পৃথিবীটা আবার আমাদের হবে | মাদ্রিদের ডায়েরি | রবার্তো কার্লোস
পুরো পৃথিবী যে ভয়াবহ দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, মাদ্রিদ সেটা খুব কাছ থেকে দেখেছে। করোনা ভাইরাসের থাবায় নিষ্প্রাণ মাদ্রিদে বসে আশার বাণী শুনিয়েছেন ক্লাব কিংবদন্তি রবার্তো কার্লোস। মাদ্রিদে নিজের সোনালী সময়ে ফিরে গেছেন প্লেয়ার্স ট্রিবিউনে লেখা এই কলামে। প্যাভিলিয়নের পাঠকদের জন্য যা অনুবাদ করেছেন হোসাইন মাহমুদ আব্দুল্লাহ।
আমার বাসায় একটি ছবি আছে। একটি বিশেষ দিনে তোলা হয়েছিল সেটি। যেই দিনটির প্রতিটি মুহূর্ত আমার সারাজীবন মনে থাকবে।
বিশেষ সেই দিনটি ছিল মাদ্রিদে আমার প্রথম। ১৯৯৬ সালের গ্রীষ্মে ইন্টার মিলান থেকে যখন রিয়াল মাদ্রিদ আমাকে দলে টানল, তখনই জীবনে প্রথমবারের মতো আমি মাদ্রিদে পা রেখেছিলাম। আমার বয়স তখন ২৩। মাদ্রিদের বিমানবন্দরে নেমে প্রথমে সে শহরে আমার নতুন বাসায় অথবা ইউরোপের সবচেয়ে জাঁকালো স্টেডিয়াম সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে যাওয়াটাই হয়ত স্বাভাবিক ছিল। তবে আমি গিয়েছিলাম বিশেষ একটি জায়গায়।
স্প্যানিশ দৈনিকের কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আমি গিয়েছিলাম মাদ্রিদের বিখ্যাত প্লাজা দি সিবেলেসে।
সেবারই প্রথম ছবিতে দেখা প্লাজা দি সিবেলেসকে সামনাসামনি দেখি আমি। চত্বরটির চারদিকে ছড়িয়ে আছে আকাশছোঁয়া কিছু ভবন। ব্যাংকো দি এস্পানা এবং প্যালাসিয়স দি সিবেলেসের মতো ঐতিহাসিক ভবনগুলো চত্বরের শোভা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। তবে জায়গাটির মূল আকর্ষণ একেবারে চত্বরের মাঝ বরাবর স্থাপিত একটি ঝর্ণা এবং তার সাথে দেবী সিবেলের মূর্তি। সিবেলেস চত্বর থেকে মাদ্রিদের সিটি সেন্টার খুব বেশি দূরে নয়। চত্বর ছেড়ে একটু এগুলেই আপনি দেখতে পাবেন রেতিরো পার্ক, প্রাদো জাদুঘর। আরেকটু এগুলে আপনি পৌঁছে যাবেন পাসেও দে লা কাস্তেলেনায়, যেখানে বার্নাব্যু অবস্থিত। এককথায়, মাদ্রিদের সবচেয়ে বিশেষ জায়গাগুলোর একটি এই সিবেলেস চত্বর।
তবে স্পেনে ফুটবল ভক্তদের কাছে জায়গাটির মাহাত্ম্য একটু বেশিই, রিয়াল মাদ্রিদ বা দেশটির জাতীয় দল কোনও শিরোপা জিতলে যে এই চত্বরে এসেই সে জয় উদযাপন করে!
