স্বেচ্ছায় বেতন কম নেবেন রিয়াল মাদ্রিদ খেলোয়াড়রা
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে এবার বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিলেন রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়সহ অন্যান্যরা। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত খেলোয়াড়, কোচ থেকে নিয়ে পরিচালক পর্যায়ের সবাই আপাতত ১০ থেকে ২০ ভাগ করে বেতন কম নেবেন।
স্প্যানিশ জায়ান্টদের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দিয়ে আজ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবল এবং বাস্কেটবল ফার্স্ট টিমের সকল সদস্য তাদের অধিনায়কদের নেতৃত্বে এবং ক্লাবের প্রতিটি বিভাগের নির্বাহীরা স্বেচ্ছায় এ বছর ১০-২০ ভাগ বেতন কম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০১৯-২০ মৌসুমের বর্তমান অবস্থা আমলে নিয়েই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন তারা।”
“খেলোয়াড় এবং কোচদের এই সিদ্ধান্তের ফলে ক্লাবের অন্যান্য কর্মচারীদের ওপর চাপ কমল। এছাড়াও বর্তমান অচলাবস্থায় প্রায় সব প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং ক্লাবের অর্থনৈতিক কার্যক্রম থমকে যাওয়ার ফলে ক্লাবের আয় কমে গেছে অনেক, এতে করে এই পদক্ষেপের ফলে কিছুটা স্বস্তি মিলবে সংশ্লিষ্ট সবার।”
এদিকে এই সিদ্ধান্তের আগে বিষয়টি নিয়ে দলের বেশ কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের এজেন্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ, এমনটা জানিয়েছে ইএসপিএন। রিয়াল মাদ্রিদ কর্তৃপক্ষ গত মাসে স্পেনে লকডাউন শুরুর পর থেকেই ক্লাবের ওপর করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণ শুরু করে।
বেতন ছাড়ের পরিমাণ ১০ থেকে ২০ ভাগের মাঝে ঠিক কত হবে, তা নির্ধারিত হবে মৌসুম আদৌ শুরু হবে নাকি বা হলেও কতটুকু খেলা হবে তার ওপর। বেতন কমানোর বিষয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাব হিসেবে ঐক্যমতে পৌঁছালেও কয়েকজন খেলোয়াড় বিষয়টির প্রয়োগ নিয়ে সংশয় জানিয়েছেন আগেই। যেমন এসডব্লিউআর স্পোর্ট পডকাস্টে বিষয়টি নিয়ে নিজের মত তুলে ধরে মাদ্রিদের জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুজ বলেন, “বেতন ছাড় দেওয়া অনেকটা কোনও অনুদান ঠিক জায়গায় না দেওয়ার মতো বিষয়। এটা প্রথমত যার যার নিজের বিষয়, সে ছাড় দেবে কি না দেবে। আমি মনে করি, সবাইকে পূর্ণ বেতন দেওয়া উচিৎ, তারপর তারা সেই বেতন দিয়ে সঠিক কাজটি (অনুদান দেওয়া) করবে।”
“আমাদের সবার এমন জায়গায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিৎ যেখানে এটা সবচেয়ে বেশি জরুরী, আমার কাছে মনে ক্লাবের চেয়ে অন্য অনেক জায়গায় সহায়তা করাটা বেশি জরুরী।”
রিয়াল মাদ্রিদ কর্তৃপক্ষ অবশ্য খেলোয়াড়, কোচ এবং নির্বাহীদের বেতন কম নেওয়ার পেছনে কারণ হিসেবে ক্লাবের নন-প্লেয়িং স্টাফদের বেতন ঠিক রাখাকে উল্লেখ করেছে। কারণ ইউরোপের বেশ কিছু ক্লাব খেলোয়াড়দের বেতন না কমালেও নন-প্লেয়িং স্টাফদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়ে এবং বেতন কমিয়ে এরই মধ্যে সমালোচনার মুখে পড়েছে।
করোনাভাইরাস স্পেনে হানা দেওয়ার পর থেকেই ক্লাব এবং খেলোয়াড়রা নিজেদের মতো করে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বার্নাব্যুতে ক্লাবের পক্ষ থেকে জরুরী চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য একটি বিতরণ কেন্দ্রও খোলা হয়েছে।