াস, বেনজেমা
হেড টু হেড
গত বছর এই ফিক্সচারে লিওনেল মেসি বিহীন বার্সার কাছে ৫-১ গোলে উড়ে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ২০১৬ সালের পর লা লিগায় বার্সার বিপক্ষে জেতাও হয়নি তাদের। এই দশকে লা লিগার ১৯ ক্লাসিকোতে রিয়াল জিতেছে মাত্র চারবার, ১১ বারই জিতেছে বার্সেলোনা। লা লিগায় এক দশকে কেন বার্সেলোনার ছায়ায় পড়ে গেছে রিয়াল- সেটাই নির্দেশ করছে এই রেকর্ড।
প্যাভিলিয়ন প্রেডিকশন
বার্সেলোনা ৩-২ রিয়াল মাদ্রিদ