কিক অফের আগে : জার্মানিতে শীর্ষস্থানের লড়াই, ইতালির আকর্ষণ মিলান ডার্বি
জার্মানিতে শীর্ষে থাকা দুইদল নামছে একে অপরের বিপক্ষে। স্পেনে রিয়াল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনাও মাঠে নামছে নিজদের ম্যাচে। তবে ইতালিতে মিলান ডার্বি আলো কাড়ছে আলাদা করে। ইউরোপিয়ান ফুটবলের রবিবারর উল্লেখযোগ্য ম্যাচগুলোর প্রিভিউ।
বায়ার্ন-লাইপজিগের শীর্ষস্থানের লড়াই
বুন্দেসলিগার শীর্ষস্থানের লড়াইয়ে মাঠে নামবে পয়েন্ট টেবিলের প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা দুই দল। ৪২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বায়ার্ন মিউনিখ, আর এক পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে লাইপজিগ। শুরুটা নড়বড়ে হলেও বায়ার্নের সাম্প্রতিক ফর্ম দুর্দান্ত। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৮ ম্যাচ জিতেছে বায়ার্ন। ঘরের মাঠে তাই এই ম্যাচে ফেবারিট হিসেবেই খেলবে নয়ার-মুলাররা।
যদিওডিএফবি পোকাল কাপে শেষ ম্যাচে হফেনহাইমের সঙ্গে বেশ কাঠ-খর পুড়িয়ে জিততে হয়েছে বাভারিয়ানদের। আর সে ম্যাচটিকে লাইপজিগের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে “জেগে ওঠার সংকেত” হিসেবে দেখছেন বায়ার্ন কোচ হানসি ফ্লিক। লাইপজিগ মাত্র এক পয়েন্টে পিছিয়ে থাকলেও, গত পাঁচ ম্যাচে তারা জয়ের দেখা পেয়েছে মাত্র দুইবার।
বায়ার্ন-লাইপজিগের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে ওঠার লড়াইয়ের আড়ালে দুই দলের মূল স্ট্রাইকারদেরও একটা দ্বৈরথ চলবে। এই মৌসুমে লিগে এখন পর্যন্ত ২২ গোল করেছেন বায়ার্নের লেভানডভস্কি। আর ২০ গোল করে বায়ার্ন স্ট্রাইকারের পরের অবস্থানটিতেই রয়েছেন লাইপজিগের টিমো ভের্নার। তারা দুজনও কাল ব্যক্তিগত মাইলফলকের দিকে দিয়ে একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মিশনে নামবেন। সেটাই ভাগ্য গড়ে দিতে পারে ম্যাচের। আর এই ম্যাচ তো ভাগ্য গড়ে দিতে পারে আসলে শিরোপারও।
কবে, কখন
বায়ার্ন - লাইপজিগ
৯ ফেব্রুয়ারি, রাত ১১.০০
মিলান ডার্বিতে ইব্রার প্রত্যাবর্তন
পয়েন্ট টেবিলে দুই মিলানের দূরত্বটা বিশাল। যেখানে লিগে শীর্ষে থাকা জুভেন্টাসের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে আন্তোনিও কন্তের ইন্টার, সেখানে পিওলির মিলান কোনো মতে টেবিলের প্রথম ভাগে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে। তবে তাতে ফুটবলভক্তদের কাছে মিলান ডার্বির আবেদন কমার কথা নয়। এর পেছনে অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে মিলান ডার্বিতে ইব্রাহিমোভিচের প্রত্যাবর্তন। ২০১০-১১ মৌসুমে এসি মিলানের শেষ লিগ শিরোপা ইব্রার হাত ধরেই এসেছিল। আর তাই মিলান ভক্তদের কাছে ডার্বিতে ইব্রাকে ফিরে পাওয়া একটি বিশেষ উপলক্ষই!
