মেসিকে বড় চোটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বার্সেলোনা?
দলের সেরা খেলোয়াড়দের উপর চাপ স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি থাকে। আর মেসি-রোনালদোরা অনেক দিন ধরেই সেই বাড়তি চাপ নিয়েই নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছেন। নিজেদের ফর্ম এবং দলকে নিয়মিত জয় এনে দেয়ার চ্যালেঞ্জ তো আছেই, কখনো কখনো চোটাঘাতের শংকাকেও পাশ কাটিয়ে দলের প্রয়োজনের সময় মাঠে নামতে হয়। যেমন মেসির কথাই ধরুন। ঊরুর সমস্যা নিয়েও প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই বার্সেলোনার হয়ে মাঠে নামতে হচ্ছে তাঁকে।
মৌসুমের শুরুতে পায়ের পেশীর চোট নিয়ে প্রায় ছয় সপ্তাহ মাঠের বাইরে কাটিয়েছিলেন মেসি। ফিরে এসে চেনা ছন্দে দলকে নিয়মিত জয় এনে দিচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে, ঊরুর সমস্যা থাকার পরও প্রতিটি ম্যাচে মেসিকে খেলানোর মধ্য দিয়ে বার্সা কি তার সেরা খেলোয়াড়টিকে আরেকটি দীর্ঘমেয়াদি চোটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে?
তবে মেসিকে বিশ্রাম দেয়ার মতো পর্যাপ্ত সুযোগ ম্যানেজার কিকে সেতিয়েনের আছে কি না, সেটিও একটা প্রশ্ন। বার্সেলোনার মূল দলে বর্তমানে মোটে ১৪ জন খেলোয়াড় ফিট রয়েছেন। আর ফরোয়ার্ডদের মাঝে মেসির সঙ্গে ফিট শুধু গ্রিজমান এবং একাডেমীর ১৭ বছর বয়সী আনসু ফাতি। স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজকে মে পর্যন্ত মাঠে ফেরত পাচ্ছেন না সেতিয়েন আর হ্যামস্ট্রিংয়ে চোটের কারণে দীর্ঘদিন দলের বাইরে উসমান দেম্বেলে। তাই চোটের শংকা থাকার পরও মেসিকে নিয়মিত খেলাচ্ছেন সেতিয়েন। তবে মেসি কিন্তু থেমে নেই। উরুর সমস্যা নিয়েও নিজের সহজাত খেলাটাই খেলে যাচ্ছেন। লা লিগায় এখন পর্যন্ত ১৪ গোল দিয়ে মেসি সবার ওপরে। একইভাবে গোল বানিয়ে দেয়ার দিক দিয়েও তিনিই সবচেয়ে এগিয়ে।
মেসির উরুর সমস্যার পেছনে নতুন কোচ সেতিয়েনের অনুশীলনের প্রভাব আছে কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। ভালভার্দের অনুশীলনের সেশনগুলোর চেয়ে সেতিয়েনের সেশনগুলোকে বেশ ভিন্ন বলছে ইএসপিএন। সূত্রমতে, সেতিয়েনের ট্রেনিং সেশনগুলো ভালভার্দের চেয়ে অনেক কঠিন। অনুশীলনে বেশ কয়েকটি ড্রিলে খেলোয়াড়দের অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। যার ফলে খেলোয়াড়রা অনুশীলন পরবর্তী সময়ে বেশ ক্লান্তি অনুভব করেন, আর খেলোয়াড়েরা এ ধরনের অনুশীলনে অভ্যস্ত না হওয়ায় চোটের শংকা তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।
মৌসুমের শুরুতে চোটগ্রস্ত হয়ে ৫ ম্যাচ মিস করা মেসি মাঠে ফেরেন গত সেপ্টেম্বরে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে বদলি হিসেবে নামার পর থেকে এখন পর্যন্ত দুটি বাদে সবকটি ম্যাচেই মাঠে নেমেছেন মেসি।
চোট নিয়ে দলের সেরা খেলোয়াড়কে মাঠে নামাতে থাকলে কী হয়, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ছোট চোট থেকে এখন অন্তত তিন মাসের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেছেন রাশফোর্ড। বার্সাও নিশ্চয়ই চাইবে না মেসির ক্ষেত্রেও সেরকম কিছু হোক।