তাই মাদ্রিদে পা দিয়েই এই স্থানটিতে প্রথম গিয়েছিলাম আমি।ব্যাপারটা অনেকটা রিও ডি জেনেইরোতে গেলে প্রথম ক্রাইস্ট দ্যা রিডিমার দেখতে যাওয়ার মতো। সিবেলেস চত্বরে গিয়ে আমি রীতিমত আবেগে ভাসছিলাম। তখনই এক চিত্রগ্রাহক আমাকে ক্যামেরাবন্দী করে।
ছবিটি মাদ্রিদে আমার বাসায় আছে এখনও।বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদে প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকায় মাদ্রিদেই এখন আমার বসবাস। সেই ছবিটির দিকে চোখ পড়লেই আমার স্মৃতিতে মাদ্রিদের হয়ে খেলার অবিশ্বাস্য সব মুহূর্তগুলো যেন জ্যান্ত হয়ে ওঠে। এখন অন্য সবার মতো আমারও কাজে যাওয়া বন্ধ। গত এক মাসে বাসা থেকে মোটে দুবার বের হয়েছি, তাও সুপারমার্কেটে যাওয়ার জন্য। সারাদিন বাসায় থাকতে থাকতে বেশ হাঁপিয়ে উঠেছি, তবে কষ্ট হলেও বাসায় থাকাতেই এখন সবার মঙ্গল।
যেই দুইবার বাসা থেকে বেরিয়েছি, শহরটাকে আমার কাছে অচেনা মনে হয়েছে। যেকোনো সাধারণ দিনে মাদ্রিদের পথঘাট লোকজনের কোলাহলে সরগরম থাকে। পরিবার, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে মিলে সবাই রেস্তোরার বাইরে টেবিলে বসে চায়ে চুমুক দিত। মাদ্রিদের ব্যাপারটাই আলাদা, জীবনে আপনি যা কিছু চান তার সবই এখানে পাওয়া যায়। মাদ্রিদের সূর্য, খেলাধুলা, খাওয়া-দাওয়া, নৈশজীবন; যা চাবেন তাই পাবেন এখানে। মাদ্রিদের লোকেরা জানে জীবনকে কীভাবে উপভোগ করতে হয়।
কিন্তু এখন আর তেমন কিছুই নেই। মাদ্রিদের পথঘাট এখন জনশূন্য। আমি মাদ্রিদের এই রূপ কখনও দেখিনি।
ব্যক্তিগতভাবে এই ভাইরাসের ফলে আমার বা আমার পরিবারের কোনও ক্ষতি হয়নি, আমরা সবাই সুস্থ আছি। তবে যেসব পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এই ভাইরাসের কারণে, তাদের জন্য আমার প্রাণ কাঁদে। এমন কিছু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কথা জানি আমি। আপনারা সবাই হয়ত খবরে দেখেছেন, গত মাসে রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক সভাপতি লরেঞ্জো সানজের জীবন কেড়ে নিয়েছে এই ভাইরাস। রিয়াল মাদ্রিদে এসেছিলাম তাঁর হাত ধরেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। আমি শুনেছিলাম যে, তিনি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আমি তাঁর জন্য প্রার্থনা করেছিলাম। বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন লরেঞ্জো, তবে শেষ পর্যন্ত করোনাতেই প্রাণ হারালেন তিনি।
লরেঞ্জোর সঙ্গে কাটানো সময়ের কথা ভাবলে এখনও হাসি পায় আমার। তিনি ক্লাবের সভাপতি ছিলেন ঠিকই, তবে তারও আগে তিনি ছিলেন একজন পাঁড় সমর্থক। ক্লাবকে নিজের মাঝে ধারণ করতেন লরেঞ্জো। সবসময় খেলোয়াড়দের আগলে রাখতেন তিনি, ড্রেসিং রুমে আসতেন নিয়মিত। আমরা কোনও ম্যাচ ড্র করলে বা হারলে আমাদের শাসাতেন তিনি, আবার কোনও শিরোপা জিতলে প্রথম অভিনন্দন বার্তাটাও তাঁর কাছে থেকেই আসত। তাঁর মানবিকতার জন্য, তাঁর আশাবাদী মনোভাবের জন্য, মাদ্রিদিসমো গড়ে তুলতে তার নিরলস খেটে যাওয়ার জন্য আমরা তাকে পছন্দ করতাম। আমাদের সবার কাছে তার স্থান ছিল পিতার মতো।
তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতাম আমি, সবসময় আমাকে উপদেশ দিতেন। আমি চাইলেও তাকে লরেঞ্জো সাঞ্জ ডাকতে পারতাম না, আমার কাছে তিনি সবসময়ই ছিলেন প্রেসিডেন্ট, অথবা প্রেসি।
আমি বলতাম, ‘হাই প্রেসি, কেমন আছো?’
