• ক্রিকেটারদের আলাপ
  • " />

     

    হাথুরুসিংহের সঙ্গে কাজ বদলে দিয়েছিল টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং

    হাথুরুসিংহের সঙ্গে কাজ বদলে দিয়েছিল টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং    

    ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে জাতীয় দলের ক্যাম্পে সাবেক হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে ব্যক্তিগত কাজ করার ফলে টি-টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ে আত্মবিশ্বাস বদলে গিয়েছিল মাহমুদউল্লাহর। এ ফরম্যাটের নিচের দিকে ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে পরিস্কার মানসিকতা জরুরী বলেও মনে করেন তিনি। 

    আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহর চেয়ে বাংলাদেশের হয়ে বেশি রান আছে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের। তবে তামিমের মতে, মাহমুদউল্লাহই ‘বাংলাদেশের সেরা টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান, বিশেষ করে যেখানে তিনি ব্যাটিং করেন’। বাংলাদেশের জয়ে মাহমুদউল্লাহর অবদান সমর্থন করে সংখ্যাও। জেতা ম্যাচগুলিতে কমপক্ষে ২০ ইনিংস ব্যাটিং করেছেন, এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বাংলাদেশের মাঝে সবচেয়ে বেশি ১৪৪ স্ট্রাইক রেট মাহমুদউল্লাহর, ক্যারিয়ার গড়ও ২৪ থেকে বেড়ে হয়ে যায় ৩৫। 

    ‘ফিনিশিং’-এর ভূমিকাটা তাই মাহমুদউল্লাহ পালন করেন ভালভাবেই। নিজের ইনস্টাগ্রাম লাইভে তার সঙ্গে কথা বলার সময় টি-টোয়েন্টিতে নিচের দিকে ব্যাটিংয়ের মন্ত্রটা জানতে চেয়েছিলেন তামিম। জবাবে মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, “অবস্থা বুঝে খেলতে হবে, এছাড়া উপায় নাই। যখন শুরুতে আটে ব্যাটিং করতাম, তখন তো আরও কঠিন ছিল। এখন পাঁচ-ছয়ে ব্যাটিং করি, কিছুটা হলেও সময় পাই মানিয়ে নেওয়ার। শুরু থেকেই চেষ্টা থাকত, পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার। মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটা ডেভলপ করতে হবে। হয়তো এখনও ধারাবাহিকভাবে পারি না।” 

     


    নিউজিল্যান্ড সফরে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে কথা বলছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে


    “হাথুর (হাথুরুসিংহে) সাথে ক্যাম্প করছিলাম, ২০১৬ সালে খুলনায়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে। তখন ব্যক্তিগতভাবে কাজ করা হয়। মেন্টালি, স্কিল হিটিংয়ে- সেটা কাজে দিয়েছে। আগে একটু সময় নিতাম, এখন প্রথম বল থেকে আত্মবিশ্বাসী থাকি যে মারতে পারবো। পরিস্কার মানসিকতা থাকা জরুরী, যারা এখানে ব্যাটিং করে। খুবই স্বার্থহীনভাবে খেলতে হবে। অনেক সময় নিজের উইকেটও ‘স্যাক্রিফাইস’ করতে হবে দলের জন্য। ‘ফ্রিডম’ নিয়ে না খেললে সুযোগ কমে যাবে (ভাল খেলার)।” 

    এমন পজিশনে মাহমুদউল্লাহ আশা দেখছেন সাইফউদ্দিনদের নিয়ে। তার মতে, ফিনিশিংয়ের সামর্থ্য আছে কয়েকজন তরুণের, “সাব্বিরের ছয়-সাতে ভাল পটেনশিয়াল ছিল। সাইফউদ্দিনের পটেনশিয়াল ভাল, সে বড় শট খেলতে পারে। আফিফ ভাল অপশন। মোসাদ্দেক আছে। ফিনিশিংয়ের সামর্থ্য আছে এদের।”

    মাহমুদউল্লাহর আইপিএলে সুযোগ পাওয়া উচিৎ বলেও মনে করেন তামিম, “আমার কাছে মনে হয়, আপনার আইপিএলে সুযোগ পাওয়া উচিৎ। বিশেষ করে শেষ ৩-৪ বছরে যেভাবে ব্যাটিং করছেন।” 

    মাহমুদউল্লাহ অবশ্য সুযোগ না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন না এখনই, “এ টুর্নামেন্টে সবাই লক্ষ্য রাখে। সবাই খেলতে চায়। এতো চাকচিক্য, সবাই খেলতে চায়। খেলতে পারলে অবশ্যই ভাল লাগতো। সবাই চায় পারফর্ম করতে। সামনে সুযোগ হলে ভাল লাগবে। ওটা নিয়ে মন খারাপ করার তো কিছু নাই।”

    মাহমুদউল্লাহকে এদেশে ‘ঠিক মূল্যায়ন’ করা হয় না বলেও মনে হয় তামিমের, “আমাদের দেশে আমরা শুধু ৭০-৮০-১০০, এমন কিছুর মূল্য দিই শুধু। আপনি এদিক দিয়ে দুর্ভাগ্যজনক হন। কিন্তু আমরা বুঝি, আপনার ২৫-৩০ রানের মূল্য কতো। যেমন বিশ্বকাপটা আপনার ভাল গেছে। আমার কাছে খুব অবাক লাগে, যখন আপনার ব্যাপারে বলে, আপনার বিশ্বকাপ ভাল যায়নি। তবে আমার কাছে মনে হয়, আপনার বিশ্বকাপ ভাল গেছে। যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইনিংসটা। ওটা নির্ধারণ করে দিয়েছে, আমরা কতো করব। আপনার যে ৩০-৪০ রানের ইনিংসের আপনার মূল্য দিই। আপনাকে নিয়ে আমরা গর্বিত।”