“সাকিব তো ডাকতেছে, 'রিয়াদ ভাই, আইসা পড়েন, আইসা পড়েন'!"
নিদাহাস ট্রফি। হয়তো বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুসারীদের কাছে এক আক্ষেপের নাম। তবে ফাইনালসহ ত্রিদেশীয় সে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট ছিল স্মরণীয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় স্কোর তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ, আবার ফাইনালে যাওয়ার পথে ঘটনাবহুল ম্যাচে তাদেরকে হারিয়েছিল তারা। যে ম্যাচে মাহমুদউল্লাহকে মাঠ ছেড়ে উঠে আসতে বলেছিলেন সাকিব।
টুর্নামেন্টের ৬ষ্ঠ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করা বাংলাদেশের শেষ ৫ বলে প্রয়োজন ছিল ১২ রান। তবে ২য় বলে আউট হয়ে গিয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান, এরপরই শুরু হয়েছিল ঘটনা। সে বল ছিল শর্ট, তবে বাংলাদেশের দাবি ছিল আম্পায়ার দিয়েছিলেন নো বল। মূলত বিপত্তি বেঁধেছিল সেটা নিয়েই।
নিজের ইনস্টাগ্রাম থেকে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে লাইভে এসে সে ম্যাচের দিকে ফিরে তাকিয়েছেন তামিম ইকবাল, “আমার খেলা টুর্নামেন্টগুলোর মাঝে নিদাহাস ট্রফি অনেক উপভোগ করেছিলাম।”
“আপনি ছয় মারার আগে কী হলো- আম্পায়ার নো ডেকেও ডাকলো না। গন্ডগোল হলো। আমরা তো রেগে ছিলাম। নো বল দিয়েও দেয়নি। ক্যাপ্টেনও (সাকিব আল হাসান) রাগ করেছে। আপনার মাথায় কী চলছিল?”, মাহমুদউল্লাহকে এমন প্রশ্ন করেছিলেন তামিম।
মাহমুদউল্লাহর মতে, তিনি ভড়কে গিয়েছিলেন, কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না, “সাকিব তো ডাকতেছে, রিয়াদ ভাই, আইসা পড়েন, আইসা পড়েন। আমি তো বুঝতেছি না, কী বলতেছে ও? আমি তো এখন বুঝতেসি না যে কী করব। গ্লাভস রেখে সামনে চলে আসছিলাম। এরপর যাই হোক, সব ঠিক হয়েছিল। আর জিতেছি আল্লাহর রহমতে। এরপর তো রাতটা আমাদের অসাধরণ কেটেছিল।”
বেশ একটা বিরতির পর শেষ ৪ বলে প্রয়োজন ছিল ১২ রান, মাহমুদউল্লাহ ঠিক পরের বলেই ওয়াইড ইয়র্কারে মেরেছিলেন চার। ৫ম বলে ফুললেংথের বলে ছয় মেরে জিতিয়েছিলেন ম্যাচ। তামিম জানতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহর পরিকল্পনা, “ওয়াইড ইয়র্কার করতেছিল, তাই না? কোনোভাবে আপনি অনুমান করতে পেরেছিলেন যে সে (পরের ডেলিভারিতে) উইকেটে আসবে?”
“যে বলটায় চার মারলাম ওয়াইড ইয়র্কারে, সেটা ছেড়ে দিলে টেস্টেও ওয়াইড হতো। ওটা তো চার হয়ে গেল। তখন মাথায় আসছে, যে ওয়াইড ইয়র্কার করবে না। স্টাম্পে আসবে।”
আরও পড়ুন- মুলতান টেস্ট, নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল : বাংলাদেশের আক্ষেপের ৫ ম্যাচ
এ ম্যাচের আগে মাহমুদউল্লাহর রুমে টিম-মিটিংটাও কাজে দিয়েছিল, “মনে আহচে, আমার রুমে সবাই মিলে কথা বলেছিলাম। সেটা কাজে দিয়েছিল। তার আগে আমরা হোম সিরিজে শ্রীলঙ্কার সাথে হারলাম। ত্রিদেশীয় সিরিজে হারলাম। সবার ভেতরে আগ্রহটা ছিল। সবাই ওই মিটিংয়ে কথা বলছে। ‘টিম প্ল্যানিং স্টার্টেড টু গ্রো’।”
তামিম অবশ্য সে টুর্নামেন্টের আগেই তখনকার শ্রীলঙ্কা হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে বলেছিলেন, তাদেরকে হারাবে বাংলাদেশ, “এর আগে শ্রীলঙ্কার সাথে খেলেছিলাম ত্রিদেশীয় সিরিজ দেশের মাটিতে। তো ফাইনালের পরদিন ওর সাথে ব্রেকফাস্ট টেবিলে দেখা হলো। ও তো একটা মুচকি হাসি দেয়। তো আমাকে দেখে একটা মুচকি হাসি দিল আরকি। তো আমি গিয়ে বলছি, ‘হাথু, এতো হাসিও না, আমরা তোমাদের দেশে এসে তোমাদের হারাব।”
শ্রীলঙ্কাকে দুই ম্যাচেই হারিয়ে ফাইনালে যাওয়া বাংলাদেশ শেষ বলে গিয়ে হেরেছিল ভারতের কাছে।