উত্তরে তিনি সুন্দর একটি হাসি দিয়ে আমাকে আলিঙ্গন করতেন।
আমি যখন মাদ্রিদে এসেছি, লরেঞ্জোর তখন বোধহয় মাদ্রিদের সভাপতি হিসেবে ছয় মাসের কিছু বেশি সময় হয়েছিল। মাদ্রিদে আসার পর সবকিছু যেন বিদ্যুৎবেগে ঘটে যাচ্ছিল, দেপোর্তিভো লা করুনার মাঠে গিয়ে অভিষেকে গোল করেছিলাম আমি। আর বার্নাব্যুতে প্রায় ৮০ হাজার দর্শকের সামনে খেলা প্রথম ম্যাচটির কথাও এখনও মনে আছে আমার। সেদিন আমি খুবই স্নায়ুচাপে ভুগছিলাম, বারবার মনে হচ্ছিল এখন যদি আমি কোনও ভুল করি তাহলে আমার কী হবে? সেই দিনটি ভয়ঙ্কর ছিল। তবে একইসঙ্গে সেটি আমার জীবনের অন্যতম সেরা দিনও ছিল।
ধীরে ধীরে মাদ্রিদের হয়ে খেলার চাপের সঙ্গে আমি মানিয়ে নিয়েছিলাম। তবে এরপরও বুকে ধুকপুকানি করা মুহূর্ত এসেছে। আমি মাদ্রিদে আসার বছর দুয়েকের মাথায় শক্তিশালী জুভেন্টাসের বিপক্ষে আমাদের চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলতে হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতার শিরোপা মাদ্রিদের চেয়ে বেশিবার কেউ জেতেনি, তবে সেই সময়ে প্রায় ৩২ বছর ধরে এই শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি মাদ্রিদের। টানা তিনবারের ফাইনালিস্ট জুভেন্টাসের বিপক্ষে সেদিন আমরা ফেবারিট ছিলাম না।
সেই ম্যাচের আগের রাতে আমরা কেউ ঘুমাতে পারিনি। সাধারণত রাত ১০ টার মাঝেই ঘুমিয়ে পড়তাম আমরা সবাই। তবে সেদিন ভোর চারটা পর্যন্ত হোটেলের লবিতে বসেছিলাম আমরা, টুকটাক গল্প করছিলাম। আমরা ভয় পাইনি, তবে জুভেন্টাসের শক্তিমত্তার কারণে কিছুটা স্নায়ুচাপে ভুগছিলাম। ম্যাচটি শুরু হওয়ার জন্য আমাদের আর তর সইছিল না। কারণ যত দেরিতে ম্যাচ শুরু হবে, স্নায়ুচাপের সময়ও তত প্রলম্বিত হবে।
শেষ পর্যন্ত আমরা সেই ম্যাচে দারুণ খেলে ১-০ গোলে জয় পেয়েছিলাম। জুভেন্টাস অনেক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। নিজেদের মনোবল আর সক্ষমতার বলেই শিরোপা জিতে নিয়েছিলাম। আমাদের শিরোপা ক্ষুধা তাদের চেয়ে বেশি ছিল।
তারপর ট্রফি নিয়ে আমরা সেই প্লাজা দি সিবেলেসে গিয়েছিলাম। সাদা জার্সি গায়ে জড়ানো হাজারো মাদ্রিদ সমর্থকের সঙ্গে সেদিন নেচে, গেয়ে আমাদের সাফল্য উদযাপন করেছিলাম। সেই রাত আমি কখনও ভুলব না।
যদি মাদ্রিদে আমার সব সাফল্যের মাঝে কোনও একটিকে বেছে নিতে বলে কেউ, আমি সেই চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়টিকেই বেছে নেব।