তবে ২০১০ সালে মিলানে আসার আগে ২০০৬-০৯ সময়টায় ইন্টারের হয়েও মাঠ কাঁপিয়েছেন ইব্রা। তাই তো কালকের ম্যাচটিকে “অন্যরকম ডার্বি” বলছেন এসি মিলানের ডিরেক্টর যেভনিমির বোবান। লিগের দৌড়ে টিকে থাকতে মিলানের ম্যাচটি ইন্টারের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ভেরোনার কাছে জুভেন্টাস হেরে যাওয়ায় এই ম্যাচ জিতলেই ইন্টার আবার শীর্ষে উঠে যাবে। আর টেবিলের নবম স্থানে থাকা মিলান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জায়গা থেকে এখনো ৭ পয়েন্ট দূরে আছে, তাই ম্যাচটি থেকে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট পাওয়াটা মিলানের জন্যেও সমানভাবে জরুরী। তবে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কন্তে দলে পাচ্ছেন না লাউতারো মার্টিনেজকে। নিষেধাজ্ঞার কারণে খেলা হবে না তার। মার্টিনেজের জায়গায় নামতে পারেন অ্যালেক্সিস সানচেজ।
কবে, কখন
ইন্টার মিলান – এসি মিলান
১০ ফেব্রুয়ারি, রাত ১.৪৫
বার্সার দরকার একটা জয়
ঝামেলা যেন থামছেই না বার্সেলোনায়। লিওনেল মেসি-এরিক আবিদালের দ্বন্দ্ব বার্সার টালমাটাল অবস্থা ফুটিয়ে তুলেছিল। সে ঘটনার এক দিনের মাথায় যদিও 'শান্তিচুক্তি'র মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় সফলও হয়েছিল বার্সেলোনা। তবে সেদিন রাতেই কোপা ডেল রের কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে সঙ্কট আরও ঘনীভূত করেছেন লিওনেল মেসিরা।
মাঠে আর মাঠের বাইরে সমস্যা জর্জরিত এই বার্সা অপরিচিতই লাগার কথা আপনার কাছে। লা লিগার পয়েন্ট টেবিলেও একই অবস্থা। রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে তিন পয়েন্টে পিছিয়ে বার্সা আছে দুইয়ে। মার্চে এল ক্লাসিকোর আগে তাই এখন আর পা হড়কানোর সুযোগ নেই মেসিদের।
নতুন কোচ কিকে সেটিয়ের অধীনে ৬ ম্যাচের দুইটিতেই হেরেছে বার্সা। তবে সেতিয়েন এবার ফিরছেন রিয়াল বেটিসে। গত বছর মে মাসে বেটিসের চাকরি ছাড়ার পর প্রথমবারের মতো সাবেক ক্লাবে ফিরছেন তিনি। বেটিসের অবস্থা অবশ্য সুবিধার নয়। গত ৬ ম্যাচে মাত্র একবার জয়ের দেখা পেয়েছে তারা। আপাতত বেটিসের মাঠে একটি জয় বার্সার নাজেহাল দশায় স্বস্তি যোগাতে পারে কিছুটা।
পয়েন্ট টেবিলের ১২ তে থাকা বেটিসের অতীত রেকর্ডও সুবিধার নয় বার্সার বিপক্ষে। ২০১৮ সালে ন্যু ক্যাম্পে বার্সাকে হারালেও, নিজেদের মাঠে ২০০৮ সালের পর আর বার্সাকে হারানো হয়নি বেটিসের।
কবে, কখন
রিয়াল বেটিস-বার্সেলোনা
১০ ফেব্রুয়ারি, রাত ২.০০
লা লিগায় দুর্দান্ত রিয়ালের প্রতিপক্ষ ওসাসুনা
এবার লা লিগায় ফিরেই চমক দেখিয়েছিল ওসাসুনা। ২২ ম্যাচে মাত্র ৬ বার হেরেছে তারা। তবে মাত্র ৬ জয় আর ১০ ড্র তে পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান ১১ তে। লা লিগায় এ সপ্তাহে ওসাসুনা আতিথ্য দিচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদকে। জিনেদিন জিদানের দলের অবশ্য দুশ্চিন্তার খুব বেশি কারণ নেই। লিগের সবচেয়ে বেশি ১৪ জয় আর সবচেয়ে কম ১ হার দিয়ে জিদান আর রিয়াল মাদ্রিদ এবার লিগেও ছুটছে। বার্সেলোনার চেয়ে ৩ পয়েন্টে এগিয়ে রিয়াল মাদ্রিদও আছে শীর্ষস্থানে। ওসাসুনার বিপক্ষে ম্যাচের আগে জিদানের চিন্তা একটাই, কোপা ডেল রের শেষ ম্যাচে রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে হেরে বাদ পড়েছে তার দল। শুধু সেই ম্যাচের স্মৃতিটাই ভুলতে চাইবেন জিদান।
কবে, কখন
ওসাসুনা-রিয়াল মাদ্রিদ
৯ ফেব্রুয়ারি, রাত ৯.০০