• সাকিবের নিষেধাজ্ঞা
  • " />

     

    নিষেধাজ্ঞার সেই 'ভুল' থেকে অনেক বড় 'শিক্ষা' পেয়েছেন সাকিব

    নিষেধাজ্ঞার সেই 'ভুল' থেকে অনেক বড় 'শিক্ষা' পেয়েছেন সাকিব    

    করোনা-ভাইরাসের থাবার পর বিশ্বের আরও অনেক কিছুর মতো থমকে আছে ক্রিকেট। বাংলাদেশও কবে মাঠে নামবে, সেই সম্ভাবনাও নেই। সাকিব আল হাসানের জন্য একদিক দিয়ে সেটা শাপেবর হয়েছে, নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়টা কেটে যাচ্ছে দ্রুত। তবে নিষেধাজ্ঞার এই সময়টা যে তার ভুলেই, সেটা স্বীকার করেছেন অকপটে। এ নিয়ে এতোদিন তেমন কিছু না বললেও ক্রিকবাজে হর্শ ভোগলের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন অকপট কিছু কথা। ওই সময় জুয়াড়ির প্রস্তাবটা বেশি হালকাভাবে নিয়ে ফেলেছিলেন, সেজন্য এখন অনুশোচনা করছেন সাকিব।

    গত বছর অক্টোবরে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো খবরটা আসে। ভারতীয় জুয়াড়ি দীপক আগরওয়ালের সঙ্গে কথোপকথনটা চেপে যাওয়ার জন্য দুই বছরের (এক বছরের স্থগিত) নিষেধাজ্ঞা হয় সাকিবের। সাকিবের আথে হোয়াটসঅ্যাপে কিছু তথ্য জানতে চেয়েছিলেন দীপক, দেখা করার কথাও হয়েছিল। পরে অবশ্য সেটা হয়নি, সাকিবও সেই জুয়াড়িকে কোনো তথ্য দেননি। তবে ব্যাপারটা কাউকে বলেননি, পরে আইসিসির দুর্নীতি দমন সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে আসে তা। তবে কেন তিনি সেই প্রস্তাব পাওয়ার খবর কাউকে কিছু বলেননি, সেটা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।

    এবার সাকিব বলেছেন, ব্যাপারটা গুরুত্ব বুঝতে ভুল করেছিলেন তিনি, ‘আমি পুরো ব্যাপারটা হালকাভাবে নিয়েছিলাম। আমি যখন দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটের সঙ্গে কথা বললাম, ওরা আগে থেকেই সব জানত। আমি এরপর ওদেরকে সাক্ষ্যপ্রমাণ দিলাম। এগুলো ওদের জানা ছিল। সত্যি বলতে, এই কাজটা করার জন্যই আমার সাজা কম হয়েছে। নয়তো আমি পাঁচ বা দশ বছরের জন্যও নিষিদ্ধ হতে পারতাম।’

    এতোদিনের অভিজ্ঞতার পরও এরকম কিছু করাটা নিজের একটা অমার্জনীয় ভুল হিসেবেই দেখছেন সাকিব, ‘আমার মনে হয় আমি খুব বাজে একটা ভুল করেছি। আমার যে অভিজ্ঞতা, যতগুলো ম্যাচ আমি খেলেছি, আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী সংক্রান্ত আচরণের যতগুলো ক্লাস আমি করেছি, এরপর ওই ঘটনা আমার জানানো উচিত ছিল। আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে অনুতপ্ত। আমার মনে হয় সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া ফোন বা মেসেজ কারও হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। এগুলো ভুলে না গিয়ে নিজের ভালোর জন্যই অবশ্য আকসুকে জানানো উচিত। পুরো ঘটনার পর এই শিক্ষাটাই আমি পেয়েছি। আমি বলব এটা আমার জন্য অনেক বড় একটা শিক্ষা।’

    আইসিসির আতশ কাচের নিচে থাকার পর সাকিবকে দুই বার জেরা করা হয়েছিল। প্রথমবার জানুয়ারি ২০১৯, এরপর আগস্ট ২০১৯। এরপরেই সাকিবকে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত আসে। এখন সাকিব বুঝতে পারছেন, কোনো একটা সিদ্ধান্তের ব্যাপারে একগুয়েমিই বিপদ ডেকে আনতে পারে, ‘জীবনে আপনি অনেক কিছুই ভালো করবেন, কিন্তু কখনো আপনি কিছু ব্যাপারে একগুঁয়ে হয়ে যেতে পারেন। আপনি হয়তো সেটা বুঝতেও পারবেন না যে আপনার খারাপই হচ্ছে। আমার মাথায় কখনোই আসেনি যে আমি খারাপ কিছু করছি। আমার মনে হয়েছে, ‘কী আর হবে’, নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি এরপর। এটাই আমার ভুল ছিল।’

    নিষেধাজ্ঞা কাটিতে মাঠের সাকিব কী করতে পারবেন তা বলে দেবে সময়। তবে ক্রিকেট নিয়ে তার দর্শন কিছুটা বদলে দিয়েছে এই ধাক্কাটা, ‘আগে আমি আমার দেশের জন্য, নিজের জন্য, পরিবারের জন্য খেলতাম। এখন সময় হয়েছে যারা আমাকে ১২-১৫ বছর ধরে ভালোবেসেছে, সমর্থন দিয়েছে তাদের জন্য কিছু করার। আমি যা করেছি এতে আমি অনেককেই হতাশ করেছি, সেটা আমি কিছুটা হলেও পুষিয়ে দিতে চাই।’