আপনি যত বেশি সময় মাদ্রিদে কাটাবেন, ততই অনুধাবন করতে পারবেন মাদ্রিদের লোকদের কাছে ক্লাবের মর্মটা আসলে কী! অবশ্য শুধু মাদ্রিদেই নয়, স্পেনের অন্যান্য প্রান্তে এবং বিশ্বজুড়েই মাদ্রিদ সমর্থকদের কাছে ক্লাবটি অমূল্য। আমরা যেখানেই খেলতে গিয়েছি, সেখানেই সমর্থকরা উপচে পড়েছে। এল ক্লাসিকো হোক অথবা সাধারণ কাপ ম্যাচ, বার্নাব্যুর গ্যালারি সবসময়ই কানায়-কানায় পূর্ণ থেকেছে। ক্লাবকে সমর্থকরা যে কারণে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে, ঠিক সেই কারণেই এই ক্লাবে এসেছিলাম। আর তা হচ্ছে, ক্লাবের আভিজাত্য, ফ্যানবেজ, চ্যাম্পিয়নস লিগে অভূতপূর্ব সাফল্য। আর আমার সামনে সুযোগ ছিল ক্লাবের সাফল্যের ভাণ্ডারকে আরও সমৃদ্ধ করার, আমি সেটাই করার চেষ্টা করেছি।
আমি আপনাদের বলতে চাই, এই শতাব্দীর শুরুর দিকে গ্যালাকটিকোর সময়টা শুধু সমর্থকদের জন্যই নয়, খেলোয়াড় হিসেবে আমরা যারা অংশ ছিলাম তাদের জন্যও স্মরণীয় হয়ে আছে। তখন মাদ্রিদের ড্রেসিং রুম ছিল তারকায় ঠাসা। ভাবুন তো একবার, ড্রেসিংরুমে আপনার পাশেই বসে আছে ব্যালন ডি’অর জয়ী, স্প্যানিশ প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার জয়ী, লা লিগায় সর্বোচ্চ গোলদাতা আর বিশ্বের সেরা গোলরক্ষক! সেই পরিবেশের অংশ হওয়াটাই একটা বিশেষ ব্যাপার ছিল। মাঝে মাঝে আমি সেখানে বসে ভাবতাম, কোথা থেকে এসেছি আমি আর আজ কোথায় বসে আছি। আমি গর্ব অনুভব করতাম। জীবন আপনাকে কোথায় নিয়ে যাবে তা আঁচ করা অসম্ভব।
মাদ্রিদের হয়ে আমি আরও দুবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছি, ২০০০ ও ২০০২ সালে। সেই দুইবারের সব ঘটনা এখন তেমন একটা মনে নেই। আসলে মাদ্রিদের মতো একটা ক্লাবে খেললে আপনাকে প্রতিটি মুহূর্তই সজাগ থাকতে হবে, কারণ সবকিছু এতো দ্রুত ঘটে। স্প্রিন্ট, হেডার, ট্যাকল, অনুশীলন সেশন, অ্যাওয়ে ট্রিপ, হোটেল, জয়, পরাজয়, সবকিছু যেন চোখের পলকে ঘটে যায়। তাই সবকিছুর হিসেব রাখা যায় না। যেদিন আমি মাদ্রিদের হয়ে খেলা ছেড়েছিলাম, কেবল সেদিনই মাদ্রিদে আমার অর্জনগুলো নিয়ে ভাবার একটু ফুরসত পেয়েছিলাম।
