ডার্বিতে ড্র করে পয়েন্ট খোয়াল ১০ জনের বার্সেলোনা
ফুলটাইম
এস্পানিওল ২-২ বার্সেলোনা
লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের একেবারে শেষ দল এবার এস্পানিওল। ১০ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান ২০ এ। কাতালান ডার্বিতে এস্পানিওলের মাঠে বার্সেলোনা খেলতে গিয়েছিল দুই পয়েন্টের লিডে শীর্ষস্থানে থেকে। কিন্তু এর পরও বছরের শুরুটা ভালো হলো না বার্সার। এস্পানিওলের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ৯ মিনিটের ঝড়ে দুই গোল দিয়ে আবার স্বরূপে ফিরেছিল কাতালোনিয়ার বড় ক্লাবটি। তবে ম্যাচের ১৫ মিনিট বাকি থাকতে ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ং লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পর আরেক দফা বদলেছে খেলার ভাগ্য। সেই সুযোগে উ লির ৮৮ মিনিটের গোলে সমতায় ফেরে এস্পানিওল। সেখান থেকে আর ফেরা হয়নি বার্সার।
এস্পানিওলের সঙ্গে পয়েন্ট হারিয়ে লা লিগায় লিডও হারিয়েছে বার্সা। রিয়াল মাদ্রিদের সমান ৪০ পয়েন্ট নিয়ে গোলব্যবধানে এগিয়ে থেকে বার্সা আছে শীর্ষস্থানে। দিনের শুরুতে গেটাফেকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বার্সার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমিয়ে এনেছিল রিয়াল মাদ্রিদ।
এস্পানিওলের মাঠে বার্সেলোনা ছন্নছাড়া ফুটবল খেলেছে শুরু থেকে। শীতকালীন বিরতির পর লিওনেল মেসি-লুইস সুয়ারেজ-আন্টোয়ান গ্রিযমানরা ঠিক ছন্দ খুঁজে পাচ্ছিলেন না আক্রমণে। অন্যপ্রান্তে এস্পানিওলের আক্রমণভাগ তেমন একটা না ভোগালেও রক্ষণের অবস্থাও সময়মতো হয়ে গেল নড়বড়ে। ২৩ মিনিটে বার্সার রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এগিয়ে যায় এস্পানিওল। মার্ক রোকার ফ্রি-কিক থেকে গ্ল্যান্সিং হেডারে গোল করে দলকে নেন ডেভিড লোপেজ।
প্রথমার্ধে বার্সার সেরা সুযোগটি পেয়েছিলেন সুয়ারেজ। তবে তিনিও বারপোস্টের কারণে আর গোলের দেখা পাননি তখন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ইভান রাকিটিচকে তুলে আর্তুরো ভিদালকে নামিয়ে দেন ভালভার্দে। সেই টোটকাটা ভালোভাবেই কাজে দিয়েছিল বার্সার। তবে তার আগে সুয়ারেজ দেখিয়েছেন নিজের জাদু। জর্দি আলবার বাম প্রান্ত থেকে করা ক্রস নিখুঁত ওয়ান টাচে গোল করে ৫০ মিনিটেই বার্সাকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার।
নিজে গোল করার ৯ মিনিট পর সুয়ারেজ গোল করিয়েছেন ভিদালকে দিয়ে। বক্সের ভেতর এস্পানিওল ডিফেন্ডার ঠিকমতো বল ক্লিয়ার করতে পারেননি। এর পর বল হারিয়েছিলেন সুয়ারেজের কাছে। সুয়ারেজের ক্রসে দূরের পোস্ট থেকে হেডে গোল করে বসেন ভিদাল। অবশেষে লিডে গিয়ে এর পর বার্সার জয় নিয়ে সংশয় জাগার মতো কোনো কারণ ছিল না।
মেসি পুরো ম্যাচে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি। তবে এর পরও তার ঝলক দেখেছে এস্পানিওল। তিন চারজনকে কাটিয়ে সুয়ারেজকে দারুণে একটি পাস দিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু সুয়ারেজ আর ব্যবধান বাড়াতে পারেননি। ডিয়েগো লোপেজ ভালো একটি সেভ করে দলকে টিকিয়ে রাখেন ম্যাচে।
সেই সুযোগ এস্পানিওল কাজে লাগিয়েছে শেষে গিয়ে। ৬৬ মিনিটে প্রথম হলুদ কার্ড দেখেছিলেন ডি ইয়ং। ৭৬ মিনিটে নিজের অর্ধে বল হারিয়ে জনাথন কালিরির জার্সি টেনে ধরেছিলেন ডাচ মিডফিল্ডার। দ্বিতীয় হলুদ কার্ডটা প্রাপ্যই ছিল ডি ইয়ংয়ের। ২০০৪ সালে এডগার ডেভিসের পর তাই বার্সার প্রথম ডাচ ফুটবলার হিসেবে লা লিগায় লাল কার্ড দেখার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডও হয়ে গেছে তার।
দশজনের দল নিয়ে শেষদিকে সতর্ক হতে গিয়ে গ্রিযমানকে বসিয়ে নেলসন সেমেদোকে নামিয়েছিলেন ভালভার্দে। তবে সেই কৌশল তার কাজে দেয়নি আর। কাজে দিয়েছে সাবেক বার্সা ফুটবলার ও বর্তমান এস্পানিওল কোচ আবেলার্দোর আরেকটি বদলি। চীনা উইঙ্গার উ লেইকে ৭৪ মিনিটে মাঠে নামিয়েছিলেন আবেলার্দো। নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট বাকি থাকতে ডান দিক থেকে পাওয়া বলে বক্সের ভেতর থেকে কোণাকুনি শটে দূরের পোস্টে বল জড়ান উ লেই।
চোটাক্রান্ত মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগানের অনুপস্থিতিতে লিগে প্রথমবারের মতো বার্সার গোলবারের নিচে ছিলেন নেতো। ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষের নতুন ক্লাবের হয়ে লা লিগার প্রথম ম্যাচটি তাই ভালো গেল না মোটেই। আর অক্টোবরের পর আর জয়ের মুখ না দেখা এস্পানিওলের জন্য এই ড্রটাই হয়ে গেছে জয়ের সমান।