ম্যাচে নিজের সামর্থ্য নিয়ে কখনোই সংশয় থাকে না কোহলির
নিজেকে নিয়ে সংশয়, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি- ক্রিকেট ম্যাচে এসব যেন ভাইরাসের মতো। মানসিক কাঠিন্যের কঠিন পরীক্ষা যে খেলা নেয়, সেখানে এসবের উপস্থিতি নিশ্চয়ই সুখকর নয়, বয়ে আনে না ভাল কিছুও। যারা বড় কিছু করেন ক্রিকেট মাঠে, তারা এসব থেকে বাঁচিয়ে চলার উপায় বের করেন। বিরাট কোহলি যেমন ম্যাচ পরিস্থিতিতে নিজের সামর্থ্য নিয়ে সংশয়ে থাকেন না কখনোই।
“সবারই নিজেকে নিয়ে সংশয় হয়। সফরে গিয়ে এমন হয়, যে হচ্ছে না। ওই ছন্দটা আসছে না। সংশয় ঘিরে ধরছে। হয়তো আপনি যথেষ্ট ভাল না এক্ষেত্রে। মনের মধ্যে এই ব্যাপারটা চলতেই থাকে”, কোহলি এক্ষেত্রে ঠিক ব্যতিক্রম নন। তবে, “এখানে চালিকাশক্তি হচ্ছে চেষ্টা করে যাওয়া। ওই জোনের ভেতর থাকা, যেখানে মনে হবে যে না, এসব আদতে সত্যি না। এসব শুধু এমন চিন্তা যেগুলো আমাকে আটকে রাখতে চাচ্ছে। যদি আমি বিশ্বাস করি যে আমি পারব, তাহলে পারব।”
কোহলির মূল কথা, “ম্যাচে আমি নিজের সামর্থ্য নিয়ে সংশয় করি না।”
তামিম ইকবালের সঙ্গে ফেসবুক লাইভে এসে কোহলি ব্যাখ্যা করেছেন নিজের এই দিকটা, “ম্যাচের ভাল দিক হলো এসব ভাবার মতো সময় থাকে না। পরিস্থিতি দেখতে হবে, সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে, ব্যাটিং করতে হবে। দলের কী অবস্থা, দলের জন্য আমাকে কী করতে হবে। নিজের এনার্জিই নিজেকে ব্যস্ত রাখে তখন। এসব নেতিবাচক ব্যাপার তখনোই আসে, যখন আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুডে থাকি না।”
“আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা হলো, নিজেকে এটা বলা যে, ‘আই অ্যাম গুড এনাফ’। নেটে গিয়ে আরও কঠোর পরিশ্রম করব, যতক্ষণ না ওই ছন্দটা খুঁজে পাচ্ছি। তখন দেখবেন কী মনে হয় একদিন পরই- ‘আমি কী ভাবছিলাম! এতো নেতিবাচক কেন হচ্ছিলাম!’ আমাদের কাজই হচ্ছে ইতিবাচক থাকা।”
অবশ্য ক্যারিয়ারের শুরুতে নিজেকে নিয়ে সংশয় ছিল কোহলির, “আমার মনে হয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এলে সবারই ভেতর সংশয় থাকে, কিভাবে এগুবে, কীভাবে ক্যারিয়ার গড়বে। এক সিরিজের পরই আমি দল থেকে বাদ পড়েছিলাম। এরপর ২০০৯ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আমার সুযোগ হয়েছিল। ২-৩ ম্যাচ ছিল, যেখানে ভাল করেছিলাম, একটিতে সেঞ্চুরি করেছিলাম-- এসব আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল।
“তবে প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি যখন করলাম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, সেখান থেকেই অনুভব করা শুরু করলাম-- আমি লম্বা সময়ের জন্য ভারতের জন্য খেলতে পারব। তিন নম্বরে চাপের অবস্থায় যখন পারফর্ম করবেন, সেসব আত্মবিশ্বাস জোগাবে। ম্যাচ পরিস্থিতিতে পারফর্ম করলে মানসিকতা বদলে যায়। তবে সেখানে পারফর্ম করার জন্য একটা মানসিকতা প্রয়োজন।”
তরুণদের জন্যও কোহলির পরামর্শ সোজা-সাপ্টা, বিশ্বাস রাখতে হবে নিজের ওপর, “আমি তরুণদের এটাই বলি, তেমন মানসিক জোর থাকলে তুমিও ম্যাচ জেতাতে পারো। এটা ব্যাপার না যে সামনের জন ১০০-১৫০ ম্যাচ খেলেছে, তুমি দ্বিতীয় বা তৃতীয় ম্যাচ খেলছো। এতে কোনও পার্থক্য গড়ে ওঠে না। আমার চেয়ে অভিজ্ঞ কেউ আউট হলে আমি এটা ভাবতাম না ‘আমি কীভাবে পারব?’। আমি বরং এটিকে সুযোগ হিসেবে দেখতাম। সে পারেনি, তবে আমার আত্মবিশ্বাস আছে যে আমি পারব।”