১৭ জুন, ২০০৭। মাদ্রিদের হয়ে আমার শেষ ম্যাচ সেদিন, মৌসুমেরও শেষ ম্যাচ ছিল। মায়োর্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ আমাদের এবং বার্সেলোনার পয়েন্ট ছিল সমান। বার্সা খেলেছিল জিমন্যাস্টিকের বিপক্ষে। যদি দুই দলই জয় পায়, তাহলে হেড-টু-হেডের হিসেবে আমরা শিরোপা জিতে নেব- সমীকরণটা এমনই ছিল। আমরা সেই ম্যাচে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে জয়ে নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলাম সেদিন। সেটি দারুণ এক জয় ছিল।
তবে সেদিনের যে জিনিসটা সবচেয়ে ভালোভাবে মনে আছে আমার, তা হচ্ছে সবাই যেভাবে আমাকে বিদায় জানিয়েছে। ডেভিড বেকহামও আমাকে বিদায় জানিয়েছিল। হোটেল থেকে যখন স্টেডিয়ামের দিকে যাচ্ছিলাম, সমর্থকরা রাস্তায় দাড়িয়ে আমাকে অভিবাদন জানিয়েছিল, আমার জন্মদিনের মতো অনুভূতি হচ্ছিল। সবাই শুভকামনা জানাচ্ছিল, জয় নিয়ে ফিরতে উৎসাহ যোগাচ্ছিল।
সেই মুহূর্তটাতেই বুঝেছিলাম আমি ক্লাবের জন্য কী করেছি, আর মানুষ আমাকে কতটা ভালোবাসে।
সেই দিনটি আমার জীবনের সবচেয়ে আবেগের দিন ছিল। এখানকার লোকেদের মনে কতটা ভালবাসা আছে, তারা কতটা প্রাণবন্তভাবে নিজেদের জীবন উপভোগ করে তা সেদিন অনুভব করেছিলাম।
আর সেজন্যই বোধহয় শহরের বর্তমান অবস্থায় আমি এতো কষ্ট পাচ্ছি।
তবে সবকিছুর পরও আমি মাদ্রিদ এবং অন্য সব জায়গার লোকদের আশাবাদী হতে বলব। আমি সারাজীবন মুখে হাসি রেখে সব বাধা-বিপত্তি তুচ্ছ করার মন্ত্র অবলম্বন করেছি। তাই সবাইকে অনুরোধ করব, মাথা উঁচু রেখে সামনে এগিয়ে যান। নিজেদের উপর বিশ্বাস রাখুন। স্থির থাকুন, শান্ত থাকুন। অন্যকে সাহায্য করার চেষ্টা করুন।
এই মহামারীর মাঝে কিছু ইতিবাচক দিকও খুঁজে পাওয়া গেছে। যেমন আমরা এখন বুঝতে পারছি আমরা সবাই এক, আমাদের দুর্বলতাগুলোও একইরকম। আমরা পরিবার, বন্ধু-বান্ধবদের গুরুত্ব নতুন করে অনুধাবন করছি। একটি ভিডিও কলে দুয়েকটি আশার কথা শুনে একজনের জীবন কতটা বদলে যেতে পারে তাও আমরা অনুভব করতে পারছি।
এখন আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। সবকিছু যেন দ্রুত স্বাভাবিক হয়, সেজন্য আমরা সবাই বাসায় অবস্থান করে আমাদের কাজটুকু করার চেষ্টা করছি। সবার মতো আমিও ফুটবল মিস করছি, আমিও সেদিনের অপেক্ষায় আছি যেদিন রিয়াল মাদ্রিদ আরেকটি শিরোপা হাতে আবারও সিবেলেসে উৎসব করবে।
তবে এখন আমি শুধুই আবার মানুষের কোলাহলে ভরা রাজপথ দেখতে চাই।
সেটাই হবে আমাদের এই লড়াইয়ের জয়োৎসব।